ঢাকা ০১:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

নোয়াখালীর প্যানকেয়ার হাসপাতলে রোগী হত্যার অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৩২:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০২৩ ১৫ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

 

নোয়াখালীতে বেসরকারি একটি হাসপাতালে টাকার জন্য রোগীকে আটকে রেখে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। জেলা শহর মাইজদীতে প্যানকেয়ার আইসিইউ অ্যান্ড নরমাল ডেলিভারি সেন্টার নামে হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

 

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকালে নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সোনাইমুড়ি উপজেলার আমকি গ্রামের বাবর আহম্মদ (২৪) নামের এক যুবক বিষপান করেন। দিবাগত রাত ১টার দিকে পরিবারের লোকজন তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে ভোরে হাসপাতালে অবস্থান করা দালাল সুজন ওই রোগীর স্বজনদের ফুসলিয়ে পাশের বেসরকারি প্যানকেয়ার আইসিইউ হাসপাতালে নিয়ে যান।

 

বাবরের চাচাতো ভাই মাহমুদুল হাসান রিয়াজ বলেন, ‘শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে প্যানকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৪৭ হাজার টাকা বিল দাবি করে। ২৫ হাজার টাকা জমা দিলেও বাকি টাকা দিতে না পারায় হাসপাতালের লোকজন রোগীকে একটি রুমে তালা দিয়ে আটকে রাখেন।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘পরদিন রোববার (২০ আগস্ট) সকালে পাঁচ হাজার টাকা জোগাড় করে হাসপাতালে গেলে প্যানকেয়ার কর্তৃপক্ষ রোগী সদর হাসপাতালে আছে বলে জানায়। সেখানে গিয়ে হাসপাতালে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেঝেতে বাবরের মরদেহ পাই। পরে বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়।’

 

ঘটনার বিষয়ে জানতে প্যানকেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মানিককে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

 

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, ‘শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে আমাদের হাসপাতালে ওই রোগীকে ভর্তি করা হয়। পরে রোগীর স্বজনেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। রোববার সকালে তাকে কে বা কারা বেওয়ারিশ অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে রেখে যান। দুপুরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

 

সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, ‘জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে পাওয়া অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাঈমা নুসরাত জেবিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।’

 

হাসপাতালের বৈধতা প্রশ্নে তিনি বলেন,’ তারা একটি লাইসেন্স পেয়েছে। কিন্তু লাইসেন্স পেলেই যা ইচ্ছা তা করতে পারেনা। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

 

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনটি আমরা পেয়েছি। এবিষয়ে শীঘ্রই ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক

নোয়াখালীর প্যানকেয়ার হাসপাতলে রোগী হত্যার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৮:৩২:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০২৩

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

 

নোয়াখালীতে বেসরকারি একটি হাসপাতালে টাকার জন্য রোগীকে আটকে রেখে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। জেলা শহর মাইজদীতে প্যানকেয়ার আইসিইউ অ্যান্ড নরমাল ডেলিভারি সেন্টার নামে হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

 

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকালে নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সোনাইমুড়ি উপজেলার আমকি গ্রামের বাবর আহম্মদ (২৪) নামের এক যুবক বিষপান করেন। দিবাগত রাত ১টার দিকে পরিবারের লোকজন তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে ভোরে হাসপাতালে অবস্থান করা দালাল সুজন ওই রোগীর স্বজনদের ফুসলিয়ে পাশের বেসরকারি প্যানকেয়ার আইসিইউ হাসপাতালে নিয়ে যান।

 

বাবরের চাচাতো ভাই মাহমুদুল হাসান রিয়াজ বলেন, ‘শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে প্যানকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৪৭ হাজার টাকা বিল দাবি করে। ২৫ হাজার টাকা জমা দিলেও বাকি টাকা দিতে না পারায় হাসপাতালের লোকজন রোগীকে একটি রুমে তালা দিয়ে আটকে রাখেন।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘পরদিন রোববার (২০ আগস্ট) সকালে পাঁচ হাজার টাকা জোগাড় করে হাসপাতালে গেলে প্যানকেয়ার কর্তৃপক্ষ রোগী সদর হাসপাতালে আছে বলে জানায়। সেখানে গিয়ে হাসপাতালে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেঝেতে বাবরের মরদেহ পাই। পরে বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়।’

 

ঘটনার বিষয়ে জানতে প্যানকেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মানিককে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

 

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, ‘শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে আমাদের হাসপাতালে ওই রোগীকে ভর্তি করা হয়। পরে রোগীর স্বজনেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। রোববার সকালে তাকে কে বা কারা বেওয়ারিশ অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে রেখে যান। দুপুরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

 

সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, ‘জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে পাওয়া অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাঈমা নুসরাত জেবিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।’

 

হাসপাতালের বৈধতা প্রশ্নে তিনি বলেন,’ তারা একটি লাইসেন্স পেয়েছে। কিন্তু লাইসেন্স পেলেই যা ইচ্ছা তা করতে পারেনা। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

 

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনটি আমরা পেয়েছি। এবিষয়ে শীঘ্রই ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।