ঢাকা ১১:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের ভোগান্তি ও যন্ত্রণা শুনবে কে?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৭:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জুলাই ২০২০ ১১৩৮ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডেস্ক রিপোর্ট::

 

বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেকের মনে সংশয় ছিল বিষয়টি কীভাবে হবে এবং এটি অনেকটা কল্পনার রাজ্যে বসবাসের মতো কি না? কিন্তু বৈশ্বিক কভিড মহামারি চলাকালে ডিজিটাল সেবাগুলোই মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদান করেছে। বিশেষ করে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনগুলো এ মহামারির সময় মানুষের আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করেছে। আর এ সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সম্মুখযোদ্ধাদের মতো অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের প্রতি বেশ তৎপর ছিলেন। প্রথমে তাদের জন্য কিছুটা প্রণোদনা ঘোষণা করা হলেও ব্যাংক মালিকরা তা আবার প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কভিড মহামারির সময় ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের জন্য সরকার ও ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে গ্রাহকদের উৎসাহিত করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি বড় সুবিধা কভিডের প্রাদুর্ভাবের সময় সাধারণ মানুষ বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করতে পেরেছেন। ডিজিটাল উপায়ে আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করা খুব সহজে করতে পেরেছেন। তবে এই ডিজিটাল লেনদেনের অন্যতম উপায় ছিল ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড, যা সাধারণ মানুষের জন্য সুফল যেভাবে বয়ে নিয়ে আসছে, তেমনি ভোগান্তির মাত্রাও বাড়িয়েছে অনেকগুণ।

কভিড মহামারি পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ছিল, ১৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া বিলের বিপরীতে কোনো ধরনের বিলম্ব ফিস বা চার্জ নেওয়া যাবে না। ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ নির্দেশনা শুধু কাগজেই সীমাবদ্ধ ছিল। বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিলম্ব ফিস ও তাদের আগের ঘোষণা অনুযায়ী সুদ নিয়েছে। ভুক্তভোগীদের মতে, এপ্রিল ও মে এই দুই মাস সব ধরনের ঋণের সঙ্গে ক্রেডিট কার্ডের সুদ আদায় স্থগিত রাখার নির্দেশনা থাকলেও সেটি মানা হয়নি। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে বিল পরিশোধ করার পরও জরিমানা নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি। তারা বলেছেন, ক্রেডিট কার্ড ফেরত দিয়ে অন্য ব্যাংক থেকে নিতে! এটি সমাধান কি না আমাদের হয়তো জানা নেই। এই লক্ষণটি সুস্থ ব্যবসার লক্ষণ নয়।

বেসরকারি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন, এ রকম অনেকের বক্তব্যÑ‘ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো নির্দেশনাই মানছে না। এমনকি ঋণের ক্ষেত্রে দুই মাস সব ধরনের সুদ আদায় স্থগিত রাখার যে নির্দেশনা, তাও মানা হচ্ছে না।’ গ্রাহকদের সরবরাহ করা একাধিক ব্যাংকের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মার্চ মাসে ব্যবহারের ওপর ২৩ এপ্রিল একটি ব্যাংক তাকে যে বিল পাঠায়, সেখানে এক হাজার ৪৪০ টাকা সুদ ধরা হয়েছে। আরেকটি ব্যাংক গত মে মাসের বিলে সুদ ধরেছে ৯৪৫ টাকা। এটি পাঠানো হয়েছে ২০ জুন। এ বিষয়ে আরও কিছু গ্রাহক জানান, ‘গ্রাহকদের স্বার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধে সুবিধা দিয়ে সার্কুলার জারি করলেও কার্যত ব্যাংকগুলো সেটা মানেনি। উল্টো বিল অপরিশোধিত রাখার কারণে এখন আমরা সুদ গুনছি। বিলম্ব ফি ও চক্রবৃদ্ধি সুদ কেন মাফ করা হয়েছে? কারণ করোনার কারণে ব্যাংকে যাওয়া সমস্যা হবে।’ তাহলে মূল বিলের টাকা দিতে ব্যাংকে কীভাবে যেতেন তিনি, প্রশ্ন তোলেন এই গ্রাহক। এছাড়া আরেকজন গ্রাহকের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, মার্চ মাসে ব্যবহারের ওপর ২৬ এপ্রিল একটি ব্যাংক তাকে যে বিল পাঠায়, তাতে তিন হাজার ৪১১ টাকা সুদ ধরা হয়েছে। এ ছাড়া এপ্রিল মাসে ব্যবহারের ওপর গত ৫ মে পাঠানো আরেকটি বেসরকারি ব্যাংকের বিলে সুদ ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৭৯৬ টাকা। এখানেই শেষ নয়, ৫ মে পাঠানো বিলটি গত ২০ মে নির্দিষ্ট তারিখে ব্যাংকে পরিশোধ করার পরও জুন মাসে যে বিল পাঠানো হয়েছে, সেখানে পাঁচ হাজার ৫৩৬ টাকা সুদ ধরা হয়েছে। ক্রেডিট কার্ডের আরেক গ্রাহক জানান তার কাছ থেকেও চক্রবৃদ্ধি সুদ নিয়েছে আরেকটি ব্যাংক। ২১ এপ্রিল থেকে ২০ মে পর্যন্ত ব্যবহারের ওপর ব্যাংক যে স্টেটমেন্ট পাঠিয়েছে, তাতে তিন হাজার ৩৬৭ টাকা সুদ ধরা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন নির্বাহীর সঙ্গে কথা বললে তার তথ্য অনুযায়ী ‘যদি নিয়মের বাইরে কোনো ব্যাংক সুদ চার্জ করে থাকে এবং এ-সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘৪৫ দিন পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ড ফ্রি ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া যায়। এ সময়ের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ করতে না পারলে সুদ গুনতে হয় গ্রাহককে।’ কিন্তু ক্রেডিট কার্ডের অতিরিক্ত সুদের বিষয়ে তারা কোনো বক্তব্য দিতে রাজি নন।

ক্রেডিট কার্ডে বাড়তি কোনো চার্জ না নিতে গত ৪ ও ১৫ এপ্রিল আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেসব ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধের শেষ তারিখ ১৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত, যথাসময়ে ওই বিল পরিশোধ না করলেও কোনো বিলম্ব ফি, চার্জ, দø সুদ বা যে নামেই হোক, তা নেওয়া যাবে না। এ ছাড়া চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ আদায় না করার জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়। আর এপ্রিল ও মে মাসে সব ঋণে সুদ আদায় স্থগিতের নির্দেশনা দিয়ে আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় গত ৩ মে। মজার কাহিনি হলো বাংলাদেশ ব্যাংক এ ধরনের প্রজ্ঞাপন জারি করেই ক্ষান্ত। তা কতটুকু বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার সময় ও সদিচ্ছা কোনোটাই তাদের নেই। ফলে বেসরকারি ব্যাংকগুলো তাদের ইচ্ছামতো সুদ, জরিমানা, মাশুল, চার্জ যা-ই বলেন সব আদায় করে যাচ্ছে। তাদের এসব বিষয় দেখলে মনে হবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তারা বেসরকারি ব্যাংকের দয়ায় টিকে আছেন?

এখন প্রশ্ন হলো, বড় শিল্প উদ্যোক্তাদের সুদের হার এক ডিজিটে নামিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে বেশ কয়েকবার ব্যাংক মালিক সমিতিকে অনুরোধ করতে হয়েছিল। পরে অর্থমন্ত্রীকে হোটেলে গিয়ে ব্যাংকমালিকদের সঙ্গে মিটিং করে সরকারি তহবিল বেসরকারি ব্যাংকে সঞ্চিত রাখাসহ নানা সুবিধা প্রদান করে শিল্প গ্রাহকদের জন্য সুদের হার এক ডিজিটে নামাতে হয়েছিল। ক্রেডিট কার্ড সাধারণত মধ্যবিত্ত ও সাধারণ জনগণ ব্যবহার করে থাকে। সে কারণে এই ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ৪০ শতাংশ হলেও সুদ কমানোর জন্য কেউ সেভাবে আহ্বান জানাবে, তা ভাবা অবান্তর। কারণ বর্তমান বুর্জোয়া সমাজব্যবস্থায় সবাই বৃহৎ শিল্পমালিক, বড় ব্যবসায়ী, আমদানিকারক ও বড় ঋণখেলাপির পক্ষে কথা বলতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করেন। সমাজের নি¤œস্তর ও মধ্যবিত্তদের জন্য কথা বলাকে অসম্মানজনক মনে করেন। সে কারণে ক্রেডিট কার্ডের বিশাল অঙ্কের সুদের হার, সুদের সঙ্গে নানা ধরনের মাশুল, একবার কিস্তি খেলাপি হলে ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দেওয়ার মতো আচরণ কাবুলিওয়ালার নির্যাতনকেও হার মানায়। অথচ এই হাল সনেও শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশ পাড়ি দেওয়া এবং ব্যাংক ডাকাতি করে বিশাল দেশপ্রেমিক হয়ে থাকা মানুষের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়।

আর গ্রাহক হয়রানি বা ভোগান্তি এবং অতিরিক্ত মাশুল আদায়ের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেনÑএটি অনেকটাই সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সিটিজেন চার্টার লাগানোর মতো। যদিও এই চার্টার অনুযায়ী আজ পর্যন্ত কেউ সেবা পেয়েছেন, তার নজির মনে হয় নেই। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক ভোগান্তির অভিযোগ জানানোর জন্য সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের আমলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১১ সালের ১ এপ্রিল গ্রাহক স্বার্থসংরক্ষণ কেন্দ্র (সিআইপিসি) গঠন করে। পরিধি বাড়তে থাকায় পরে একে ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস (এফআইসিএসডি) নামে পূর্ণাঙ্গ বিভাগে রূপ দেওয়া হলেও গভর্নর পরিবর্তন হওয়ার পর এটি একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। কোনো গ্রাহক অভিযোগ করলে তার কোনো প্রাপ্তিস্বীকার পর্যন্ত করা হয় না। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও গ্রাহক হয়রানি সম্পর্কে তারা এ পর্যন্ত কিছু করতে পেরেছেন বলে তেমন কোনো নজির নেই? যদিও এই এফআইসিএসডি প্রতি বছর তাদের কার্যক্রমের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। তবে এ প্রতিবেদনের সত্যতা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন আছে। কিন্তু কতজন গ্রাহক এখান থেকে প্রতিকার পেয়েছেন, তার সত্যতা নিয়ে সন্দেহের মূল কারণ হলো বেসরকারি ব্যাংকগুলো যেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষকর্তার কোনো কথা শুনছে না, সেখানে এই এফআইসিএসডি সেকশনের কথা কতটুকু আমলে নেবে? বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হলেও গ্রাহক হয়রানি ও অনিয়ম নিয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিতে আজ পর্যন্ত সক্ষম হয়নি। বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকেও কোনো কোনো সময় আমলে না নিয়ে সরকারের শীর্ষমহলের কাছে দেনদরবার করে থাকে। ফলে একজন সাধারণ গ্রাহকের আজাহারি ও কান্না তাদের কাছে যাচ্ছে না। ফলে ব্যাংকগুলোয় অনিয়ম ও গ্রাহক হয়রানি এখন রীতিতে পরিণত হয়েছে, যার খেসারত দিতে হচ্ছে পুরো জাতিকে। ব্যাংক লুটপাট, ঋণ প্রদানে অনিয়মসহ নানা রোগে ব্যাংকগুলো যেমন আক্রান্ত, তেমনি ঋণ প্রদানে উচ্চ সুদ এবং গ্রাহকের টাকায় ব্যাংকের পকেট ভারী করলেও সঞ্চিত অর্থের লাভের পরিমাণ খুবই নগণ্য। যারা ব্যাংকের মালিক তারা যে পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করেছেন, তার দশগুণ তুলে নিচ্ছেন নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে।

আর্থিক খাতের অনেক বিশেষজ্ঞ আর্থিক বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দিলেও এটি মূলত গ্রাহকদের সঙ্গে আরও একটি প্রতারণার শামিল। কারণ কোনো গ্রাহক অভিযোগ করে প্রতিকার পেলে তিনি অন্য গ্রাহকদের বিষয়টি জানাবেন। কিন্তু গ্রাহক ব্যাংক ঋণ নেওয়ার সময় যেরকম পায়ের জুতা-সেন্ডেল ক্ষয় করে ঋণ পান, সেরকম বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়ে পুরো বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের এফআইসিএসডি অফিসে জুতা ক্ষয় করেও প্রতিকার না পেলে অভিযোগ জানানো তো দূরের কথা, এর ধারেকাছেও যাবেন না। অভিযোগ নিষ্পত্তিতে এফআইসিএসডি’র চরম শৈথিল্য প্রদর্শন, অনাগ্রহ এবং অধিকাংশ স্থানে গ্রাহকদের অভিযোগের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করার ঘটনায় এ বিভাগটির প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস হারানোর ফলে গ্রাহকরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছেন। ভোগান্তির মাত্রা চরম হলেও গ্রাহকরা এখানে অভিযোগ করতে অনাগ্রহী। কারণ অভিযোগ জানানোর হটলাইনটি সচল নয়। তাই গ্রাহকস্বার্থ রক্ষায় দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবিলম্বে এফআইসিএসডি সেলটি পরিপূর্ণভাবে কার্যকর করা এবং অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আদলে গণশুনানির আয়োজন করা এবং বিভাগের কার্যক্রম নজরদারির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন ও ক্যাব প্রতিনিধির সমন্বয়ে ত্রিপক্ষীয় মনিটরিং কমিটি গঠন করলে হয়তো কিছুটা সেবার মান উন্নত হতে পারে।

ভাইস প্রেসিডেন্ট

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের ভোগান্তি ও যন্ত্রণা শুনবে কে?

আপডেট সময় : ০৪:৩৭:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জুলাই ২০২০

ডেস্ক রিপোর্ট::

 

বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেকের মনে সংশয় ছিল বিষয়টি কীভাবে হবে এবং এটি অনেকটা কল্পনার রাজ্যে বসবাসের মতো কি না? কিন্তু বৈশ্বিক কভিড মহামারি চলাকালে ডিজিটাল সেবাগুলোই মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদান করেছে। বিশেষ করে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনগুলো এ মহামারির সময় মানুষের আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করেছে। আর এ সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সম্মুখযোদ্ধাদের মতো অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের প্রতি বেশ তৎপর ছিলেন। প্রথমে তাদের জন্য কিছুটা প্রণোদনা ঘোষণা করা হলেও ব্যাংক মালিকরা তা আবার প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। কভিড মহামারির সময় ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের জন্য সরকার ও ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে গ্রাহকদের উৎসাহিত করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি বড় সুবিধা কভিডের প্রাদুর্ভাবের সময় সাধারণ মানুষ বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করতে পেরেছেন। ডিজিটাল উপায়ে আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করা খুব সহজে করতে পেরেছেন। তবে এই ডিজিটাল লেনদেনের অন্যতম উপায় ছিল ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড, যা সাধারণ মানুষের জন্য সুফল যেভাবে বয়ে নিয়ে আসছে, তেমনি ভোগান্তির মাত্রাও বাড়িয়েছে অনেকগুণ।

কভিড মহামারি পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ছিল, ১৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া বিলের বিপরীতে কোনো ধরনের বিলম্ব ফিস বা চার্জ নেওয়া যাবে না। ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ নির্দেশনা শুধু কাগজেই সীমাবদ্ধ ছিল। বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিলম্ব ফিস ও তাদের আগের ঘোষণা অনুযায়ী সুদ নিয়েছে। ভুক্তভোগীদের মতে, এপ্রিল ও মে এই দুই মাস সব ধরনের ঋণের সঙ্গে ক্রেডিট কার্ডের সুদ আদায় স্থগিত রাখার নির্দেশনা থাকলেও সেটি মানা হয়নি। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে বিল পরিশোধ করার পরও জরিমানা নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি। তারা বলেছেন, ক্রেডিট কার্ড ফেরত দিয়ে অন্য ব্যাংক থেকে নিতে! এটি সমাধান কি না আমাদের হয়তো জানা নেই। এই লক্ষণটি সুস্থ ব্যবসার লক্ষণ নয়।

বেসরকারি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন, এ রকম অনেকের বক্তব্যÑ‘ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো নির্দেশনাই মানছে না। এমনকি ঋণের ক্ষেত্রে দুই মাস সব ধরনের সুদ আদায় স্থগিত রাখার যে নির্দেশনা, তাও মানা হচ্ছে না।’ গ্রাহকদের সরবরাহ করা একাধিক ব্যাংকের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মার্চ মাসে ব্যবহারের ওপর ২৩ এপ্রিল একটি ব্যাংক তাকে যে বিল পাঠায়, সেখানে এক হাজার ৪৪০ টাকা সুদ ধরা হয়েছে। আরেকটি ব্যাংক গত মে মাসের বিলে সুদ ধরেছে ৯৪৫ টাকা। এটি পাঠানো হয়েছে ২০ জুন। এ বিষয়ে আরও কিছু গ্রাহক জানান, ‘গ্রাহকদের স্বার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধে সুবিধা দিয়ে সার্কুলার জারি করলেও কার্যত ব্যাংকগুলো সেটা মানেনি। উল্টো বিল অপরিশোধিত রাখার কারণে এখন আমরা সুদ গুনছি। বিলম্ব ফি ও চক্রবৃদ্ধি সুদ কেন মাফ করা হয়েছে? কারণ করোনার কারণে ব্যাংকে যাওয়া সমস্যা হবে।’ তাহলে মূল বিলের টাকা দিতে ব্যাংকে কীভাবে যেতেন তিনি, প্রশ্ন তোলেন এই গ্রাহক। এছাড়া আরেকজন গ্রাহকের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, মার্চ মাসে ব্যবহারের ওপর ২৬ এপ্রিল একটি ব্যাংক তাকে যে বিল পাঠায়, তাতে তিন হাজার ৪১১ টাকা সুদ ধরা হয়েছে। এ ছাড়া এপ্রিল মাসে ব্যবহারের ওপর গত ৫ মে পাঠানো আরেকটি বেসরকারি ব্যাংকের বিলে সুদ ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৭৯৬ টাকা। এখানেই শেষ নয়, ৫ মে পাঠানো বিলটি গত ২০ মে নির্দিষ্ট তারিখে ব্যাংকে পরিশোধ করার পরও জুন মাসে যে বিল পাঠানো হয়েছে, সেখানে পাঁচ হাজার ৫৩৬ টাকা সুদ ধরা হয়েছে। ক্রেডিট কার্ডের আরেক গ্রাহক জানান তার কাছ থেকেও চক্রবৃদ্ধি সুদ নিয়েছে আরেকটি ব্যাংক। ২১ এপ্রিল থেকে ২০ মে পর্যন্ত ব্যবহারের ওপর ব্যাংক যে স্টেটমেন্ট পাঠিয়েছে, তাতে তিন হাজার ৩৬৭ টাকা সুদ ধরা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন নির্বাহীর সঙ্গে কথা বললে তার তথ্য অনুযায়ী ‘যদি নিয়মের বাইরে কোনো ব্যাংক সুদ চার্জ করে থাকে এবং এ-সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘৪৫ দিন পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ড ফ্রি ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া যায়। এ সময়ের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ করতে না পারলে সুদ গুনতে হয় গ্রাহককে।’ কিন্তু ক্রেডিট কার্ডের অতিরিক্ত সুদের বিষয়ে তারা কোনো বক্তব্য দিতে রাজি নন।

ক্রেডিট কার্ডে বাড়তি কোনো চার্জ না নিতে গত ৪ ও ১৫ এপ্রিল আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেসব ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধের শেষ তারিখ ১৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত, যথাসময়ে ওই বিল পরিশোধ না করলেও কোনো বিলম্ব ফি, চার্জ, দø সুদ বা যে নামেই হোক, তা নেওয়া যাবে না। এ ছাড়া চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ আদায় না করার জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়। আর এপ্রিল ও মে মাসে সব ঋণে সুদ আদায় স্থগিতের নির্দেশনা দিয়ে আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় গত ৩ মে। মজার কাহিনি হলো বাংলাদেশ ব্যাংক এ ধরনের প্রজ্ঞাপন জারি করেই ক্ষান্ত। তা কতটুকু বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার সময় ও সদিচ্ছা কোনোটাই তাদের নেই। ফলে বেসরকারি ব্যাংকগুলো তাদের ইচ্ছামতো সুদ, জরিমানা, মাশুল, চার্জ যা-ই বলেন সব আদায় করে যাচ্ছে। তাদের এসব বিষয় দেখলে মনে হবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তারা বেসরকারি ব্যাংকের দয়ায় টিকে আছেন?

এখন প্রশ্ন হলো, বড় শিল্প উদ্যোক্তাদের সুদের হার এক ডিজিটে নামিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে বেশ কয়েকবার ব্যাংক মালিক সমিতিকে অনুরোধ করতে হয়েছিল। পরে অর্থমন্ত্রীকে হোটেলে গিয়ে ব্যাংকমালিকদের সঙ্গে মিটিং করে সরকারি তহবিল বেসরকারি ব্যাংকে সঞ্চিত রাখাসহ নানা সুবিধা প্রদান করে শিল্প গ্রাহকদের জন্য সুদের হার এক ডিজিটে নামাতে হয়েছিল। ক্রেডিট কার্ড সাধারণত মধ্যবিত্ত ও সাধারণ জনগণ ব্যবহার করে থাকে। সে কারণে এই ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ৪০ শতাংশ হলেও সুদ কমানোর জন্য কেউ সেভাবে আহ্বান জানাবে, তা ভাবা অবান্তর। কারণ বর্তমান বুর্জোয়া সমাজব্যবস্থায় সবাই বৃহৎ শিল্পমালিক, বড় ব্যবসায়ী, আমদানিকারক ও বড় ঋণখেলাপির পক্ষে কথা বলতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করেন। সমাজের নি¤œস্তর ও মধ্যবিত্তদের জন্য কথা বলাকে অসম্মানজনক মনে করেন। সে কারণে ক্রেডিট কার্ডের বিশাল অঙ্কের সুদের হার, সুদের সঙ্গে নানা ধরনের মাশুল, একবার কিস্তি খেলাপি হলে ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দেওয়ার মতো আচরণ কাবুলিওয়ালার নির্যাতনকেও হার মানায়। অথচ এই হাল সনেও শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশ পাড়ি দেওয়া এবং ব্যাংক ডাকাতি করে বিশাল দেশপ্রেমিক হয়ে থাকা মানুষের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়।

আর গ্রাহক হয়রানি বা ভোগান্তি এবং অতিরিক্ত মাশুল আদায়ের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেনÑএটি অনেকটাই সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সিটিজেন চার্টার লাগানোর মতো। যদিও এই চার্টার অনুযায়ী আজ পর্যন্ত কেউ সেবা পেয়েছেন, তার নজির মনে হয় নেই। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক ভোগান্তির অভিযোগ জানানোর জন্য সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের আমলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১১ সালের ১ এপ্রিল গ্রাহক স্বার্থসংরক্ষণ কেন্দ্র (সিআইপিসি) গঠন করে। পরিধি বাড়তে থাকায় পরে একে ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস (এফআইসিএসডি) নামে পূর্ণাঙ্গ বিভাগে রূপ দেওয়া হলেও গভর্নর পরিবর্তন হওয়ার পর এটি একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। কোনো গ্রাহক অভিযোগ করলে তার কোনো প্রাপ্তিস্বীকার পর্যন্ত করা হয় না। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও গ্রাহক হয়রানি সম্পর্কে তারা এ পর্যন্ত কিছু করতে পেরেছেন বলে তেমন কোনো নজির নেই? যদিও এই এফআইসিএসডি প্রতি বছর তাদের কার্যক্রমের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। তবে এ প্রতিবেদনের সত্যতা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন আছে। কিন্তু কতজন গ্রাহক এখান থেকে প্রতিকার পেয়েছেন, তার সত্যতা নিয়ে সন্দেহের মূল কারণ হলো বেসরকারি ব্যাংকগুলো যেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষকর্তার কোনো কথা শুনছে না, সেখানে এই এফআইসিএসডি সেকশনের কথা কতটুকু আমলে নেবে? বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হলেও গ্রাহক হয়রানি ও অনিয়ম নিয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিতে আজ পর্যন্ত সক্ষম হয়নি। বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকেও কোনো কোনো সময় আমলে না নিয়ে সরকারের শীর্ষমহলের কাছে দেনদরবার করে থাকে। ফলে একজন সাধারণ গ্রাহকের আজাহারি ও কান্না তাদের কাছে যাচ্ছে না। ফলে ব্যাংকগুলোয় অনিয়ম ও গ্রাহক হয়রানি এখন রীতিতে পরিণত হয়েছে, যার খেসারত দিতে হচ্ছে পুরো জাতিকে। ব্যাংক লুটপাট, ঋণ প্রদানে অনিয়মসহ নানা রোগে ব্যাংকগুলো যেমন আক্রান্ত, তেমনি ঋণ প্রদানে উচ্চ সুদ এবং গ্রাহকের টাকায় ব্যাংকের পকেট ভারী করলেও সঞ্চিত অর্থের লাভের পরিমাণ খুবই নগণ্য। যারা ব্যাংকের মালিক তারা যে পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করেছেন, তার দশগুণ তুলে নিচ্ছেন নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে।

আর্থিক খাতের অনেক বিশেষজ্ঞ আর্থিক বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দিলেও এটি মূলত গ্রাহকদের সঙ্গে আরও একটি প্রতারণার শামিল। কারণ কোনো গ্রাহক অভিযোগ করে প্রতিকার পেলে তিনি অন্য গ্রাহকদের বিষয়টি জানাবেন। কিন্তু গ্রাহক ব্যাংক ঋণ নেওয়ার সময় যেরকম পায়ের জুতা-সেন্ডেল ক্ষয় করে ঋণ পান, সেরকম বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়ে পুরো বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের এফআইসিএসডি অফিসে জুতা ক্ষয় করেও প্রতিকার না পেলে অভিযোগ জানানো তো দূরের কথা, এর ধারেকাছেও যাবেন না। অভিযোগ নিষ্পত্তিতে এফআইসিএসডি’র চরম শৈথিল্য প্রদর্শন, অনাগ্রহ এবং অধিকাংশ স্থানে গ্রাহকদের অভিযোগের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করার ঘটনায় এ বিভাগটির প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস হারানোর ফলে গ্রাহকরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছেন। ভোগান্তির মাত্রা চরম হলেও গ্রাহকরা এখানে অভিযোগ করতে অনাগ্রহী। কারণ অভিযোগ জানানোর হটলাইনটি সচল নয়। তাই গ্রাহকস্বার্থ রক্ষায় দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবিলম্বে এফআইসিএসডি সেলটি পরিপূর্ণভাবে কার্যকর করা এবং অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আদলে গণশুনানির আয়োজন করা এবং বিভাগের কার্যক্রম নজরদারির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন ও ক্যাব প্রতিনিধির সমন্বয়ে ত্রিপক্ষীয় মনিটরিং কমিটি গঠন করলে হয়তো কিছুটা সেবার মান উন্নত হতে পারে।

ভাইস প্রেসিডেন্ট

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)