ঢাকা ১২:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

রাশেদকে শিগগিরই ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র: রাষ্ট্রদূত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:২৮:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০ ১৪১৯ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম আত্মস্বীকৃত খুনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী রাশেদ চৌধুরীকে দেশটি শিগগিরই বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের ভাষ্য, বিদেশের মাটিতে আশ্রয় নেয়া বঙ্গবন্ধুর অন্য খুনিদেরও দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।

ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত খুনিরা যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশের মাটিতে লুকিয়ে আছে। আমরা আশ্বস্ত হয়েছি যে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনে চ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধুর খুনিকে শিগগিরই বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ খুনি বিদেশে পালিয়ে আছেন। তারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী ও এ এম রাশেদ চৌধুরী। এর মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ও নূর চৌধুরী কানাডায় আছেন। বাকি তিনজন কোথায় আছেন, সে সম্পর্কে সরকারের কাছে নিশ্চিত তথ্য নেই।

এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেয়া খুনি রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে আশার আলো দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি রাশেদ চৌধুরীর আশ্রয়ের বিষয়টি পর্যালোচনা করছে। আশা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আন্তরিকতা আর ঢাকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে।

রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডকে মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে বলেন, হত্যাকারীরা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে জেনারেল জিয়ার নেতৃত্বে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, গণতন্ত্রকে হত্যা এবং হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করে।

জেনারেল জিয়া সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত এবং কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স প্রণয়ন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করেন এবং খুনিদের বিদেশি মিশনে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করে খুনিদের বিচার কাজ সম্পন্ন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যার রায় কার্যকর করেন। এটা সবার কাছে পরিষ্কার যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বদ্ধপরিকর।’

গতকাল ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা কালোব্যাচ ধারণ করে স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট শহীদ অন্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দূতাবাস প্রাঙ্গণে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং মহান নেতার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে নীরবতা পালন করা হয়।

দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং ১৫ আগস্ট নিহত শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

রাশেদকে শিগগিরই ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র: রাষ্ট্রদূত

আপডেট সময় : ০১:২৮:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম আত্মস্বীকৃত খুনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী রাশেদ চৌধুরীকে দেশটি শিগগিরই বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের ভাষ্য, বিদেশের মাটিতে আশ্রয় নেয়া বঙ্গবন্ধুর অন্য খুনিদেরও দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।

ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত খুনিরা যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশের মাটিতে লুকিয়ে আছে। আমরা আশ্বস্ত হয়েছি যে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনে চ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধুর খুনিকে শিগগিরই বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ খুনি বিদেশে পালিয়ে আছেন। তারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী ও এ এম রাশেদ চৌধুরী। এর মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ও নূর চৌধুরী কানাডায় আছেন। বাকি তিনজন কোথায় আছেন, সে সম্পর্কে সরকারের কাছে নিশ্চিত তথ্য নেই।

এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেয়া খুনি রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরানোর ক্ষেত্রে আশার আলো দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি রাশেদ চৌধুরীর আশ্রয়ের বিষয়টি পর্যালোচনা করছে। আশা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আন্তরিকতা আর ঢাকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে।

রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডকে মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে বলেন, হত্যাকারীরা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে জেনারেল জিয়ার নেতৃত্বে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, গণতন্ত্রকে হত্যা এবং হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করে।

জেনারেল জিয়া সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত এবং কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স প্রণয়ন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করেন এবং খুনিদের বিদেশি মিশনে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করে খুনিদের বিচার কাজ সম্পন্ন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যার রায় কার্যকর করেন। এটা সবার কাছে পরিষ্কার যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বদ্ধপরিকর।’

গতকাল ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা কালোব্যাচ ধারণ করে স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট শহীদ অন্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দূতাবাস প্রাঙ্গণে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং মহান নেতার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে নীরবতা পালন করা হয়।

দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং ১৫ আগস্ট নিহত শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত।