ঢাকা ০৩:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫

চড়া দামেও বিক্রি বেশি দেশি ফলের

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় : ১১:১০:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫ ৬৭ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রমজানে অনেক বেড়ে গেছে দেশি-বিদেশি ফলের চাহিদা। সেহরি ও ইফতারে রোজাদারেরা পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল খেতে পছন্দ করেন। চাহিদা বাড়ায় বাজারে বিভিন্ন ফলের বিক্রিও বেড়েছে। এসময়ে বাজারে বিদেশি ফলের দাম চড়া থাকায় বাড়বাড়ন্ত চাহিদা সামাল দিচ্ছে দেশি ফল। তবে চাহিদা বাড়ায় প্রায় সব ধরনের দেশি ফলও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে একটু বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। এ নিয়ে ক্রেতাদের রয়েছে আপত্তি ও অসন্তোষ। তারপরও বিদেশি ফলের তুলনায় দাম কম হওয়ায় দেশি ফলের দিকেই ঝুকছেন তারা।

আরো পড়ুন: খাদ্য অধিকার ও পুষ্টি নিরাপত্তায় নীতির বাস্তবায়ন

বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরের পর সরেজমিনে রাজধানীর বেইলিরোড, শান্তিনগর ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে থরে থরে সাজানো দেশি ফলের পসরা। রয়েছে পেয়ারা, বড়ই, পেঁপে, আনারস, বেল, কলা। নতুন করে এসেছে তরমুজ ও বাঙ্গি। বাজারে এখন এসব দেশীয় ফলের যেন কোনো কমতি নেই। বিদেশি ফলের মধ্যে আপেল, কমলা ও আঙুরের চাহিদা এখন সবচেয়ে বেশি। তবে তুলনামূলক দাম কিছুটা কম হওয়ায় দেশি ফলের দিকেই ঝুকছেন ক্রেতারা।

 

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি তরমুজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। পিস হিসেবে মাঝারি সাইজের একেকটি তরমুজ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং বড়গুলো ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে।সঙ্গে আকারভেদে বড় বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। ছোটগুলো ১০০ টাকার মধ্যে ও মাঝারিগুলোর দাম পড়ছে দেড়শো টাকা পর্যন্ত।

আরো পড়ুন: স্বামীর ইয়াবা বাজারজাত করতেন স্ত্রী

তরমুজ-বাঙ্গির এখন ভরা মৌসুম না হলেও বাজার ঘুরে তা বোঝার উপায় নেই। এসব আগাম জাতের ফলের রয়েছে প্রচুর সরবরাহ। বিশেষত, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের চাষিরা রমজান ঘিরে আগেভাগেই এবার তরমুজ চাষ করেছেন। তারা এখন ভালো দামও পাচ্ছেন।তবে তরমুজের বর্তমান দাম নিয়ে আপত্তি বেশিরভাগ ক্রেতার। সেগুনবাগিচা বাজারের ক্রেতা মহিবুল বলেন, দেখুন, বাজারে কতরকম ফল। কিন্তু একশো টাকার নিচে কিছু কিনতে পারবেন না। অথচ এগুলো সব দেশীয় ফল। একটা তরমুজ কিনতে পাঁচশো টাকা লাগবে, এটি কি মুখের কথা!

 

তিনি বলেন, বিক্রেতাদের এমন ভাব, মনে হয় এটিই হয়তো তাদের জন্য শেষ রমজান। তারা মনে হয় অতিরিক্ত মুনাফা করার জন্য জীবনে আর কোনো সুযোগ পাবেন না। যে কারণে রমজানে তারা ইচ্ছেমতো ব্যবসা করে নিচ্ছেন। এগুলো সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম ছাড়া আর কিছু নয়।বাজারে পেয়ারা ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এনামুল নামের একজন ক্রেতা বলেন, পরশুদিন ৮০ টাকায় পেয়ারা কিনেছি। আজ আবার ৪০ টাকা বেশি চাচ্ছে। বড় বাজারে গেলে আবার ঠিকই কম দামে মিলবে। আসলে স্থানীয় কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী ফলের দাম ইচ্ছেমতো হাঁকাচ্ছেন। তারা রমজান ঘিরে অতি মুনাফায় মত্ত।

আরো পড়ুন: অতিরিক্ত দামে সয়াবিন তেল বিক্রি…..

বাজারে বড়ইয়ের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়। যা ভরা মৌসুমে ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। একই ভাবে সারা বছর ৬০-৮০ টাকার মধ্যে থাকা পেঁপের দাম এখন ১২০-১৫০ টাকা কেজি।

 

সে তুলনায় কিছুটা সহনীয় আনারসের দাম। ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০ টাকার মধ্যে মিলছে বড় সাইজের আনারস। একই রকম দাম বেলেরও। তবে খুব বড় সাইজের বেল আবার ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।বাজারে সাগর কলা প্রতি ডজন ১৮০ টাকা আর চাম্পা কলার ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এসব কলার দাম ডজনপ্রতি ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

 

বেশ কয়েকজন বিক্রেতা জানিয়েছেন, মূলত বিদেশি ফলের দাম বেশি থাকায় এর প্রভাব পড়েছে দেশি ফলের বাজারে। রমজানে খেজুরের পাশাপাশি মাল্টা, কমলার মতো রসালো ফলের চাহিদা বেশি থাকে। রমজান শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে এসব ফলের দাম বেড়েছে।

 

তারা জানান, রোজার আগে প্রতি কেজি মাল্টায় দাম বেড়েছে ৫০-৮০ টাকা। বাজারে দেশি মাল্টার সরবরাহ কম, তাতে ২২০ টাকা কেজির আমদানি করা মাল্টা কিনতে হচ্ছে ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে। কোথাও কোথাও দাম আরও বেশি চাওয়া হচ্ছে।

 

বাজারে এখন বিদেশি কমলার দাম পড়ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। এ ফলটির দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৭০ টাকা। বাড়তি আপেলের দামও। আপেলের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। এছাড়া সবুজ আপেল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা দরে- জানান বিক্রেতারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক

চড়া দামেও বিক্রি বেশি দেশি ফলের

আপডেট সময় : ১১:১০:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

রমজানে অনেক বেড়ে গেছে দেশি-বিদেশি ফলের চাহিদা। সেহরি ও ইফতারে রোজাদারেরা পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল খেতে পছন্দ করেন। চাহিদা বাড়ায় বাজারে বিভিন্ন ফলের বিক্রিও বেড়েছে। এসময়ে বাজারে বিদেশি ফলের দাম চড়া থাকায় বাড়বাড়ন্ত চাহিদা সামাল দিচ্ছে দেশি ফল। তবে চাহিদা বাড়ায় প্রায় সব ধরনের দেশি ফলও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে একটু বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। এ নিয়ে ক্রেতাদের রয়েছে আপত্তি ও অসন্তোষ। তারপরও বিদেশি ফলের তুলনায় দাম কম হওয়ায় দেশি ফলের দিকেই ঝুকছেন তারা।

আরো পড়ুন: খাদ্য অধিকার ও পুষ্টি নিরাপত্তায় নীতির বাস্তবায়ন

বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরের পর সরেজমিনে রাজধানীর বেইলিরোড, শান্তিনগর ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে থরে থরে সাজানো দেশি ফলের পসরা। রয়েছে পেয়ারা, বড়ই, পেঁপে, আনারস, বেল, কলা। নতুন করে এসেছে তরমুজ ও বাঙ্গি। বাজারে এখন এসব দেশীয় ফলের যেন কোনো কমতি নেই। বিদেশি ফলের মধ্যে আপেল, কমলা ও আঙুরের চাহিদা এখন সবচেয়ে বেশি। তবে তুলনামূলক দাম কিছুটা কম হওয়ায় দেশি ফলের দিকেই ঝুকছেন ক্রেতারা।

 

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি তরমুজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। পিস হিসেবে মাঝারি সাইজের একেকটি তরমুজ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং বড়গুলো ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে।সঙ্গে আকারভেদে বড় বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। ছোটগুলো ১০০ টাকার মধ্যে ও মাঝারিগুলোর দাম পড়ছে দেড়শো টাকা পর্যন্ত।

আরো পড়ুন: স্বামীর ইয়াবা বাজারজাত করতেন স্ত্রী

তরমুজ-বাঙ্গির এখন ভরা মৌসুম না হলেও বাজার ঘুরে তা বোঝার উপায় নেই। এসব আগাম জাতের ফলের রয়েছে প্রচুর সরবরাহ। বিশেষত, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের চাষিরা রমজান ঘিরে আগেভাগেই এবার তরমুজ চাষ করেছেন। তারা এখন ভালো দামও পাচ্ছেন।তবে তরমুজের বর্তমান দাম নিয়ে আপত্তি বেশিরভাগ ক্রেতার। সেগুনবাগিচা বাজারের ক্রেতা মহিবুল বলেন, দেখুন, বাজারে কতরকম ফল। কিন্তু একশো টাকার নিচে কিছু কিনতে পারবেন না। অথচ এগুলো সব দেশীয় ফল। একটা তরমুজ কিনতে পাঁচশো টাকা লাগবে, এটি কি মুখের কথা!

 

তিনি বলেন, বিক্রেতাদের এমন ভাব, মনে হয় এটিই হয়তো তাদের জন্য শেষ রমজান। তারা মনে হয় অতিরিক্ত মুনাফা করার জন্য জীবনে আর কোনো সুযোগ পাবেন না। যে কারণে রমজানে তারা ইচ্ছেমতো ব্যবসা করে নিচ্ছেন। এগুলো সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম ছাড়া আর কিছু নয়।বাজারে পেয়ারা ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এনামুল নামের একজন ক্রেতা বলেন, পরশুদিন ৮০ টাকায় পেয়ারা কিনেছি। আজ আবার ৪০ টাকা বেশি চাচ্ছে। বড় বাজারে গেলে আবার ঠিকই কম দামে মিলবে। আসলে স্থানীয় কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী ফলের দাম ইচ্ছেমতো হাঁকাচ্ছেন। তারা রমজান ঘিরে অতি মুনাফায় মত্ত।

আরো পড়ুন: অতিরিক্ত দামে সয়াবিন তেল বিক্রি…..

বাজারে বড়ইয়ের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়। যা ভরা মৌসুমে ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। একই ভাবে সারা বছর ৬০-৮০ টাকার মধ্যে থাকা পেঁপের দাম এখন ১২০-১৫০ টাকা কেজি।

 

সে তুলনায় কিছুটা সহনীয় আনারসের দাম। ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০ টাকার মধ্যে মিলছে বড় সাইজের আনারস। একই রকম দাম বেলেরও। তবে খুব বড় সাইজের বেল আবার ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।বাজারে সাগর কলা প্রতি ডজন ১৮০ টাকা আর চাম্পা কলার ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এসব কলার দাম ডজনপ্রতি ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

 

বেশ কয়েকজন বিক্রেতা জানিয়েছেন, মূলত বিদেশি ফলের দাম বেশি থাকায় এর প্রভাব পড়েছে দেশি ফলের বাজারে। রমজানে খেজুরের পাশাপাশি মাল্টা, কমলার মতো রসালো ফলের চাহিদা বেশি থাকে। রমজান শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে এসব ফলের দাম বেড়েছে।

 

তারা জানান, রোজার আগে প্রতি কেজি মাল্টায় দাম বেড়েছে ৫০-৮০ টাকা। বাজারে দেশি মাল্টার সরবরাহ কম, তাতে ২২০ টাকা কেজির আমদানি করা মাল্টা কিনতে হচ্ছে ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে। কোথাও কোথাও দাম আরও বেশি চাওয়া হচ্ছে।

 

বাজারে এখন বিদেশি কমলার দাম পড়ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। এ ফলটির দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৭০ টাকা। বাড়তি আপেলের দামও। আপেলের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। এছাড়া সবুজ আপেল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা দরে- জানান বিক্রেতারা।