এনকে বার্তা ডেস্ক::
করোনাভাইরাস মহামারির সংকটে ধুঁকছে সারা বিশ্বেও ব্যবসা-বাণিজ্য। এ পরিস্থিতিতে চীন থেকে বেশ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান অন্য দেশে তাদের কারখানা সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। আর সেক্ষেত্রে তাদের নতুন গন্তব্য হতে পারে ভারত। বিশ্বের অন্যতম স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানও অ্যাপলও চীন ছাড়তে চাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি চীন থেকে উৎপাদন ব্যবসার ২০ শতাংশ ভারতে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। খবর: আনন্দবাজার।
ভারতের গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী পাঁচ বছরে ভারতে ৪ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে পারে অ্যাপল। উইনস্ট্রন ও ফক্সকন, এ দুই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতে স্মার্টফোন তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তা বাস্তাবায়িত হলে অ্যাপলই ভারতের বৃহত্তম রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
চীন থেকে পাততাড়ি গোটাতে চলা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জায়গা করে দিতে ইতিমধ্যেই জমি চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠানকে কাছে টানতে ভারতেরও প্রস্তুতিতে কোনও কমতি নাই। এ নিয়ে গত বছরের শেষ দিকেই অ্যাপল, স্যামসাং ও দেশিয় স্মার্টফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লাভার স্বত্তাধীকারীদের সঙ্গে একদফা বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভ (পিএলআই) প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। তার আওতায় বেশ কিছু শর্তও রাখা হয়। বলা হয়, এ প প্রকল্পের আওতায় যে প্রতিষ্ঠান যত বেশি সামগ্রী উৎপাদন করবে, তাদের তত বেশি সুবিধা দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ২০২০ থেকে ২০২৫-এর মধ্যে কমপক্ষে এক কোটি ডলারের সামগ্রী তৈরি করতে হবে বলেও জানানো হয়।
তবে পিএলআই-এর আওতায় বেশ কিছু শর্ত নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মতান্তর দেখা দেয়। মনে করা হচ্ছে, সে সবের নিষ্পত্তি হয়ে গেলেই চীন থেকে অ্যাপল ভারতে উৎপাদন কেন্দ্র সরিয়ে নিতে পারে। তবে এতে বাদ সাধতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
অ্যাপল ভারতে উৎপাদন কেন্দ্র সরিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছুক জানতে পেরে, তা নিয়েও সম্প্রতি সরব হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফক্স নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, উৎপাদন কেন্দ্র সরাতে হলে তা যুক্তরাষ্ট্রেই সরিয়ে আনুক অ্যাপল। অন্যত্র গেলে জরিমানার মুখে পড়তে হবে তাদের। মার্কিন পণ্যের ওপর চড়া শুল্ক নিয়ে আগেই ভারতকে বিঁধেছেন ট্রাম্প।
জানা গেছে, আইফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি ভারতে তাদের স্থানীয় উৎপাদন বাড়িয়ে আয় বাড়াতে চাইছে। তাদের লক্ষ্য, আগামী পাঁচ বছরে এ আয় ৪০ বিলিয়ন ডলার করা । এ কারণে চীনের বাইরে বিকল্প উৎপাদনের স্থান খুঁজছে তারা।
সম্প্রতি জাপান ঘোষণা দিয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠান চীন ছেড়ে যাবে তাদের ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তা দেবে দেশটি। এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশ একই ধরনের প্রস্তাব দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ কারণে এসব বিনিয়োগ বাগিয়ে নিতে বিশাল কর ছাড়সহ জমি বরাদ্দ, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-পানি সরবরাহ, এমনকি মূলধন জোগাড় কওে দেয়ারও প্রস্তাব দিয়েছে ভারত।
ভারতে বর্তমানে আইফোন বিক্রি হয় প্রায় ১৫০ কোটি ডলারের। যার মধ্যে ৫০ কোটি ডলারের ফোন স্থানীয় ভাবেই তৈরি হয়। অন্যদিকে, অ্যাপল হলো চীনের অন্যতম বৃহৎ বিনিয়োগকারী। ২০১৮-১৯ সালে চীনে ২২০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য উৎপাদন করেছে তারা, যার মধ্যে ১৮৫ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়েছিল। এ প্রতিষ্ঠানটিতে চীনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্তত ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন কর্মী কাজ করে। এ কারণে এত বিশাল বিনিয়োগ হাতছাড়া করতে চায় না ভারত।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোহাম্মদ সেলিম , ঢাকা অফিস : সিটিহার্ট, সুইট নং ১৫/২, ৬৭ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০। ই-মেইল:: nkbarta24@gmail.com
Copyright © 2024 Nk Barta 24. All rights reserved.