সংসদ ভবন ও বায়তুল মোকাররমে শুটিং করতে চান খ্যাতিমান নির্মাতা ফারুকী

Avatar
Jubayer Hosain Hemel
আপডেটঃ : শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে শুটিং করতে চান। কেবল তিনি নন, তার মতে, এমন আইকনিক স্থানগুলো যেকোনো শুটিংয়ের জন্য উন্মুক্ত করা উচিৎ। এতে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য আরও সুন্দরভাবে ফুটে উঠবে।

ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই দাবি তুলেছেন ফারুকী লিখেছেন- অস্ট্রেলিয়া বললে আমাদের চোখে কোন ইমেজ ভাসে? সিডনি অপেরা হাউজ আর হারবার ব্রিজ। কখনো নরমাল টাইমের ছবি, কখনো বা ভাসে থার্টি ফার্স্ট সেলেব্রেশনের আলোকসজ্জাসহ ছবি। সাথে সাথে আমাদের মনের মধ্যে একটা আর্কিটেকচারালি রিচ ফুর্তিবাজ দেশের পারসেপশন তৈয়ার হয়। আদতে এই জায়গাটা সিডনির খুব ছোট একটা অংশই। বৃহৎ সিডনি মূলত শান্ত শীতল এক কান্ট্রিসাইড। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ভাবলে আপনার মাথায় অলস-শান্ত-শীতল কোনো জায়গা মনে না হয়ে আর্কিটেকচারালি রিচ ফুর্তির জায়গা যে মনে হয়, এটা ইমেজের ম্যাজিক।

সারা দুনিয়ার পত্রিকায় এবং আপনার নিউজফিডে এতো এতো বার অপেরা হাউস আর হারবার ব্রিজের ছবি ছাপা হয়েছে এবং হচ্ছে যে আপনার মাথায় এটা গেঁথে যাচ্ছে। এখন একবার ভাবেন, অস্ট্রেলিয়া সরকার যদি আইন করে এই সব জায়গায় ছবি তোলা যাবে না বা শ্যুটিং করা যাবে না, তাহলে কিন্তু আর এই ইমেজটা আপনার মাথায় গাঁথতো না।

আমাদের একটা সংসদ ভবন আছে। যেটা সারা পৃথিবীতে একটা আইকনিক স্ট্রাকচার হিসাবে আমরা হাজির করতে পারতাম। কিন্তু আপনি সেখানে শ্যুট করতে পারবেন না কারন সেটা কেপিআই জোন। বিশেষ অনুমতি নিয়ে শ্যুট করা সম্ভব যেটা অনেকের পক্ষেই পাওয়া কঠিন। তাই বলি, আপনি আপনার দেশের সেরা জায়গাগুলোতে যদি শ্যুট না করতে দেন, তাহলে তো আপনার আফসোস করা উচিত না যে “তোমরা বাংলাদেশকে প্রপারলি দেখাও না”।

আরেকটা কথা মাঝে মধ্যে শুনি। হিন্দু বা খ্রীষ্ট ধর্মের অনুষ্ঠানগুলা বাইরে ফিল্মমেকাররা এতো সুন্দর করে তুলে ধরে, আমাদের ফিল্মমেকাররা মুসলমানদের রিচুয়ালগুলাকে সেভাবে তুলে ধরে না। কথা সঠিক। কিন্তু যারা এই কথাগুলা বলে তাদেরকে আমি জিজ্ঞেস করি “আমার একটা দৃশ্যের জন্য বায়তুল মোকারম মসজিদের ভেতরে শ্যুট করা দরকার যেখানে দেখা যাবে হাজার হাজার লোক একসাথে জুমা আদায় করছে। একটু জোগাড় করে দিতে পারবেন?” সাথে সাথে দেখি উনারা আমতা আমতা করতে থাকেন। আপনি মসজিদে শ্যুট করতে দিবেন না, কিন্তু চাইবেন আপনার ধর্মের সুন্দর রিচুয়ালগুলা মানুষ জানুক, সেটা কিভাবে হবে?

আপনার প্রার্থনার সুন্দর এবং পবিত্র জায়গার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে সেটার সৌন্দর্য কমে না, পবিত্রতাও কমে না। বরং অনেকের কাছে সে সৌন্দর্য পৌঁছানোর একটা রাস্তা হয়। সংসদ ভবন বা এইরকম বিশেষ স্থাপনার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে এর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় না। আজকাল গুগল ম্যাপেই সব টার্গেট দেখা যায়। শ্যুটিংয়ের ফুটেজ থেকে ছবি নিয়ে নিরাপত্তার প্রতি হুমকি তৈরি করতে হয় না।

যে কথা বলতে এতো কথার অবতারনা, দয়া করে শুটিংয়ের জন্য সব কিছু উন্মুক্ত করে দেন। একটা ফিল্ম কমিশন গঠন করেন যেখানে লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক থাকবে। যার যেখানে শ্যুট করা প্রয়োজন সেটা উল্লেখ করে ঐ কমিশনে আবেদন করবে। সাথে নির্ধারিত ফি-ও জমা দিবে। এবং তিন কার্য দিবসের মধ্যে তাদের অনুমতি দিয়ে দেয়া হবে। সাথে ধরিয়ে দিতে পারেন লোকেশন স্পেপিসিক নিয়ম কানুন। ব্যস, সব কিছু সুন্দর একটা সিস্টেমে চলে আসলো। সারা পৃথিবীতেই এই ফিল্ম কমিশন এবং লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক আছে। দয়া করে আমাদের এখানেও এটা চালু করেন।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০