নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বিবি হাজেরা ওবগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শ্বশুর বাড়ির লোকজন এটিকে স্ট্রোক কিন্বা বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করলেও হাজেরার স্বজনরা বলছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
https://youtu.be/dxY8HEh1rg0
নিহত বিবি হাজেরা বেগম কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আব্দুস ছালাম মিয়ার বাড়ির মাহফুজুল হক মানিকের স্ত্রী এবং কবিরহাট উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়রে ৬নং ওয়ার্ড পশ্চিম সোনাদিয়া গ্রামের মৃত আবু বক্কর ছিদ্দিকের মেয়ে।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এর আগে, গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আব্দুস ছালাম মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
রাতে কোম্পানীগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম রাজা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় নিহতের স্বামী বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহতের স্বামী স্থানীয় নুরানী ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার দারোয়ানের চাকরি করেন। গত ১৩-১৪ বছর পূর্বে তারা দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একমাত্র ছেলে হেফজ খানায় পড়ে। ঈদের পরে সে মাদ্রাসায় চলে যায়। গত শনিবার বিকেলে নিহেতর স্বামী মাদ্রাসায় ডিউটি করার জন্য চলে যায়। এরপর থেকে গৃহবধূ হাজেরা খাতুন ঘরে একা ছিল। সোমবার সকাল ১০টার দিকে নিহতের স্বামী মুঠোফোনে খবর পান তার স্ত্রী মারা গেছে। এমন খবরে তিনি তার বসতঘরের সামনে এসে দেখেন লোকজন জড়ো হয়ে আছে। তার স্ত্রী বসতঘরের দরজার উপর মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। তখন উপস্থিত লোকজনের মধ্যে কেউ কেউ বলাবলি করে। তার স্ত্রী স্ট্রোক অথবা বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। নিহতের স্বামী মানিক তার পাশের ঘরের লোকজনকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায় সকাল ৯টার দিকে তাকে বসতঘরের দরজার উপর পড়ে থাকতে দেখে।
নিহতের ভাই ইসমাইল ও ইব্রাহিম অভিযোগ করে বলেন, শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার বোনের লাশ তড়িঘড়ি করে দাফনের চেষ্টা করে। তাদের বাধার মুখে দাফন করতে পারেনি। এরপর তারা মরদেহ তার স্বামীর বাড়ি থেকে তাদের কবিরহাট উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড পশ্চিম সোনাদিয়া গ্রামে নিয়ে যান। সেখানে তার শরীরে অনেক আঘাতের চিহৃ দেখে স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি কোম্পানীগঞ্জ থানাকে অবহিত করে।
অভিযোগ করে তারা দুই ভাই আরো বলেন, নিহত হাজেরার দেবর মিলন, তার স্ত্রী লাকী আক্তার ও তার ছেলে তারেক নিহত হাজেরাকে পিটিয়ে হত্যা করে। নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহৃ রয়েছে বলেও তারা দাবি করেন। এর আগেও একাধিকবার তারা তাকে মারধর করেছে। সর্বশেষ ঈদুল আজহার আগেও তাদের বোনকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ করেন নিহতের দুই ভাই।
নিহতের স্বামী মাহফুজুল হক মানিক অভিযোগ করে বলেন, এর আগে তার সাথে একাধিকবার তার ছোট ভাই মিলনের সঙ্গে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরধরে মারামারি হয়। এরপর সে তার স্ত্রীকে হুমকি দেয় এখানে তাকে থাকতে দিবে না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার নিহতের দেবর মিলনের ফোনে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোহাম্মদ সেলিম , ঢাকা অফিস : সিটিহার্ট, সুইট নং ১৫/২, ৬৭ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০। ই-মেইল:: nkbarta24@gmail.com
Copyright © 2024 Nk Barta 24. All rights reserved.