এনকে বার্তা ডেস্ক::
টানা বর্ষণে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে তীব্র স্রোতে সিরাজগঞ্জে যমুনার স্পার বাঁধের প্রায় ২৫ মিটার অংশ ধসে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের শিমলা স্পার বাঁধে এ ধস দেখা দেয়। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিরাজগঞ্জের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
যমুনা নদীর আগ্রাসী থাবায় জেলার চৌহালী উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে ভাঙনের তান্ডবলীলা শুরু হয়েছে। বিলীন হচ্ছে বসত ভিটা, তাঁত কারখানা, কবরস্থান, মসজিদ-মাদরাসা ও পাকা সড়ক। এতে হুমকির মুখে পড়েছে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ খাষপুখুরিয়া ও বাঘুটিয়া ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০০০-০১ অর্থবছরে ভাঙন এড়াতে যমুনার গতিপথ পরিবর্তনের লক্ষ্যে শিমলা এলাকায় এ স্পার বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। এরপর বেশ কয়েকবার স্পারটি সংস্কারও করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানির তীব্র স্রোতে স্পার বাঁধের স্যাংক (স্পারের মাটির অংশ) প্রায় ২৫ মিটার ধসে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ধস ঠেকাতে বালিভর্তি জিওব্যাগ ডাম্পিংয়ের করা হচ্ছে।
এদিকে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির পর থেকে চৌহালীর জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ থেকে খাষপুখুরিয়া ও বাঘুটিয়া ইউপির চরবিনানই-ভুতের মোড় এলাকা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙ্গন চলছে। গত তিন সপ্তাহের ব্যবধানে দক্ষিণ খাষপুখুরিয়া, মধ্য খাষপুখুরিয়া ও মিটুয়ানী এবং রেহাইপুখুরিয়া নতুন পাড়া ও চরবিনানই এলাকার প্রায় শতাধিক বসত ভিটা, ঘরবাড়ি, সাতটি তাঁত কারখানা, তিনটি মসজিদ ও মাদরাসাসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রায় দেড় কিলোমিটার পাকা সড়ক নদীতে বিলীন হয়েছে।
এ বিষয়ে চৌহালীর খাষপুখুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ সরকার জানান, পানি বৃদ্ধির পর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি হারানো পরিবারদের তালিকা করে উপজেলা প্রশাসনকে দেয়া হচ্ছে। তবে দ্রুত স্থায়ী তীর সংরক্ষণ কাজ না করলে অস্তিত্ব বিলীন হবে চৌহালীর দক্ষিণাঞ্চলের। এ চিন্তা ও হতাশায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষ।
চৌহালী উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দেওয়ান মওদুদ আহমেদ জানান, নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পাউবোসহ উর্ধ্বতন মহলকে বিস্তারিত অবগত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ভাঙনরোধে জরুরী কাজের জন্য ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। স্থায়ী তীর সংরক্ষণ কাজ করা হলে আশা করি এলাকা ভাঙন মুক্ত হবে।
সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মমিন মন্ডল জানান, ভাঙন ঠেকাতে দু-তিন দিনের মধ্যে জরুরী ভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলা হবে। এছাড়া স্থায়ী তীর সংরক্ষণ কাজের জন্য পাউবো’র প্রকল্পটি দ্রুত অনুমোদন ও কাজ শুরুর জন্য সর্বাক্তক চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোহাম্মদ সেলিম , ঢাকা অফিস : সিটিহার্ট, সুইট নং ১৫/২, ৬৭ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০। ই-মেইল:: nkbarta24@gmail.com
Copyright © 2024 Nk Barta 24. All rights reserved.