নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
যৌতুকের টাকা না পেয়ে নাজমা আক্তার ময়না (২২) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী আব্দুল মমিন (২৮) পলাতক রয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ওই হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধূ মধুপুর গ্রামের দিনমজুর এছাক আলীর মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫বছর আগে বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বেতুয়া গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে আব্দুল মমিনের সাথে পাশ্ববর্তী মধুপুর গ্রামের এছাক আলীর মেয়ে নাজমা আক্তার ময়নার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে সাইফা নামের ৪ বছর বয়সী একটি শিশু কন্যা রয়েছে। মমিন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রায় সময় ময়নাকে মারধর করতো মমিন।
নিহত গৃহবধূর বাবা এছাক আলী অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর মমিন বিদেশ চলে যায়। বছর খানেক আগে তিনি দেশে ফিরে ইয়াবা বিক্রি ও সেবন শুরু করে। এসকল কাজে তাকে বাধা দিলে ময়নাকে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করতো মোমিন। ২-৩ রোজায় মোমিন ময়নার কাছে ৫০হাজার টাকা যৌতুক দাবী করে। তিনি রিকশা চালিয়ে সংসার চালান। তার পক্ষে এ টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার রাতে মমিন নেশা করে ঘরে ঢুকে ময়নাকে কিল, ঘুষি, লাথি মেরে জখম করে ও গলা টিপে শ্বাস রোধ করে আহত হরে। এক পর্যায়ে ময়না অচেতন হয়ে মাটিতে লুুটিয়ে পড়লে তার মুখে বিষাক্ত দ্রব্য ঢেলে দেয় মমিন। পরে ময়না বিষ পাণ করেছে বলে প্রচার করে এবং তার তাদেরকে মোবাইলে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন আসলে তাদের সাথে ময়নাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে মমিন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে ময়না মারা যায়। এসময় হাসপাতালে ময়নার লাশ রেখে পালিয়ে যায় মমিন।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনায় নিহত গৃহবধুর বাবা বাদী হয়ে মমিনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্ত মমিনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত মমিন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে বলে শুনছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।