ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি ‘সোনালী অধ্যায়’ পার করছে: রাজনাথ

Avatar
Jubayer Hosain Hemel
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একটি ‘সোনালী অধ্যায়’ পার করছে।

তিনি বলেন, এর মাধ্যমে নিরাপত্তা, বাণিজ্য, যোগাযোগ এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সহযোগিতা ক্রমাগতভাবে গভীর হয়েছে। অংশীদারিত্বটি পরমাণু প্রযুক্তি, আইটি, উদ্ভাবন এবং সমুদ্র অর্থনীতির মতো নতুন এবং উদীয়মান ক্ষেত্র প্রসারিত হচ্ছে।

ভারতীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সোমবার প্রধান অতিথি হিসেবে চ্যান্সেরি প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবসের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতে বাংলাদেশ হাই কমিশন আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন।

এ সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, তার দেশ একে অপরের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা উদ্বেগকে সমর্থন করার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী কারণ দেশটি তার প্রতিবেশীদের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের বিষয়ে গভীরভাবে সংবেদনশীল।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য পারস্পরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে সাড়া দেওয়া এবং আমাদের জনগণের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি প্রদানের লক্ষ্যগুলো উপলব্ধি করার জন্য একে অপরের সঙ্গে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং ভারতীয় তিন বাহিনীর প্রধানগণ বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী, অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ এবং বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সাবেক সেনাসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান এবং মিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আবুল কালাম আজাদও এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করে রাজনাথ সিং বলেন, উভয় দেশই অভিন্ন চ্যালেঞ্জ যেমন দারিদ্র্য ও ক্ষুধা, সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থী মতাদর্শের উত্থান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে।

তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতির অনুপ্রেরণামূলক নেতৃত্ব ছিল দেশের জনগণের স্বাধীনতার সংগ্রামে আলোর দিশারী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আদর্শ বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে ক্রমাগত এগিয়ে যাওয়ার ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ করছে।

ভারতের মন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছেন কারণ এটি অন্যায়, নৃশংসতা এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে নৈতিক লড়াই ছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় সমর্থনের কথা উল্লেখ করেন এবং তরুণ প্রজন্মের, বিশেষ করে যারা বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীতে নতুন যোগ দিয়েছেন, তাদের মনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করার আহ্বান জানান।

তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আজকের গর্বিত ও পেশাদার বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল্যবোধের প্রতি একাত্ম এবং এই সত্যটির প্রশংসা করে বলেন বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর সর্বোচ্চ অবদানকারীদের অন্যতম এবং পেশাদারিত্ব এবং অঙ্গীকারের কারণে তারা বিশ্বব্যাপী সম্মানিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় শুরু হওয়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি কর্মকান্ডের মাধ্যমে ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন।

প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের জন্য ভারত বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রদান করেছে উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই অঙ্গীকার কেবল সম্পদ অর্জনই নয়, প্রতিরক্ষা সামগ্রীর সহ-উন্নয়ন ও সহ-উৎপাদনেও যৌথ কার্যক্রমকে উৎসাহিত করবে।

তিনি অর্থনৈতিক খাতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেন, সারাদেশে যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে, তার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের দেশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভারত কর্তৃক স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের দিবস ৬ ডিসেম্বরকে স্মরণ করে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, দিনটিকে ভারত ও বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের আরও ১৮টি দেশে ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে স্মরণ করা হবে।- বাসস


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০