নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে রাতের বেলায় রমরমা ভাবে চলছে মাটির গাড়ি, নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ জনপদ ও কৃষি জমি। মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটা ও জায়গা ভরাটের কাজে। পবিত্র রমজান মাসেও থেমে নেই মাটি খেঁকোদের অত্যাচার। স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যাক্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বারও করছে মাটির ব্যবসা। রমজানে সন্ধ্যার পরে মসজিদে চলে তারাবির নামাজ আর রাস্তায় চলে মাটির গাড়ি (পিকআপ ভ্যান ও নিষিদ্ধ পাওয়ার টিলার) এসব কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে রোজাদার ও এলাকাবাসি। এ বিষয়ে রাতে মোবাইল কোর্ট করতে সমস্যা রয়েছে বলে নিরব ভূমিকায় উপজেলা প্রশাসন। সামান্য বৃষ্টি হলেই বিপদ জনক সড়কে পরিনত হয় মাটির গাড়ি চলাচলকারী গ্রামীণ জনপদের পাঁকা সড়ক গুলো।
কয়েকজন রোজাদার ও ব্যবসায়িরা জানান, মাগরিবের নামাজের পর থেকে সারারাত মাটির গাড়ির যন্ত্রণায় আমরা ঠিকমত তারাবির নামাজ পড়তে পারিনা, এবং সারাদিন রোজা রেখে তারাবি শেষ করে আরামে ঘুমাবো তাও পারিনা গাড়ির অতিরিক্ত আওয়াজের কারণে। দোকানীরা বলেন সারা বছরের পরে এই একমাস আমাদের একটু ব্যবসা ভালো হয়, যখন সন্ধ্যা হয় ইফতারের পর থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত আমাদের ব্যবসার সময়, কিন্তু এদের কারণে আমরা দোকান খোলা রাখতে বা কোন পণ্য ডিসপ্লে করতে পারিনা, প্রচুর পরিমাণ বালুর কারণে সকল মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। এবং রাস্তা দিয়ে মহিলা কাস্টমার গুলো আসতে পারেনা, একদিকে এক্সিডেন্টের ভয় অন্য দিকে অতিরিক্ত বালুর কারণে সমস্যা হয়।
কবিরহাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন গুরে দেখা যায়, সুন্দলপুর, ধানসিঁড়ি, ঘোষবাগ ও ধানশালিক ইউনিয়ন জুড়ে একাধিক স্থানেই চলছে মাটির গাড়ি। কোন প্রকার পরিবেশ রক্ষায় ব্যাবস্থা না রেখে হরহামিষা মাটির গাড়ি চলাতে ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে গ্রামীণ জনপদের মানুষের দৈনন্দিন চলাফেরা।
জানা যায়, নরোত্তম পুর ইউনিয়নের করম বক্স বাজারের পাশে দুটি স্থানে দিনে রাতে চলে মাটির গাড়ি, সুন্দলপুর ইউনিয়নের বড় রামদেবপুর, আবদুল্যা মিয়ার হাটের আশপাশ ও হাতাইল্লা পোলসহ কয়েকটি স্থানেই সন্ধ্যার পর শুরু হয় মাটির গাড়ির ঝনঝনানি শব্দ। ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের বিডিপি বাজার, আক্তারের খেয়া ও নলুয়া ভুইয়ার, নলুয়া অলিমাঝির খেয়া এলাকায় সন্ধ্যা হলেই মিলে মাটির গাড়ির মেলা। একই অবস্থা ঘোষবাগ ইউনিয়নের বাটার চরিয়ার দোকান, পশ্চিম সোনাদিয়া, হালিমের মোকাম সহ আশপাশে কয়েকটি স্থানে। এছাড়াও ধানশালিক ইউনিয়ন ঝুড়েই রয়েছে একাধিক স্থানে মাটি কাটার উৎসব। মাত্র কয়েকদিন আগেই ধানশালিক ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাটির গাড়ির নিচে চাপায় পড়ে প্রাণ হারালো একটি মাদ্রাসা ছাত্র। যেখানে ধানশালিক ইউনিনের চেয়ারম্যান নিজেই চালাচ্ছে মাটির গাড়ি সেখানে অন্য মাটি ব্যাবসায়ীরা কেন বসে থাকবে এটাই প্রশ্ন সবার মনে। ধানশালিক ইউনিয়ন গুরে দেখা যায়, ইউনিয়নের চর মন্ডলিয়া বাজার, রিক্সাআলার দোকান, মুড়া আমিরাবাদ ইয়াকুব চেয়ারম্যানের প্রজেক্ট এলাকায় চলছে ছোটখাটো মাটি ব্যাবসায়ীদের গাড়ি আর খোদ চেয়ারম্যান ও মাষ্টার সর্দারের নেতৃত্বে ইউনিয়নের পূর্ব অংশ চর এলাহী ব্রিজ সংলগ্ন স্থানের পশ্চিম পাশে চলছে বড় কন্ট্রাক্টের মাটির পয়েন্ট। এসব মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইট ভাটা ও জায়গা ভরাটের কাজে।
এ বিষয়ে কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সরওয়ার উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, গত আইনশৃঙ্খলা মিঠিংয়ে মাটির গাড়ি গুলোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এবিষয়ে ইউনিয়ন বা এলাকা বৃত্তিক ব্যাবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অপর এক প্রশ্নে জবাবে তিনি আরো বলেন, ইউনিয়ন জনপ্রতিনিধিরাও যদি মাটি কাটার সাথে জড়িত থাকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোহাম্মদ সেলিম , ঢাকা অফিস : সিটিহার্ট, সুইট নং ১৫/২, ৬৭ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০। ই-মেইল:: nkbarta24@gmail.com
Copyright © 2024 Nk Barta 24. All rights reserved.