নিজস্ব প্রতিনিধি:-
ফরিদপুরের এক শিক্ষিতা তরুণীকে বিয়ে করে ইতালি নিয়ে যাবে বলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেছেন এক অশিক্ষিত যুবক, বিয়ের পরে ইতালি নেওয়ার কথা বলায় বৌকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন প্রবাসি স্বামী ও তার বন্ধু সহ স্বজনরা।
গত (১০ এপ্রিল) লিখিত ভাবে মধুখালি থানায় অভিযোগ করেন, গাজনা ইউনিয়নের হারুন বিশ্বাসের মেয়ে রিমা খাতুন (৩২)।
রিমা খাতুন ও অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, গত বছর ২০২২ সালে মোবাইলের মাধ্যমে ভাঙ্গা থানার দেওড়া গ্রামের আবদুর রাজ্জাক মাতুব্বরের ছেলে সুরুজ মাতুব্বর (৩৩) এর সাথে রিমার পরিচয় হয়। তখন থেকে তাদের মাঝে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠে, এবং বিয়ের পরে রিমাকে ইতালি নিয়ে যাবে বলে ও তাকে সেখানে ভালো একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিবে এমন একটি প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে গত ৩রা জানুয়ারি ২০২৩ সালে পারিবারিক ভাবে ১০ লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিবাহে দুইজন আবদ্ধ হন।
রিমা আরো বলেন, সুরুজ ইতালি থাকা অবস্থায় আমার এক দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের মাধ্যমে আমার খোঁজ পায়, এবং তার কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করে। দেশে আসার আগে তার সাথে আমার কয়েকদিন কথা হয়। সে আমাকে প্রস্তাব দেয় বিয়ের পর ইতালি নিয়ে যাবে ওখানে গিয়ে আমাকে চাকরি ব্যবস্থা করে দিবে। বিয়ের পরে আমাকে আমার বাবার বাড়িতে অথবা ঢাকায় রাখবে, সে আমার কাগজপত্র রেডি করে নিয়ে যাবে এবং খুব তাড়াতাড়ি প্রসেসিং শেষ করে আমাকে নিয়ে যাবে। আর যতদিন আমি দেশে থাকবো ততদিন আমার ভরণপোষণ দিবে। আমি একাউন্টিং এ এমবিএ করেছি সরকারি বাংলা কলেজ থেকে। আমি যেহেতু শিক্ষিত তাই ভেবেছিলাম ওখানে গিয়ে যদি একটা চাকরি করতে পারি তাহলে আমার পরিবারের এবং আমার সংসারের হাল ধরতে পারবো। সে আমাকে ইতালি থাকা অবস্থায় বিভিন্ন ভাবে লোভ লালসা দেখিয়েছে। মূলত সে সব মিথ্যা বলেছে। আমাকে প্রলোভন দেখিয়েছে বিয়ের তিন মাসের মধ্যে ইতালি নিয়ে যাবে। আরো বলেছে সে অনার্স কমপ্লিট করেছে, কিন্তু সম্পূর্ণ ভুয়া, একদম গণ্ডমূর্খ একজন লোক, এবং ভাঙ্গা হাইওয়ের পাশে তার পাঁচ তলা বাড়ি আছে। এলাকাতে তারা অনেক প্রভাবশালী, এমন ভাবে গুছিয়ে মিথ্যা কথা গুলো বলেছে তার এই কথা গুলো বিশ্বাস করি আমি এবং আমার পরিবার। বিয়ের পর থেকে তার ভিন্ন রূপ দেখতে হয় আমাকে। বিয়ের দিন কাবিনের টাকা থেকে সে দুই লাখ টাকা উসুল লিখে এবং বলে দুই লাখ টাকার গহনা দিবে কিন্তু গহনা যেটা দিয়েছিল সেটা ছিল ধার করা। বিয়ের দুই দিন পর যখন আমি আমার বাবার বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আবার ওই বাড়িতে যাই তখন সে আর তার দুই বোন বিউটি ও কাকলি তার মা মন্জু বেগম, এবং ছোট ভাইয়ের বউ সোনিয়া আমার কাছে গহনা চায় আমি গহনা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে মারধর করে আমার কাছ থেকে গহনা কেড়ে নিয়ে যায়। আমাকে চুল ধরে পিঠে এবং ঘাড়ে আঘাত করে যেটার জন্য আমি এখনো চরম ব্যথা এবং যন্ত্রণায় ভুগতেছি। তারা বলে আমার বাবা গহনা দেয়নি, তাদের ঘর সাজাতে ফার্নিচার দেয়নি। ওগুলো আমার বাবার কাছ থেকে যৌতুক হিসেবে নিয়ে যেতে হবে। আমাকে আঘাতের পর তারা বাড়িতে জিম্মি করে রাখে, ডাক্তারের কাছেও নিয়ে যায়নি। আমার অবস্থা প্রচণ্ড খারাপ হতে থাকে তখন সে এবং তার ভাবী বোন মিলে আমাকে তাদের বাজারের একজন গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। সে ইতালি চলে যাওয়ার দুই দিন আগেও আমাকে প্রচন্ড মারধর করে আমার মাথাটা দেওয়ালের সাথে অনেক জোরে জোরে আঘাত করে। আমি বর্তমানে আমার বাবার বাড়িতে আছি, তারা আমার বাবা মা বোন ভগ্নিপতি সবাইকে ফোন দিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। আমাকে নাকি বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাবে। তার নাকি অনেক ক্ষমতা, আইন মিডিয়া নাকি তার কিছুই করতে পারবে না। সে নাকি তার এলাকার এমপিকে মেরেছে, নেতাকে মেরেছে, তার থানার ওসিকে ছাঁদ থেকে ফেলে দিতে চেয়েছিলো এসব বলে আমাকে ভয় ভীতি দেখিয়ে চুপ করে থাকতে বলে, এখন আমাকেও হত্যা করার হুমকি দিয়ে আসছে। গত ৬ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখে তার ইতালি প্রবাসি বন্ধু পলাশ সরদার (৪৫) কে দিয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং আমার বাবা-মা কে হুকমি ধামকি দিয়েছে। পলাশ বলে তুই একটা মেয়ে মানুষ, তোর কেউ নেই যে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। তাদেরকে নাকি আইন এবং মিডিয়া কিছুই করতে পারবে না। তাদের হাত অনেক লম্বা, তারা টাকা দিয়ে সব থামিয়ে দিবে। ফোনে হুমকি ধামকির কারণে আমার প্রাণের চিন্তা করে গত ১০ এপ্রিল মধুখালি থানায় একটা সাধারণ ডায়েরি জিডি করি যার নাম্বার-৪২৫
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে সুরুজ মাতুব্বর বলেন, অভিযোগ গুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট, তার কাছ থেকে দেনমোহরের টাকা গুলো আদায় করে সংসার না করাটা তার মূল উদ্দেশ্য বলে মন্তব্য করেন সুরুজ।
মধুখালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি, যেখানে রিমা বলেছে তাকে মোবাইলের মাধ্যমে তার স্বামী ও পলাশ নামে একজন বিভিন্ন প্রকারের গালমন্দ এবং হত্যার হুমকি দিচ্ছে, আমরা তদন্ত করে সত্যতা ফেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোহাম্মদ সেলিম , ঢাকা অফিস : সিটিহার্ট, সুইট নং ১৫/২, ৬৭ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০। ই-মেইল:: nkbarta24@gmail.com
Copyright © 2024 Nk Barta 24. All rights reserved.