আন্তর্জাতিক | তারিখঃ মে ২৬, ২০২০ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 266 বার

এনকে বার্তা ডেস্ক::
ভারতের পরপর কয়েকটি সরকার ২৫ বছরে পাঁচ হাজার কোটি রুপি ব্যয় করে যে আবর্জনা অপসারণ করতে পারেনি, করোনাভাইরাসের কারণে টানা দুই মাসের লকডাউনে তা সাফ করে বর্জ্যমুক্ত হয়েছে যমুনা নদী।
লকডাউন চলাকালে শিল্প কারখানাগুলো বন্ধ ও বাণিজ্যিক তৎপরতা স্তিমিত হওয়ার সুযোগে নদীটি নিজেকে পরিষ্কার করে নিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
নদীটি স্বরূপে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে বহু স্থানীয় ও পরিযায়ী পাখি সেখানে ভিড় করেছে। ধূসর বক, কাস্তেচরা, সারসের মতো পরিযায়ী পাখির পাশাপাশি ভারতের স্থানীয় পাখিগুলোকেও নদীর টলটলে স্বচ্ছ পানিতে মাছ ধরতে ও ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে।
গত ৩০ বছর ধরে যমুনা নদী নিয়ে গবেষণাকারী ভারতের বন্যপ্রাণী ইনিস্টিটিউটের সংরক্ষণ কর্মকর্তা ড. রাজীব চৌহান বলেন, “২০০০ সাল থেকে যমুনা অ্যাকশন প্লানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছি আমি, নদীটিকে কখনো এতোটা পরিষ্কার দেখিনি।
“দূষণ আরও হ্রাস পেয়েছে আর ইটাওয়ার কাছে নদীটি আরও পরিষ্কার হয়েছে; এখানে চম্বল নদী থেকে আসা পানি দূষণের মাত্রা আরও কমিয়ে দিয়েছে। লকডাউন সবগুলো নদীর ওপর যে প্রভাব ফেলেছে তাতে বিস্মিত আমি।”
ভারতের সাতটি রাজ্যের মধ্য দিয়ে যাওয়া ১৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা নদীতে শিল্প কারখানাগুলো তাদের তরল বর্জ্য নিষ্কাশন করে, যার অধিকাংশই অপরিশোধিত।
এনডিটিভি জানিয়েছে, শুধু হরিয়ানার পানিপথ থেকে দিল্লি পর্যন্ত তিন শতাধিক শিল্প এলাকার বর্জ্য নদীটিতে ফেলা হয়, এতে যমুনা ভারতের সবচেয়ে দূষিত নদী হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিল্লি, আগ্রা, মথুরা- এই তিনটি শহর নদীটির ৮০ শতাংশ দূষণের জন্য দায়ী
দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি দেখেছে, লকডাউনের আগের সময়ের তুলনায় দিল্লির কাছে নদীটি এখন প্রায় ৩৩ শতাংশ পরিষ্কার হয়েছে, আর মথুরার কাছে পানি আরও স্বচ্ছ হয়েছে।
দিল্লির জলাশয়, বিশেষ করে যমুনা নদী পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে কর্মরত পরিবেশ সংরক্ষণবিদ দিওয়ান সিং বলেন, “নিজস্ব জৈবিক ক্ষমতা ব্যবহার করে নদীটি নিজেকে পরিষ্কার করেছে। এখন ফের যেন শিল্প বর্জ্য নদীটিতে ফেলা না হয় রাজ্য সরকারগুলোর তা নিশ্চিত করা দরকার।”
২৫ মার্চ ভারতজুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ার কিছু দিন পর থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে পরিষ্কার নদী, নীলাকাশ ও বরফে ঢাকা হিমালয়ের শৃঙ্গ দৃশ্যমান হতে থাকে। এসব দৃশ্যের ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে। এতে পরিবেশ-প্রকৃতির ওপর মানুষের তৎপরতার প্রভাব দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Leave a Reply