এনকে বার্তা ডেস্ক::
দেশে চলমান মহামারি করোনায় রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে পুলিশের অস্থায়ী চেকপোস্টগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে নির্বিঘ্নে শহর ছাড়তে বা প্রবেশ করতে পারছেন সাধারণ মানুষ। ট্রাফিক ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কিছুটা পথ পায়ে হেঁটে এবং কিছুটা পথ ছোট ছোট পরিবহনে করে রাজধানী ছেড়ে গ্রামের পথে ছুটছেন অসংখ্য মানুষ। সড়ক পথে পুলিশি বাধা কাটলেও খুব একটা ভিড় দেখা যায়নি, তবে ঢাকা থেকে বের হওয়ার জন্য নদীপথে বিশেষ করে শিমুলিয়া ও মাওয়া ফেরিঘাটে পা রাখার জায়গা নেই।
ডিএমপির দায়িত্বশীর কর্মকর্তারা জানান, ২১ মে রাত থেকে অস্থায়ী চেকপোস্টগুলো সড়িয়ে দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত গাড়িগুলো চলাচলে কোনও বাধা দেওয়া হচ্ছে না। তবে স্থায়ী চেকপোস্টগুলো রয়েছে। মাদক, অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঠেকাতে সন্দেহভাজনদের এসব চেকপোস্টে তল্লাশি করা হবে।এর আগে, গত ১৭ মে থেকে ঢাকায় প্রবেশ ও ঢাকা থেকে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত কয়েকদিনে নানা অজুহাতে রাজধানী ছেড়েছে নগরীর অসংখ্য মানুষ। নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর শুক্রবার সকাল থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করেও কিছু সংখ্যক মানুষ রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি বের হওয়ার রাস্তায় হাতেগোণা কিছু প্রাইভেটকার ঢাকা ছাড়ছে। তবে পায়ে হেঁটে বা ভেঙে ভেঙে রাজধানী ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক।
দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘গাবতলী পয়েন্টে গাড়ির ফ্লো কম। দুয়েকটা করে গাড়ি ঢাকা ছাড়ছে। পায়ে হেঁটেও মানুষজনকে ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে। তাদের সংখ্যাই বেশি।
ডিএমপির ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মো. সাইফুল হক বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। তবে আজ যান চলাচল কম। সাধারণ মানুষ অন্য উপায়ে ঢাকা ছাড়ছেন বেশি।’
রাজধানীর গাবতলী এলাকায় ‘যাবেন পাটুরিয়া ঘাট, আসেন মাত্র ৫শ টাকা’ এভাবেই যাত্রী ডাকছিলেন প্রাইভেটকার চালক আহমেদ জসিম। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই তার কারের আসন পূর্ণ। এভাবেই গাড়ি রিজার্ভ দেখিয়ে চেকপোস্ট পেরিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ধরে যাত্রা শুরু করলেন এই চালক। শুক্রবার (২২ মে) সকালের ঘটনা এটি।
শুধু জসিম নন, রাজধানীর গাবতলীতে দাঁড়িয়ে এভাবে প্রতিনিয়ত যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে রাজধানী ছাড়ছে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত যানের চালকরা। বৃহস্পতিবার (২১ মে) ব্যক্তিগত গাড়িতে বাড়ি ফিরতে পারবেন নাগরিকরা, পুলিশের এমন ঘোষণার পরই লোকাল যাত্রী নিয়ে রিজার্ভ দেখিয়ে গ্রামে ফিরছে রাজধানীর মানুষ।
জানা যায়, পাটুরিয়াঘাট পর্যন্ত প্রতি যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৫শ টাকা করে। প্রাইভেটকারে চারজন যাত্রী, মাইক্রোবাসে ৯/১০ জন, হাইয়েস ১৪ জন করে যাত্রী নিচ্ছে। পাটুরিয়া ঘাটে নেমে যাত্রীরা ফেরি ও স্পিডবোর্ডে করে পদ্মা পার হয়ে অন্য গাড়িতে করে ফিরছেন গ্রামে।
শুধু রাজধানীর গাবতলীই নয়, এভাবে রাজধানীর বিভিন্ন স্পট থেকে যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে কার ও মাইক্রোবাস চালকরা। এছাড়াও মোটরসাইকেল, পিকআপ, ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্সে করেও বাড়ি ফিরছেন বহু মানুষ। শুক্রবার রাজধানী থেকে বের হওয়ার সড়কগুলোতে পুলিশের তল্লাশি শিথিল ছিল। এজন্য কোথাও বের হওয়ার সড়কে যানজট দেখা যায়নি।
রাজধানীর বুড়িগঙ্গা সেতুর ওপার থেকেও লোকাল যাত্রী নিয়ে মাওয়া ঘাটের দিকে যাচ্ছে বহু ব্যক্তিগত গাড়ি। অনেকে ব্যক্তিগত গাড়ি ঈদের আগে ভাড়ায় দিয়েছেন। বাবু বাজার সেতু থেকে মাওয়া পর্যন্ত যাত্রীপ্রতি নেওয়া হচ্ছে ৪শ-৫শ টাকা। মাওয়ায় পদ্মা নদী পার হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছেন লোকজন। রাজধানীর আব্দুল্লাহপুরে যাত্রী ডাকছেন বাইক চালক অনিক। তিনি ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলায় যাত্রী নিয়ে যান। অনিক জানান, জেলা ভেদে ৫শ-১ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেন। এভাবে অনেকে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়ও যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন।
যারা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজধানীতে ছিলেন, পুলিশের ঘোষণার পর তারাও বাড়ি ফিরছেন। ফলে করোনার এই সময়ে সংক্রমণ আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোহাম্মদ সেলিম , ঢাকা অফিস : সিটিহার্ট, সুইট নং ১৫/২, ৬৭ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০। ই-মেইল:: nkbarta24@gmail.com
Copyright © 2024 Nk Barta 24. All rights reserved.