ঢাকা ০৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

পৈত্রিক ভিটে-মাটি দখলের চেষ্টা, হাতিয়ায় খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৬:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১ ২৩৯২ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নোয়াখালী প্রতিবেদক :

 

 

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বুডিরচর ইউনিয়নে পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেতে প্রতিপক্ষের হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে একটি অসহায় পরিবার। আদালতে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও ওই পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

 

স্থানীয় সুত্র ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সামছুদ্দিন জানান, বুড়িরচর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সেকান্তর মিয়া জীবিত থাকাবস্থায় তার পিতা অলি আহম্মদের কাছে ২ একর ২২ শতাংশ জমি বিক্রি করে যান। বর্তমানে ৩ একর ৫৩ শতাংশ পৈত্রিক (সম্পত্তি) জমি তাদের দখলে রয়েছে। সেকান্তর মিয়ার মৃত্যুর পর সাম্প্রতিক সময়ে তার ছেলে আবুল কালাম ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে সেকান্তর মিয়ার বিক্রয়কৃত সম্পত্তি নিজেদের প্রমাণ করার চেষ্টা করছে।

 

ওই সম্পত্তি নিয়ে নোয়াখালীর হাতিয়া বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে আবুল কালাম এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সামছুদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে আদালত ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টম্বর আপত্তি শুনানিতে মামলার চুড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্তায় বজায় রাখার নির্দেশ দেন। ওই আদেশ মর্মে গত ১০ মার্চ স্থিতাবস্থায় আদেশ কার্যকর করার জন্য হাতিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেয় আদালত।

 

ভুক্তভোগীরা জানান, গত ২৯ এপ্রিল আবুল কালাম হাতিয়া থানা মামলা একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে সামছুদ্দিনকে গ্রেফতার করিয়ে আদালতের নিষেজ্ঞার জায়গায় মধ্যযুগীয় কায়দায় সন্ত্রাসী ভাড়া করে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে সামছুদ্দিনের বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে বসত ঘর ভেঙ্গে ও বাড়িতে থাকা গাছপালা কেটে নিয়ে যায়। লুট করা হয় বসত ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র ও মালামাল। ঘটনার পর থেকে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে ওই পরিবারটি। ঘটনার পর হাতিয়া থানার পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ আইনগত কোন ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

 

সোমবার সকালে সরেজমিনে গেলে দেখা গেছে, এখনো প্রতিপক্ষের নৃশংস হামলার চিহৃ রয়ে গেছে সামছুদ্দিনের বাড়িতে। মিত্যা মামলায় জেল থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে আসলেও অর্থ অভাবে নির্মাণ করতে পারেননি বসত ঘর। তাই এখনো ঝুপড়ি ঝুলিয়ে খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। স্থানীয়রা বলছেন মরহুম সেকান্তর মিয়া তার জমি সামছুদ্দিনের বাবার কাছে বিক্রি করে গেলেও তার ছেলে আবুল কালাম প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অন্যায়ভাবে এসব করছেন। আবুল কালাম সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়না কেউ।

 

হাতিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানান, হাতিয়া থানা এলাকায় জায়গা-জমির বিষয়ে আদালত থেকে অনেক নিষেজ্ঞা আছে। বুড়িরচরের এই বিষয়ে আদালতের নিষেজ্ঞা আছে কিনা, কাগজপত্র দেখলে বলতে পারবো। হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে ওসি বলেন, এই ধরনের কোন ঘটনা কেই আমাকে জানাননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

পৈত্রিক ভিটে-মাটি দখলের চেষ্টা, হাতিয়ায় খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন

আপডেট সময় : ০৩:৪৬:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১

নোয়াখালী প্রতিবেদক :

 

 

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বুডিরচর ইউনিয়নে পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেতে প্রতিপক্ষের হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে একটি অসহায় পরিবার। আদালতে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও ওই পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

 

স্থানীয় সুত্র ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সামছুদ্দিন জানান, বুড়িরচর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সেকান্তর মিয়া জীবিত থাকাবস্থায় তার পিতা অলি আহম্মদের কাছে ২ একর ২২ শতাংশ জমি বিক্রি করে যান। বর্তমানে ৩ একর ৫৩ শতাংশ পৈত্রিক (সম্পত্তি) জমি তাদের দখলে রয়েছে। সেকান্তর মিয়ার মৃত্যুর পর সাম্প্রতিক সময়ে তার ছেলে আবুল কালাম ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে সেকান্তর মিয়ার বিক্রয়কৃত সম্পত্তি নিজেদের প্রমাণ করার চেষ্টা করছে।

 

ওই সম্পত্তি নিয়ে নোয়াখালীর হাতিয়া বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে আবুল কালাম এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সামছুদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে আদালত ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টম্বর আপত্তি শুনানিতে মামলার চুড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্তায় বজায় রাখার নির্দেশ দেন। ওই আদেশ মর্মে গত ১০ মার্চ স্থিতাবস্থায় আদেশ কার্যকর করার জন্য হাতিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেয় আদালত।

 

ভুক্তভোগীরা জানান, গত ২৯ এপ্রিল আবুল কালাম হাতিয়া থানা মামলা একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে সামছুদ্দিনকে গ্রেফতার করিয়ে আদালতের নিষেজ্ঞার জায়গায় মধ্যযুগীয় কায়দায় সন্ত্রাসী ভাড়া করে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে সামছুদ্দিনের বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে বসত ঘর ভেঙ্গে ও বাড়িতে থাকা গাছপালা কেটে নিয়ে যায়। লুট করা হয় বসত ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র ও মালামাল। ঘটনার পর থেকে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে ওই পরিবারটি। ঘটনার পর হাতিয়া থানার পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ আইনগত কোন ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

 

সোমবার সকালে সরেজমিনে গেলে দেখা গেছে, এখনো প্রতিপক্ষের নৃশংস হামলার চিহৃ রয়ে গেছে সামছুদ্দিনের বাড়িতে। মিত্যা মামলায় জেল থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে আসলেও অর্থ অভাবে নির্মাণ করতে পারেননি বসত ঘর। তাই এখনো ঝুপড়ি ঝুলিয়ে খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। স্থানীয়রা বলছেন মরহুম সেকান্তর মিয়া তার জমি সামছুদ্দিনের বাবার কাছে বিক্রি করে গেলেও তার ছেলে আবুল কালাম প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অন্যায়ভাবে এসব করছেন। আবুল কালাম সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়না কেউ।

 

হাতিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানান, হাতিয়া থানা এলাকায় জায়গা-জমির বিষয়ে আদালত থেকে অনেক নিষেজ্ঞা আছে। বুড়িরচরের এই বিষয়ে আদালতের নিষেজ্ঞা আছে কিনা, কাগজপত্র দেখলে বলতে পারবো। হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে ওসি বলেন, এই ধরনের কোন ঘটনা কেই আমাকে জানাননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।