ঢাকা ০১:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা ছিনতাই করেও এনসিপি সংগঠন হিসেবে ব্যর্থ হয়েছে: নাছির Blind Amjad receives Eid gift from Tarique Zia জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দৃষ্টি হারানো আমজাদ পেলো তারেক জিয়ার ঈদ উপহার ভাড়াটিয়ার দোকানে তালা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা School student murdered in trivial incident: Police unravel mystery নোয়াখালীতে তুচ্ছ ঘটনায় স্কুল ছাত্র খুন: রহস্য উদঘাটন করল পুলিশ তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে কবিরহাটের ইতালি মার্কেটে পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ নিখোঁজের ২ দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে কবিরহাটের পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ নিজ এলাকায় হামলার শিকার এনসিপি নেতা হান্নান মাসুদ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত-১৫

লক্ষীপুরের দালালবাজারে তেল বিক্রিকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:১৯:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মে ২০২০ ৩৮৮ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রতিবেদক::

লক্ষীপুরে তেল বিক্রির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। হামলায় দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন লোক গুরুতর আহত হয়। মামলায় স্থানীয় দুই রাজনৈতিক নেতাকেও আসামী করা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে আটক করেনি পুলিশ।

জানা গেছে, জেলার সদর উপজেলার দালালবাজারে লাইসেন্স নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে জ্বালানি তেলের ব্যবসা করে আসছেন তোফায়েল আহম্মেদ নামে এক ব্যক্তি। পাশর্^বর্তী স্থানে গত কয়েক মাস আগে জ্বালানি তেলের আরেকটি দোকান বসান মোস্তফা মিয়া নামের আরেকজন। যদিও তাঁর দোকানের সরকারী কোন অনুমতি বা লাইসেন্স নেই। একই স্থানে তেল বিক্রি নিয়ে দুই দোকানের লোকজনের মাঝে প্রায়ই ঝামেলা হতো।

এতে লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান তোফায়েল এন্ড সন্স’র মালিক তোফায়েল মেসার্স নাহার ট্রেডার্স নামীয় লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। এ নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের লোকজনের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে।

২৩ মে (শনিবার) বিকেলে এক ক্রেতার কাছে তেল বিক্রিকে কেন্দ্র করে দুই দোকানের লোকজনদের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। পরে এ ঘটনায় সদর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়।

তোফায়েল আহম্মেদের পক্ষে ঘটনার পরদিন ২৪ মে ( থানায় মামলা করেছেন তাঁর ছেলে শাহীন। এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে ছয়জনকে। তাঁরা হলেন, মোস্তফা মিয়া (৬৫) ও তাঁর ছেলে মাসুদ (৩৮), রাজু (৩২), মাসুম (৩৫), দালালবাজার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সুমন হোসেন বাদশা (৩৩) ও তার ভাই মো. জাবেদ (৪২)। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে হামলা ও লুটপাট ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, মোস্তফার ছেলে মাসুদ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তোফায়েল আহম্মদের ছেলে এমরান হোসেনের মাথায় আঘাত করে। এতে গুরুতর জখম হন তিনি। তাঁর মাথায় ছয়টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যুবলীগ নেতা বাদশার বিরুদ্ধে এমরানের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত, দোকান লুটপাট ও একটি মোটসাইকেল ভাংচুরের অভিযোগ আনা হয়।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা বাদশা বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংস্যার শিকার হয়ে আমাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমি দুই পক্ষের মারামারি সময় তাদের শান্ত করার জন্য ঘটনাস্থলে যাই।’

এদিকে যুবলীগ নেতার দাবিকে ভিত্তিহীন বলেছেন তোফায়েল আহম্মদ। হামলা, লুট ও ভাঙচুরের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে জানান তিনি। অন্যদিকে, মোস্তফা মিয়ার ছেলে মাসুদ আলম থানায় ২৮ মে (বৃহস্পতিবার) পাল্টা আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে তোফায়েল আহম্মদ (৬০) ও তাঁর তিন ছেলে এমরান (২৪), জিহাদ (২২) এবং শাহীন (৩৫) রুমন (২৪) নামে একজনকে আসামী করা হয়। এতে তাদের উপর হামলা এবং লুটের অভিযোগ আনা হয়েছে।

তোফায়েল এন্ড সন্স’র মালিক তোফায়েল বলেন, ‘আমি লাইসেন্স নিয়ে দীর্ঘদিন বৈধভাবে তেলের ব্যবসা করে আসছি। আর মোস্তফা মিয়া অবৈধভাবে ব্যবসা করতেছে। কিন্তু সে আমার দোকানের বিরুদ্ধে দুর্নাম রটাচ্ছে। এর আগেও আমি থানায় জিডি করেছি। তারপরেও তাঁরা আমার ছেলে উপর এবং দোকানে হামলা চালিয়েছে। আমি ঘটনার বিচার দাবি করছি।’

নাহার ট্রেডার্সের মালিক মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘আমি তেলের দোকান দেওয়ার পর তাঁরা (তোফায়েল) আমার সাথে শত্রুতা সৃষ্টি করেছে। এর জের ধরে দলবদ্ধ হয়ে আমার ছেলেদের উপর হামলা করে তাদের রক্তাক্ত জখম করে। এবং দোকান লুটপাট চালায়।’ দোকানের লাইসেন্স’র বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করেছি। তবে আমাদের ট্রেড লাইসেন্স আছে।’

এ ব্যাপারে দালালবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীরন হোসেন বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ঘটনা আমাকে জানিয়েছে। আমি আগামী মঙ্গলবার সেটা মিমাংস্যা করার জন্য দুই পক্ষকে বসতে বলেছি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজিজুর রহমান মিয়া বলেন,দুই পক্ষের বিরুদ্ধে পাল্টা পাল্টী মামলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধিদেরকে আইনের আওতায় আনাহবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

লক্ষীপুরের দালালবাজারে তেল বিক্রিকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা

আপডেট সময় : ০৬:১৯:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মে ২০২০

প্রতিবেদক::

লক্ষীপুরে তেল বিক্রির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। হামলায় দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন লোক গুরুতর আহত হয়। মামলায় স্থানীয় দুই রাজনৈতিক নেতাকেও আসামী করা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে আটক করেনি পুলিশ।

জানা গেছে, জেলার সদর উপজেলার দালালবাজারে লাইসেন্স নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে জ্বালানি তেলের ব্যবসা করে আসছেন তোফায়েল আহম্মেদ নামে এক ব্যক্তি। পাশর্^বর্তী স্থানে গত কয়েক মাস আগে জ্বালানি তেলের আরেকটি দোকান বসান মোস্তফা মিয়া নামের আরেকজন। যদিও তাঁর দোকানের সরকারী কোন অনুমতি বা লাইসেন্স নেই। একই স্থানে তেল বিক্রি নিয়ে দুই দোকানের লোকজনের মাঝে প্রায়ই ঝামেলা হতো।

এতে লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান তোফায়েল এন্ড সন্স’র মালিক তোফায়েল মেসার্স নাহার ট্রেডার্স নামীয় লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। এ নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের লোকজনের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে।

২৩ মে (শনিবার) বিকেলে এক ক্রেতার কাছে তেল বিক্রিকে কেন্দ্র করে দুই দোকানের লোকজনদের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। পরে এ ঘটনায় সদর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়।

তোফায়েল আহম্মেদের পক্ষে ঘটনার পরদিন ২৪ মে ( থানায় মামলা করেছেন তাঁর ছেলে শাহীন। এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে ছয়জনকে। তাঁরা হলেন, মোস্তফা মিয়া (৬৫) ও তাঁর ছেলে মাসুদ (৩৮), রাজু (৩২), মাসুম (৩৫), দালালবাজার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সুমন হোসেন বাদশা (৩৩) ও তার ভাই মো. জাবেদ (৪২)। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে হামলা ও লুটপাট ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, মোস্তফার ছেলে মাসুদ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তোফায়েল আহম্মদের ছেলে এমরান হোসেনের মাথায় আঘাত করে। এতে গুরুতর জখম হন তিনি। তাঁর মাথায় ছয়টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যুবলীগ নেতা বাদশার বিরুদ্ধে এমরানের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত, দোকান লুটপাট ও একটি মোটসাইকেল ভাংচুরের অভিযোগ আনা হয়।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা বাদশা বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংস্যার শিকার হয়ে আমাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমি দুই পক্ষের মারামারি সময় তাদের শান্ত করার জন্য ঘটনাস্থলে যাই।’

এদিকে যুবলীগ নেতার দাবিকে ভিত্তিহীন বলেছেন তোফায়েল আহম্মদ। হামলা, লুট ও ভাঙচুরের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে জানান তিনি। অন্যদিকে, মোস্তফা মিয়ার ছেলে মাসুদ আলম থানায় ২৮ মে (বৃহস্পতিবার) পাল্টা আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে তোফায়েল আহম্মদ (৬০) ও তাঁর তিন ছেলে এমরান (২৪), জিহাদ (২২) এবং শাহীন (৩৫) রুমন (২৪) নামে একজনকে আসামী করা হয়। এতে তাদের উপর হামলা এবং লুটের অভিযোগ আনা হয়েছে।

তোফায়েল এন্ড সন্স’র মালিক তোফায়েল বলেন, ‘আমি লাইসেন্স নিয়ে দীর্ঘদিন বৈধভাবে তেলের ব্যবসা করে আসছি। আর মোস্তফা মিয়া অবৈধভাবে ব্যবসা করতেছে। কিন্তু সে আমার দোকানের বিরুদ্ধে দুর্নাম রটাচ্ছে। এর আগেও আমি থানায় জিডি করেছি। তারপরেও তাঁরা আমার ছেলে উপর এবং দোকানে হামলা চালিয়েছে। আমি ঘটনার বিচার দাবি করছি।’

নাহার ট্রেডার্সের মালিক মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘আমি তেলের দোকান দেওয়ার পর তাঁরা (তোফায়েল) আমার সাথে শত্রুতা সৃষ্টি করেছে। এর জের ধরে দলবদ্ধ হয়ে আমার ছেলেদের উপর হামলা করে তাদের রক্তাক্ত জখম করে। এবং দোকান লুটপাট চালায়।’ দোকানের লাইসেন্স’র বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করেছি। তবে আমাদের ট্রেড লাইসেন্স আছে।’

এ ব্যাপারে দালালবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীরন হোসেন বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ঘটনা আমাকে জানিয়েছে। আমি আগামী মঙ্গলবার সেটা মিমাংস্যা করার জন্য দুই পক্ষকে বসতে বলেছি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজিজুর রহমান মিয়া বলেন,দুই পক্ষের বিরুদ্ধে পাল্টা পাল্টী মামলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধিদেরকে আইনের আওতায় আনাহবে।