নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের গাড়িতে ডিম নিক্ষেপের ছবি ভাইরাল হয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
রোববার রাত থেকে বিভিন্ন ফেসবুক আইডিতে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির গাড়ির সামনের অংশে দুটি ডিম নিক্ষেপের পর ডিমের ভাঙ্গা অংশসহ তোলা ছবি ভাইরাল হয়ে পড়ে ফেসবুকে।
মো. আবুল খায়ের নামের একজন তার ফেসবুক আইডিতে ওই ছবি পোস্ট করে লেখেন, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম মিয়ার গাড়িতে পঁচা ডিম নিক্ষেপ করেন সদর উপজেলার আন্ডারচরের সাধারণ জনগণ।
মো. এরশাদ নামের আরেকজন তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির গাড়িতে গু এবং ডিম মেরে বয়কট করলো নোয়াখালীর জনগণ।
এভাবে অসংখ্য ফেসবুক আইডিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদের ব্যবহৃত সরকারি গাড়িটির সামনের গ্লাসে দুটি ডিমের ভাঙ্গা অংশসহ তোলা ছবি পোস্ট করে নানা ধরনের মন্তব্য করা হয়।
খবর নিয়ে জানা গেছে, রোববার দুপুরে সদর উপজেলার পশ্চিম মাইজচরা হাজী আবদুল ওহাব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আন্ডারচর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য আব্দুল হাকিমকে জবাই করে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক শহিদ উল্যা খান সোহেল।
প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে তাঁরা দুপুর আড়াইটার দিকে ওই ইউনিয়নের একরামুল করিম চৌধুরী বাজার সংলগ্ন আওয়ামী লীগ নেতা খুরশিদ আলমের ছেলের বিয়ের বৌ-ভাত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এসময় একরামুল করিম চৌধুরী বাজারে রাখা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির গাড়িতে ডিম নিক্ষেপ করে দুবৃর্ত্তরা। পরে ওই ডিম নিক্ষেপের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। এরপরই তা ভাইরাল হয়ে পড়ে।
আন্ডারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য ফেরদৌস মিয়া বলেন, জনগণ এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটাননি। আমরা যখন খুরশিদের বাড়ি থেকে খেয়ে আসলাম, তখন দেখি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সেলিম সাহেবের গাড়ির সামনের গ্লাসে ডিমের ভিতরের অংশ লেপটে আছে এবং গাড়ির মধ্যে ডিমের খোলস পড়ে আছে। পরে গাড়ির ড্রাইভারসহ আমরা গাড়ির গ্লাস পরিস্কার করে দিই।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের নেতাদের সম্মান করি, তাই রাতে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুবেল ও ফরহাদ নামের দুটি ছেলে ছোট দুজন বাচ্চাকে দিয়ে ডিম কিনে এনে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা সাংগঠনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রব বলেন, বিষয়টি আমরা দেখার পরপরই ঘটনা কারা করেছে, তা চিহিৃত করেছি। একজন হলো ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সেক্রেটারী রুবেল ও আরেকজন এক সময়ে শিবির করতো ফরহাদ। রুবেল ডিম মেরেছে আর ফরহাদ ছবি তুলে ফেসবুকে ভাইরাল করেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
তিনি বলেন, তারা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির গাড়ির পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক মেয়র শহিদুল্যাহ খান সোহেলের গাড়িতেও ডিম মেরেছে। আমরা এটা মেনে নিতে পারছিনা। তাই রাতেই আমাদের লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়ে। আমরা চাই আইনী ভাবে এটার বিচার হোক।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার অভিযুক্ত রুবেল ও ফরহাদের মুঠোফোনে কল করা হলেও ফোন ব্যস্ত পাওয়া যায়। তাই এ বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নোয়াখালী জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সহিদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, এ বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার গাড়িতে কোনো ডিম নিক্ষেপ করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের মুঠোফোনে কল করা হলে অন্য একজন ফোন রিসিভ করে বলেন, স্যার রেস্টে আছেন, কথা বলা যাবে না।