শীত এলেও বাজারে এখনও কমেনি সবজির দাম। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। সেইসঙ্গে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে বয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহে বয়লার মুরগির দাম কেজিতে বাড়েছে ১৫ টাকা।
আজ (শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। তবে পাকা টমেটোর দাম কমে অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। সেইসঙ্গে দাম কমেছে নতুন আলুর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল ১০ থেকে ২০ টাকা। দেশি-বিদেশি সব ধরনের পেঁয়াজের দামই বেড়েছিল রাজধানীর বাজারগুলোয়। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় ৮ থেকে ১০ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। কিছু দিন আগেও ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় পেঁয়াজ কেনা গেলেও এখন সেই পেঁয়াজই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
এছাড়া বরবটি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, করলা ৮০ টাকা, সিম ৫০ টাকা, দেশি আলু ৪০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিচ ৩০-৪০, পেঁয়াজের ফুল (ফুলকা) প্রতি আটি ২০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪০-৫০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ২০-৩০ টাকা, কাঁচা পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৪০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ক্ষীরা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৬০ টাকা আর কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। মধ্যমানের দেশি পেঁয়াজে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। আর আমদানি করা ভালোমানের পেঁয়াজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়। নিম্নমানের পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ঊর্ধ্বমুখী নিত্য-পণ্যের বাজারে নতুন করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।
পেঁয়াজের বাড়তি দামের বিষয়ে মিরপুরের ব্যবসায়ী রাজিব মীর বলেন, হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। আজ বাজার একটু কম দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। তাও গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় অনেক বেশি। যে কারণে আমাদের বিক্রিও কমেছে। দাম বাড়তি থাকায় আগে যে ক্রেতা দুই কেজি পেঁয়াজ নিতেন, তিনি এখন এক কেজি নেন। মুড়ি কাটা পেঁয়াজ বাজারে এসেছে তাই দাম কমতে শুরু করেছে। এছাড়া সামনে পেঁয়াজের দাম আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে বাজারে সবজির দাম এখনও বাড়তি থাকার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ক্রেতা নাজিম উদ্দিন বলেন, শীত চলে এসেছে তবুও আমাদের বাড়তি দামেই সবজি কিনতে হচ্ছে। অথচ অন্যান্য বছর শীত এলে এসব সবজি বর্তমান বাজারের চেয়ে অর্ধেক দামে কিনতে পেরেছি। এ বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সবজির চড়া দামই চলছে।
একই বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা জাহিদুর রহমান বলেন, এ বছর আসলেই সবজির দাম বেশি। তবে ভালোভাবে শীত পড়লে আর নতুন সবজি পুরোপুরি বাজারে আসতে শুরু করলে এ দাম কমে যাবে। তবে সবজির বাজার বেশি থাকার আরেকটি কারণ হলো ট্রাক ভাড়া বেশি। বাড়তি ট্রাক ভাড়ার প্রভাব পড়েছে সবজির দামে।
এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৬৫-১৭০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৬০-১৬৫ টাকা। আর দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০-১৫৫ টাকা।
বয়লার মুরগির পাশাপাশি দাম বেড়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগির। ব্যবসায়ীরা সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২৭০-২৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫০-২৭০ টাকা।
মুরগির দামের বিষয়ে মিরপুর ৬ নম্বর বাজারের ব্যবসায়ী রাব্বী আহমেদ বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে পাইকারি বাজারে বয়লার মুরগির দাম বাড়ছে। চাহিদার তুলনায় বয়লার মুরগির সরবরাহ কম। এ কারণেই দাম বাড়ছে। আর বয়লার মুরগির দাম বাড়ার কারণে সোনালী মুরগির দামও বেড়েছে।
মুরগির দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। গত সপ্তাহের মতো ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।
অপরদিকে রাজধানীর মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে এ মাছগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০-২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামও পরিবর্তন আসেনি।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোহাম্মদ সেলিম , ঢাকা অফিস : সিটিহার্ট, সুইট নং ১৫/২, ৬৭ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০। ই-মেইল:: nkbarta24@gmail.com
Copyright © 2024 Nk Barta 24. All rights reserved.