রাসেদ বিল্লাহ চিশতিঃ
নোয়াখালীর সদর উপজেলার ২নং দাদপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বারাহীপুর পালবাড়িতে গৃহবধূ শারমিন হত্যার ঘটনায় আসামিদেরকে গ্রেফতারে প্রশাসনের নেই তৎপরতা।
গৃহবধূ শারমিনকে নৃশংস হত্যার ঘটনায় খুনীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সুধারামের ২নং দাদপুর ইউনিয়নের খলিফারহাট অঞ্চলে বারাহীপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন এলাকাবাসী।
গত ২১ সেপ্টেম্বর (বুধবার) ২নং দাদপুর ইউনিয়নের বারাহীপুর পালবাড়িতে গৃহবধূ শারমিনকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনা ঘটেছে। নিহত শারমিনের গলায় ও হাত পায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ঘটনার দিন সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত নিহত শারমিনের সাথে তার শাশুড়ী ঝগড়া করে।
সকাল ৯টার পর থেকে গৃহবধূ শারমিনের কোন সাড়া শব্দ পা-ওয়া যাচ্ছে না। বাড়ির লোকজন তার বাবাকে খবর দেয়। নিহতের বাবা সিএনজি চালক হারুন কর্মস্থল থেকে বাড়িতে এসে তার মেয়ে শারমিনের কথা জিজ্ঞেস করলে শারমিনের শাশুড়ী ফারুল জানায়, সে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছে বলে জানায়। নিজ মেয়ের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে দিনভর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে নিজ মেয়েকে না পেয়ে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মেয়ের শাশুড়ীর ঘরের আশেপাশে টর্চ লাইট নিয়ে খুজতে গিয়ে লাকড়ির ঘরের ভিতরে নিজ মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
গৃহবধূ শারমিনের বাবার চিৎকারে বাড়ি ও আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে দেখতে পায় নিহত শারমিনের গলায় লোহার রড ঢুকিয়ে দিয়ে মারাত্মক জখমের রক্তাক্ত চিহ্ন রয়েছে ও হাত পায়ে আঘাতের দাগ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সুধারাম থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত শারমিনের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
(২২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার) নিহত শারমিনের লাশের ফোর্সমোটেম শেষে তার বাবা সিএনজি চালক হারুনের নিকট স্থানান্তর করে। লাশ নিয়ে এলাকায় আসলে এলাকাবাসী হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান শিপন, ওয়ার্ড মেম্বার হারুনর রশীদ সোহাগ ও পুলিশের উপস্থিতিতে নৃশংস হত্যার সুষ্ঠু প্রতিবেদন ও হত্যাকারীদের বিচারের আশ্বাস দিয়ে লাশ দাপনের অনুরোধ করা হয়।
সিএনজি চালক হারুনের বড় মেয়ে শারমিন আক্তার (২০)কে একই বাড়ির ফারুলের বড় ছেলে পারভেজ (২৫) এর সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ দেওয়া হয়। তাদের সংসারে লিমা নামের ৫ বছরের একটা কন্যা সন্তান রয়েছে। সে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গেছে। তাদের স্বামী স্ত্রী ও শাশুড়ীর মধ্যে সবসময় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো।
নিহত শারমিন আক্তার হত্যার ঘটনায় খুনীদের গ্রেফতার ও ফাঁশির দাবীতে (২৪ সেপ্টেম্বর) শনিবার সদর উপজেলার খলিফার হাটে বিক্ষোভ প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এসময় বিক্ষুব্দ এলাকাবাসী ৩/৪ ঘন্টা খলিফার হাট প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখে।
শারমিন আক্তার হত্যার ঘটনায় নিহতের শাশুড়ী পারুল বেগম (৩১) স্বামী পারভেজ (২৬) আকবর (২৭) ও ননদ ইতি বেগম (১৯)কে আসামি করে নোয়াখালী বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নং আমলী আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করা হয়েছে। পিটিশন মামলা নং ৯৭৫/২২।