ঢাকা ০১:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

স্বামীকে গাছে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণ, আদালতে দায় স্বীকার করল আসামী

নোয়াখালী প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় : ০৯:০৫:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩ ১৭ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে গৃহবধূ (১৮) গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ২ যুবক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

 

বুধবার (২১ জুন) বিকেলের দিকে নোয়াখালীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. এমদাদ হোসেনের আদালতে আসামিরা নিজেদের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক প্রদান করে। পরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 

আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়া আসামিরা হলেন, উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের একরামুল হকের ছেলে রিয়াদ (৩০) ও মুছাপুর ক্লোজারের রেগুলেটর মোড়ের আলা উদ্দিনের ছেলে জালাল উদ্দিন (২৮)। তবে এ মামলার প্রধান আসামি মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নুর নবীর ছেলে জাহাঙ্গীর (৩৫) এখনও পলাতক রয়েছে।

 

এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহ্ আলম। তিনি বলেন, বুধবার বিকেলে পুলিশ গণধর্ষণ মামলার ২ আসাি কে আদালতে নিয়ে আসলে তারা স্বেচ্ছায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে চাইলে তাদের নোয়াখালীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. এমদাদ হোসেনের আদালতে হাজির করলে তিনি তাদের এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

 

জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার ২০ জুন রাত ১১টার দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে গৃহবধূ (১৮) গণধর্ষণের ঘটনার ৬ দিন পর ২ ধর্ষককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে তাদের মা-বাবা। খবর পেয়ে পুলিশ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৌলভী বাজার থেকে তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। গত রোববার ১৮ জুন এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে ভুক্তভোগীর স্বামী মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে, বুধবার ১৪ জুন বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পর্যটন এলাকা মুছাপুর সুইচ গেইটের পূর্ব পার্শ্বের বাগানে এই ঘটনা ঘটে।

 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার ১৪জুন বেলা সাড়ে ১০টার দিকে গৃহবধূ (১৮) তার স্বামীর সাথে নোয়াখালীর সদর উপজেলা থেকে মোটরসাইকেল যোগে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ক্লোজারের সুইচ গেইট এলাকায় ঘুরতে আসে। সুইজ গেইট পার হয়ে পূর্বদিকে বাগানের পার্শ্বে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছবি তোলার সময় আসামি জাহাঙ্গীর, রিয়াদ ও জালাল উদ্দিন হাতে ছুরি ও লাঠিসোটা নিয়া ঘটনাস্থলে ভিকটিম ও তার স্বামীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধমকি দিতে থাকে।

একপর্যায়ে তিন আসামি ভিকটিমের স্বামীকে গাছের সঙ্গে গামছা দিয়ে বেঁধে তার স্ত্রীকে বাগানে নিয়ে গণধর্ষণ করে। অপর আসামি জালাল উদ্দিন তখন ভিকটিমের স্বামীকে পাহারা দেয়। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতাদের ছত্রছায়ায় মুছাপুর ক্লোজার এলাকায় স্থানীয় জলদস্যু বাহিনী বালু উত্তোলন, খাস জায়গা দখল, ঘুরতে যাওয়া নারীদের ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতায় এগুলো কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। এর আগেও একাধিক নারী মুছারপুর ক্লোজারে ঘুরতে এসে ধর্ষণের শিকার হয় বলে জানা যায়। তবে মান সম্মানের ভয়ে কেউ এসব ঘটনায় মুখ খুলতে চায়না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক

স্বামীকে গাছে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণ, আদালতে দায় স্বীকার করল আসামী

আপডেট সময় : ০৯:০৫:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে গৃহবধূ (১৮) গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ২ যুবক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

 

বুধবার (২১ জুন) বিকেলের দিকে নোয়াখালীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. এমদাদ হোসেনের আদালতে আসামিরা নিজেদের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক প্রদান করে। পরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 

আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়া আসামিরা হলেন, উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের একরামুল হকের ছেলে রিয়াদ (৩০) ও মুছাপুর ক্লোজারের রেগুলেটর মোড়ের আলা উদ্দিনের ছেলে জালাল উদ্দিন (২৮)। তবে এ মামলার প্রধান আসামি মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নুর নবীর ছেলে জাহাঙ্গীর (৩৫) এখনও পলাতক রয়েছে।

 

এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহ্ আলম। তিনি বলেন, বুধবার বিকেলে পুলিশ গণধর্ষণ মামলার ২ আসাি কে আদালতে নিয়ে আসলে তারা স্বেচ্ছায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে চাইলে তাদের নোয়াখালীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. এমদাদ হোসেনের আদালতে হাজির করলে তিনি তাদের এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

 

জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার ২০ জুন রাত ১১টার দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে গৃহবধূ (১৮) গণধর্ষণের ঘটনার ৬ দিন পর ২ ধর্ষককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে তাদের মা-বাবা। খবর পেয়ে পুলিশ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৌলভী বাজার থেকে তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। গত রোববার ১৮ জুন এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে ভুক্তভোগীর স্বামী মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে, বুধবার ১৪ জুন বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পর্যটন এলাকা মুছাপুর সুইচ গেইটের পূর্ব পার্শ্বের বাগানে এই ঘটনা ঘটে।

 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার ১৪জুন বেলা সাড়ে ১০টার দিকে গৃহবধূ (১৮) তার স্বামীর সাথে নোয়াখালীর সদর উপজেলা থেকে মোটরসাইকেল যোগে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ক্লোজারের সুইচ গেইট এলাকায় ঘুরতে আসে। সুইজ গেইট পার হয়ে পূর্বদিকে বাগানের পার্শ্বে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছবি তোলার সময় আসামি জাহাঙ্গীর, রিয়াদ ও জালাল উদ্দিন হাতে ছুরি ও লাঠিসোটা নিয়া ঘটনাস্থলে ভিকটিম ও তার স্বামীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধমকি দিতে থাকে।

একপর্যায়ে তিন আসামি ভিকটিমের স্বামীকে গাছের সঙ্গে গামছা দিয়ে বেঁধে তার স্ত্রীকে বাগানে নিয়ে গণধর্ষণ করে। অপর আসামি জালাল উদ্দিন তখন ভিকটিমের স্বামীকে পাহারা দেয়। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতাদের ছত্রছায়ায় মুছাপুর ক্লোজার এলাকায় স্থানীয় জলদস্যু বাহিনী বালু উত্তোলন, খাস জায়গা দখল, ঘুরতে যাওয়া নারীদের ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতায় এগুলো কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। এর আগেও একাধিক নারী মুছারপুর ক্লোজারে ঘুরতে এসে ধর্ষণের শিকার হয় বলে জানা যায়। তবে মান সম্মানের ভয়ে কেউ এসব ঘটনায় মুখ খুলতে চায়না।