নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নে মোবাইল থেকে এক গৃহবধূ ও তার স্বামীর একান্ত মূহুর্ত্বের ছবি কৌশলে নিজের মোবাইলে নিয়ে ওই গৃহবধূকে (১৯) একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে রাকিবুল হাসান রাকিব (২২) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধূর দায়ের করা মামলায় রাকিবের মা রুনা বেগমকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার সকালে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে তিনজনকে আসামী করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃত রুনা বেগম চরফকিরা ৫নং ওয়ার্ডের বারিক ক্যাপ্টেন বাড়ীর জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত চার বছর আগে চরফকিরা ৫নং ওয়ার্ডের এক প্রবাসীর সাথে নির্যাতিতা নারীর বিয়ে হয়। তাদের সন্তানের জন্ম হওয়ার পর বিদেশে চলে যায় গৃহবধূর স্বামী। অভিযুক্ত রাকিব তাদের একই বাড়ীর বাসিন্দা ও ওই নারীর ভাসুরের ছেলে। এ সম্পর্কের কারনে গৃহবধূদের ঘরে আসা যাওয়া ছিল রাকিবের। ঘরে আসা যাওয়ার কোন একসময় গৃহবধূর অজান্তে তার ব্যবহৃত মোবাইল থেকে তাদের স্বামী-স্ত্রী একান্ত মূহুর্ত্বের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি নিজের মোবাইলে নিয়ে যায় রাকিব। পরবর্তীতে ওই ছবিগুলো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে একাধিকবার গৃহবধূকে ধর্ষণ করে রাকিব। ধর্ষিতা ঘটনাটি রাকিবের বাবা মাকে জানিয়ে কোন প্রতিকার পায়নি, বরং উল্টো তারা ধর্ষিতাকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে। নিজের সংসার ভেঙে যাওয়ার ভয়ে প্রবাসী স্বামীকে কিছুই জানাননি ওই গৃহবধূ। গত ২২ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গৃহবধূর শ^শুরদের ঘরে কেউ না থাকার সুবাধে ঘরে আসে রাকিব। এসময় রাকিব গৃহবধূর কক্ষে ডুকে তার শিশু বাচ্চাকে পানিতে ফেলে হত্যার হুমকি ও ছবিগুলো আজই ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে বলে জোর পূর্বক আবারও ধর্ষণ করে। একইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে কৌশলে আবারও গৃহবধূর কক্ষে ডুকে গৃহবধূর মুখে চানাচুর ডুকিয়ে মুখ বন্ধ করে দিয়ে পুনঃরায় ধর্ষণের চেষ্টা চালায় রাকিব। পরে রাকিবের সাথে গৃহবধূর ধস্তাধস্তির শব্দ পেয়ে পাশের কক্ষ থেকে পরিবারের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। এসময় দ্রুত পালিয়ে গিয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করে রাকিব। গৃহবধূর শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে বাবার বাড়ীর লোকজনের সহযোগিতায় ২৪ডিসেম্বর তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ধর্ষণ ও ধর্ষণের তথ্যগোপন করার অভিযোগে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে তিনজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার ৩নং আসামীকে গ্রেপ্তার করে শনিবার দুপুরে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। নির্যাতিতা নারীকে মেডিকেল টেস্টের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার মূলহোতা রাকিবকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।