নিজস্ব প্রতিবেদক:
নোয়াখালীর কবিরহাটের চরআলগী খালে আড়াআড়ি দেওয়া বাঁধ রক্ষায় লাঠি হাতে পাহারা বসিয়েছে হাজারো গ্রামবাসী ।
https://youtu.be/ZHvOV9YKfGk
অপরদিকে ওই বাঁধ কেটে জেলাবাসীকে পানিবন্দির হাত থেকে রক্ষার জন্য মানববন্ধন করেছে ছাত্র-জনতা। এ নিয়ে যেকোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে কবিরহাটের ধানশালিক ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রিকশাওয়ালার দোকান এলাকায় এবং সদরের সোনাপুর জিরোপয়েন্টে গিয়ে এ পরিস্থিতি দেখা যায়।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের নভেম্বরে জলাবদ্ধতা নিরসন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে নোয়াখালী খালসহ জেলার ২৩টি খালের পুনঃখননে ৩২৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দেয় একনেক। তবে স্থানীয়দের দাবি, সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই কাদের মির্জা, শাহাদাত হোসেন, ভাগিনা ফখরুল ইসলাম রাহাত নোয়াখালী খালের মুখে নিজেদের অবৈধ প্রজেক্ট বাঁচাতে অপরিকল্পিতভাবে চরআলগী খাল খনন করে। এতে অনেকগুলো সেতু ধসে এলাকার মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া এলাকায় ব্যাপক নদীভাঙনের শিকার হয় স্থানীয়রা।
ধানশালিক ইউনিয়নের ব্যবসায়ী ইয়াছিন আরাফাত বলেন, চরআলগী খাল খননের পর ব্যাপক ভাঙন তৈরি হলে প্রশাসন রিকশাওয়ালার দোকানে খালের মাঝে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে ভাঙন রক্ষা করে। এখন প্রভাবশালীরা বন্যার পানি নিষ্কাশনে সেই বাঁধ কাটতে চাইলে এলাকাবাসী বাধার সৃষ্টি করে। সবাই লাঠি হাতে দিনরাত বাঁধ পাহারা দিচ্ছে। তারা পানি নিষ্কাশনের জন্য নিজেদের চলাচলের রাস্তাও কয়েকস্থানে কেটে দিয়েছে।
স্থানীয় মাদরাসার শিক্ষক মো. আলমগীর খান বলেন, জান দেব তবুও বাঁধ কাটতে দেব না। আমরা পানি নিষ্কাশনের জন্য চলাচলের পাকা রাস্তা পাঁচ স্থানে কেটে দিয়েছি, প্রয়োজনের আরও কাটবো। তবুও খালের বাঁধ কাটতে দেবো না।
বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে এ বাঁধ কাটতে লোকজন আসলে স্থানীয়দের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আবার কেউ আসলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হওয়া আশংকা রয়েছে।
এদিকে বুধবারের হামলার প্রতিবাদে ও চরআলগী খালে বাঁধ কেটে নোয়াখালীর পানিবন্দি মানুষকে রক্ষার দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে সদরের সোনাপুর জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন করেছে ছাত্র-জনতা।
তাদের দাবি, চরআলগী খালের বাঁধ না কাটলে নোয়াখালী জেলার পানিবন্দি মানুষের কষ্ট লাঘব হবে না। এছাড়া বুধবার ধানশালিক বাজারের ছাত্র-জনতার উপর যারা অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
এদিকে নোয়াখালী খালের অভিযুক্ত দখলদারদের অনেকে এখন পলাতক। তাদের মোবাইলে ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেননি।
তবে কবিরহাটের ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল বলেন, নোয়াখালী খালে আমার এক ফুট জায়গাও নেই। আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, বুধবার চরআলগী খালে বাঁধ কাটার জন্য কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন গেলেও গ্রামবাসী তাদের ঢুকতে দেয়নি। বিষয়টি আলাপ আলোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোহাম্মদ সেলিম , ঢাকা অফিস : সিটিহার্ট, সুইট নং ১৫/২, ৬৭ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০। ই-মেইল:: nkbarta24@gmail.com
Copyright © 2024 Nk Barta 24. All rights reserved.