ঢাকা ১০:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫

বাইসাইকেল হতে পারে কভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে আপনার সঙ্গী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:০৮:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুন ২০২০ ২৭৬ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডেস্ক রিপোর্ট

বর্তমান বিশ্ব কভিড-১৯ মহামারির ছোবলে অনেকটাই অচল হয়ে পড়েছে। লকডাউনের ফলে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বাংলাদেশেও দিন দিন সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুহার দুটোই বেড়ে চলেছে সমানতালে। ঠিক এমন সময় লকডাউন শিথিল করে দেওয়া হয়েছে আমাদের দেশে। খুলে দেওয়া হয়েছে প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে মানুষের কাজে যোগ দেওয়ার তাগিদও বেড়ে গেছে। কারণ বেশিরভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানই কাজে যোগদান না করলে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দিচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষ কাজে চাকরি বাঁচানোর জন্য কাজে যোগদান করতে বাধ্য হচ্ছে। গত ৩১ মে থেকে লকডাউন শিথিল করা হয় এরপর থেকে দলে দলে কর্মজীবী মানুষ ছুটছে কর্মস্থলে। কর্মস্থলে যোগদানের জন্য চাই বাহন কিন্তু পাবলিক পরিবহন ছাড়া তো আর কোনো সুযোগ নেই। তাই একরকম বাধ্য হয়েই কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে। গত দু’দিনের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় বেশিরভাগ মানুষই সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই যাতায়াত করছেন। কেউ মাস্ক পরেছেন তো কেউ পরেননি। কেউবা আবার ভিড় ঠেলে বাসে উঠছেন। যাত্রীরা যেমন স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, তেমনি গাড়ির ড্রাইভাররাও মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। ফলে সবাই পড়ছেন করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে। আবার হয়তোবা আক্রান্ত হয়েও যাচ্ছেন অনেকে। এদিকে লকডাউন উঠানোর ফলে প্রতিদিন অফিসে যেতে হচ্ছে কিন্তু গণপরিবহনে অফিসে যেতে হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে; কারণ এখানে সামাজিক দূরত্ব কোনোভাবেই নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অর্থাৎ সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। আমরা কেউই সুরক্ষিত থাকতে পারছি না। এই গুরুতর সমস্যাটির সমাধান হতে পারে বাইসাইকেল। বাইসাইকেল সহজলভ্য, নির্ভরযোগ্য, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পরিবহন মাধ্যম। এটি যেমন আপনার শরীরকে রাখবে ফিট, তেমনি করোনা সংক্রমণ থেকেও বাঁচাবে বাইসাইকেল। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাইসাইকেল ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলোÑএক. সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সহায়তা করে; দুই. করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়; তিন. যাতায়াতের সহজলভ্য ও টেকসই মাধ্যম বাইসাইকেল; চার. প্রতিদিনের যাতায়াত ভাড়া সাশ্রয় করতে সাহায্য করে; পাঁচ. এটি একটি নিরাপদ বাহন; পাঁচ. বাইসাইকেল সম্পূর্ণরূপে পরিবেশবান্ধব; ছয়. এটি ভিড় এড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে সাহায্য করে।

বাইসাইকেল চালানোর অনেকগুলো শারীরিক উপকারিতাও রয়েছে। যেমনÑএক. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এটি হƒদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস প্রভৃতি অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। দুই. মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, যা করোনাকালীন সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ; তিন. বাইসাইকেল চালানোর ফলে দেহে প্রচুর ক্যালরি বার্ন হয়, যা অতিরিক্ত ওজন কমাতে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ; চার. বাইসাইকেল চালালে শরীরের পেশিগুলো সুগঠিত হয়; পাঁচ. ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখে যেটি করোনার সময়ে অত্যন্ত জরুরি; ছয়. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে সাহায্য করে; সাত. দেহে এনজাইমের কার্যকলাপ বাড়ায়।

বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেকে এবং অন্যকে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে হলে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় বাইসাইকেল ব্যবহারের বিকল্প নেই। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে ও সংক্রমণ রোধে বাইসাইকেল হওয়া উচিত একমাত্র বাহন। বাইসাইকেল যেমনি পরিবেশবান্ধব, তেমনি এটি চালালে আপনার শরীর থাকবে সুস্থ ও রোগমুক্ত। তাই এ বছর করোনাকালীন ‘বিশ্ব বাইসাইকেল’ দিবসে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে বাইসাইকেল হোক আপনি নিত্যদিনের চলার পথের সঙ্গী। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করুন।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র: শেয়ার বীজ

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

বাইসাইকেল হতে পারে কভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে আপনার সঙ্গী

আপডেট সময় : ০৯:০৮:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুন ২০২০

ডেস্ক রিপোর্ট

বর্তমান বিশ্ব কভিড-১৯ মহামারির ছোবলে অনেকটাই অচল হয়ে পড়েছে। লকডাউনের ফলে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বাংলাদেশেও দিন দিন সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুহার দুটোই বেড়ে চলেছে সমানতালে। ঠিক এমন সময় লকডাউন শিথিল করে দেওয়া হয়েছে আমাদের দেশে। খুলে দেওয়া হয়েছে প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে মানুষের কাজে যোগ দেওয়ার তাগিদও বেড়ে গেছে। কারণ বেশিরভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানই কাজে যোগদান না করলে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দিচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষ কাজে চাকরি বাঁচানোর জন্য কাজে যোগদান করতে বাধ্য হচ্ছে। গত ৩১ মে থেকে লকডাউন শিথিল করা হয় এরপর থেকে দলে দলে কর্মজীবী মানুষ ছুটছে কর্মস্থলে। কর্মস্থলে যোগদানের জন্য চাই বাহন কিন্তু পাবলিক পরিবহন ছাড়া তো আর কোনো সুযোগ নেই। তাই একরকম বাধ্য হয়েই কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে। গত দু’দিনের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় বেশিরভাগ মানুষই সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই যাতায়াত করছেন। কেউ মাস্ক পরেছেন তো কেউ পরেননি। কেউবা আবার ভিড় ঠেলে বাসে উঠছেন। যাত্রীরা যেমন স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, তেমনি গাড়ির ড্রাইভাররাও মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। ফলে সবাই পড়ছেন করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে। আবার হয়তোবা আক্রান্ত হয়েও যাচ্ছেন অনেকে। এদিকে লকডাউন উঠানোর ফলে প্রতিদিন অফিসে যেতে হচ্ছে কিন্তু গণপরিবহনে অফিসে যেতে হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে; কারণ এখানে সামাজিক দূরত্ব কোনোভাবেই নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অর্থাৎ সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। আমরা কেউই সুরক্ষিত থাকতে পারছি না। এই গুরুতর সমস্যাটির সমাধান হতে পারে বাইসাইকেল। বাইসাইকেল সহজলভ্য, নির্ভরযোগ্য, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পরিবহন মাধ্যম। এটি যেমন আপনার শরীরকে রাখবে ফিট, তেমনি করোনা সংক্রমণ থেকেও বাঁচাবে বাইসাইকেল। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাইসাইকেল ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলোÑএক. সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সহায়তা করে; দুই. করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়; তিন. যাতায়াতের সহজলভ্য ও টেকসই মাধ্যম বাইসাইকেল; চার. প্রতিদিনের যাতায়াত ভাড়া সাশ্রয় করতে সাহায্য করে; পাঁচ. এটি একটি নিরাপদ বাহন; পাঁচ. বাইসাইকেল সম্পূর্ণরূপে পরিবেশবান্ধব; ছয়. এটি ভিড় এড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে সাহায্য করে।

বাইসাইকেল চালানোর অনেকগুলো শারীরিক উপকারিতাও রয়েছে। যেমনÑএক. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এটি হƒদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস প্রভৃতি অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। দুই. মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, যা করোনাকালীন সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ; তিন. বাইসাইকেল চালানোর ফলে দেহে প্রচুর ক্যালরি বার্ন হয়, যা অতিরিক্ত ওজন কমাতে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ; চার. বাইসাইকেল চালালে শরীরের পেশিগুলো সুগঠিত হয়; পাঁচ. ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখে যেটি করোনার সময়ে অত্যন্ত জরুরি; ছয়. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে সাহায্য করে; সাত. দেহে এনজাইমের কার্যকলাপ বাড়ায়।

বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেকে এবং অন্যকে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে হলে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় বাইসাইকেল ব্যবহারের বিকল্প নেই। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে ও সংক্রমণ রোধে বাইসাইকেল হওয়া উচিত একমাত্র বাহন। বাইসাইকেল যেমনি পরিবেশবান্ধব, তেমনি এটি চালালে আপনার শরীর থাকবে সুস্থ ও রোগমুক্ত। তাই এ বছর করোনাকালীন ‘বিশ্ব বাইসাইকেল’ দিবসে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে বাইসাইকেল হোক আপনি নিত্যদিনের চলার পথের সঙ্গী। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করুন।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র: শেয়ার বীজ