নিজেস্ব প্রতিবেদক:
দেশের স্থানীয় পর্যায়ে অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ। জরাজীর্ণ অবস্থা হলেও নজর নেই কর্তৃপক্ষের। নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ১ নং চরজব্বর ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে সেবা কার্যক্রম, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই সেবা দিয়ে আসছে পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব ও সদস্যরা।
২০০১ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়া পরিষদ ভবনটি ২০০৩ সালে শুভ উদ্ধোধন করেন তৎকালিন ক্ষমতায় থাকা নোয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ শাহজাহান।
বর্তমানে ভবনটি প্রায় ৭০ শতাংশ নষ্ট হওয়া ভবনটি যে কোন মুহুর্তে ধ্বসে পড়তে পারে। তাই আতংকে থাকেন সেবা নিতে আসা ইউনিয়ন পরিষদের হাজার হাজার মানুষ।
পরিষদে সেবা নিতে আসা এলাকাবাসী অনেকেই বলেন, ‘পরিষদে কোন সেবা নিতে আসলে ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। তাই সেবা নেওয়া সময় পর্যন্ত পরিষদের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাদের। বর্তমান সরকারের সবকিছুতে আধুনিকতা ও ডিজিটাল উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও এমন জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত উন্নয়নের কোন ছোঁয়াই স্পর্শ করেনি। এটি এই ইউনিয়নবাসীদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। দেশের প্রত্যন্ত গ্রামে শহরের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার আগে এই ইউনিয়ন পরিষদকে আধুনিকায়ন করা অত্যন্ত জরুরি এবং সময়ের দাবী।
অতি দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট ওমর ফারুক’সহ ইউপি সদস্যগণ ও এলাকাবাসী।
একটি ভবনের স্থায়ীত্ব ২৫ বছর দেয়া হলেও ২০/২১ বছরের মধ্যে কিভাবে পুরো ভবন ঝরাজীর্ণ হয়ে যায় সে বিষয়ে অনিয়ম আর দূর্ণীতিকেই দায় করেন ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী। তিনি বলেন, ভবনটি নির্মাণের সময় তখন যে ঠিকাদার কাজটি করেছে তিনি অনিয়ম দূর্ণীতি করেছেন, নয়তো এতো সহজে পরিষদ ভবন ঝরে পড়ার কথা না।
ইউপি সদস্য আবু কউছার বলেন, কয়েকদিন আগে ছাদের পলেস্তার খসে পড়ে, বিকট শব্দ হওয়ায় আমরা চারিদিকে ছোটাছুটি করি, প্রায় সময় এরকম ভাবে পলেস্তার খসে পড়ছে। জীবনের ঝুঁকি আর আতঙ্ক নিয়ে কাজ করি আমরা। সাধারণ মানুষও ভয়ে থাকেন, আমাদের দাবী অতি দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক।
১নং চর জব্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট ওমর ফারুক বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর নিজ উদ্যোগে সামান্য সংস্কার করেছি। কিন্তু সেবা দেওয়া জরুরি বলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা প্রতি দিনই চেষ্টা করছি পরিষদে আসা মানুষদের মানসম্মত সেবা দিতে। পরিষদ ভবনের এমন জরাজীর্ণ অবস্থা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকার জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষরা শুধুমাত্র আশা দিয়েই রেখেছেন। পুরাতন ভবনটি ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য আমি নোয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৈতী সর্ব বিদ্যা বলেন, ভবনের বিষয়ে রেজুলেশন করে স্খানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু ভনের ২৫ বছর পূর্ণ হয়নি তাই মন্ত্রনালয় কি সংস্কার করবে নাকি নতুন ভবন নির্মাণ করবে সেটি তারা বিবেচনা করবেন। তবে ২৫ বছর পূর্ণ হতে আরো ১ বছর বাকি রয়েছে। তবুও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি বাকিটা মন্ত্রনালয় সিদ্ধান্ত নেবে।