ঢাকা ০৪:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

কিংবদন্তি পপ সম্রাট আজম খানের জন্মদিন আজ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:১২:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ৪০৮৪ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কিংবদন্তি পপ সম্রাট আজম খানের জন্মদিন আজ। এদিনে অর্থাৎ ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।
আজম খান মাত্র ২১ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ওই সময় তার গাওয়া গান প্রশিক্ষণ শিবিরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা জোগাত।
তিনি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পর কুমিল্লার সালদায় প্রথম সরাসরি যুদ্ধ করেন। যুদ্ধে দুই নম্বর সেক্টরের একটা সেকশনের ইনচার্জ ছিলেন তিনি। এসময় ঢাকা ও এর আশপাশে বেশ কয়েকটি গেরিলা আক্রমণে অংশ নেন। বিশেষত যাত্রাবাড়ী-গুলশান এলাকার গেরিলা অপারেশনগুলো পরিচালনার দায়িত্ব পান। তার নেতৃত্বে সংঘটিত হয় ‘অপারেশন তিতাস’। ১৯৭১ সালের পর তার ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’ এবং আখন্দ ভ্রাতৃদ্বয় (লাকী আখন্দ ও হ্যাপী আখন্দ) দেশব্যাপী সঙ্গীতের জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বন্ধু নিলু আর মনসুর গিটারে, সাদেক ড্রামে, নিজেকে প্রধান ভোকাল করে করলেন অনুষ্ঠান।
১৯৭২ সালে বিটিভিতে ‘এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ ও ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি সরাসরি প্রচার হয়। ব্যাপক প্রশংসা ও তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দিল এ গান দুটি। দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়ে গেল তাদের দল। ১৯৭৪-৭৫ সালের দিকে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘রেললাইনের ঐ বস্তিতে’ শিরোনামের গান গেয়ে হইচই ফেলে দেন।
আজম খান ক্রিকেটারও ছিলেন। এছাড়া ১৯৮৬ সালে ‘কালা বাউল’ নামে একটি নাটকে কালা বাউলের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। ‘গডফাদার’ নামক একটি বাংলা সিনেমায় ভিলেনের ভূমিকায় অভিনয় করেন ২০০৩ সালে। বিজ্ঞাপন জগতে তিনি পদার্পণ করেন একই বছরে একটি এনার্জি ড্রিংকসের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে আরও অনেক বিজ্ঞাপনে কাজ করেন তিনি।
দেশজ লোকসঙ্গীত, পল্লীগীতি, আধুনিক অথবা সমাজ সচেতন গানের সঙ্গে পপ শৈলীর মিশ্রণ দিয়ে গানের এক বিরাট সম্ভার রেখে গিয়েছেন তিনি। আজম খান ছিলেন একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। তার পপ আঙ্গিকের সঙ্গীত বাংলাদেশের যুব সমাজের কাছে পেয়েছে বিপুল সমাদর।
বাংলাদেশেই নয়, উপমহাদেশেও তিনি পেয়েছেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তার বর্ণাঢ্য সঙ্গীত জীবনে হলিউড থেকে ডিসকো রেকর্ডিংয়ের সৌজন্যে ১৯৯৩ সালে ‘বেস্ট পপ সিঙ্গার অ্যাওয়ার্ড’, ‘টেলিভিশন দর্শক পুরস্কার ২০০২’, ‘কোকাকোলা গোল্ড বটল’সহ ‘লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার পেয়েছেন।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দুরারোগ্য ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে ২০১১ সালের ৫ জুন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা পপ সঙ্গীতের এক পথপ্রদর্শক আজম খান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

কিংবদন্তি পপ সম্রাট আজম খানের জন্মদিন আজ

আপডেট সময় : ১০:১২:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

কিংবদন্তি পপ সম্রাট আজম খানের জন্মদিন আজ। এদিনে অর্থাৎ ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।
আজম খান মাত্র ২১ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ওই সময় তার গাওয়া গান প্রশিক্ষণ শিবিরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা জোগাত।
তিনি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পর কুমিল্লার সালদায় প্রথম সরাসরি যুদ্ধ করেন। যুদ্ধে দুই নম্বর সেক্টরের একটা সেকশনের ইনচার্জ ছিলেন তিনি। এসময় ঢাকা ও এর আশপাশে বেশ কয়েকটি গেরিলা আক্রমণে অংশ নেন। বিশেষত যাত্রাবাড়ী-গুলশান এলাকার গেরিলা অপারেশনগুলো পরিচালনার দায়িত্ব পান। তার নেতৃত্বে সংঘটিত হয় ‘অপারেশন তিতাস’। ১৯৭১ সালের পর তার ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’ এবং আখন্দ ভ্রাতৃদ্বয় (লাকী আখন্দ ও হ্যাপী আখন্দ) দেশব্যাপী সঙ্গীতের জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বন্ধু নিলু আর মনসুর গিটারে, সাদেক ড্রামে, নিজেকে প্রধান ভোকাল করে করলেন অনুষ্ঠান।
১৯৭২ সালে বিটিভিতে ‘এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ ও ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি সরাসরি প্রচার হয়। ব্যাপক প্রশংসা ও তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দিল এ গান দুটি। দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়ে গেল তাদের দল। ১৯৭৪-৭৫ সালের দিকে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘রেললাইনের ঐ বস্তিতে’ শিরোনামের গান গেয়ে হইচই ফেলে দেন।
আজম খান ক্রিকেটারও ছিলেন। এছাড়া ১৯৮৬ সালে ‘কালা বাউল’ নামে একটি নাটকে কালা বাউলের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। ‘গডফাদার’ নামক একটি বাংলা সিনেমায় ভিলেনের ভূমিকায় অভিনয় করেন ২০০৩ সালে। বিজ্ঞাপন জগতে তিনি পদার্পণ করেন একই বছরে একটি এনার্জি ড্রিংকসের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে আরও অনেক বিজ্ঞাপনে কাজ করেন তিনি।
দেশজ লোকসঙ্গীত, পল্লীগীতি, আধুনিক অথবা সমাজ সচেতন গানের সঙ্গে পপ শৈলীর মিশ্রণ দিয়ে গানের এক বিরাট সম্ভার রেখে গিয়েছেন তিনি। আজম খান ছিলেন একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। তার পপ আঙ্গিকের সঙ্গীত বাংলাদেশের যুব সমাজের কাছে পেয়েছে বিপুল সমাদর।
বাংলাদেশেই নয়, উপমহাদেশেও তিনি পেয়েছেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তার বর্ণাঢ্য সঙ্গীত জীবনে হলিউড থেকে ডিসকো রেকর্ডিংয়ের সৌজন্যে ১৯৯৩ সালে ‘বেস্ট পপ সিঙ্গার অ্যাওয়ার্ড’, ‘টেলিভিশন দর্শক পুরস্কার ২০০২’, ‘কোকাকোলা গোল্ড বটল’সহ ‘লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার পেয়েছেন।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দুরারোগ্য ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে ২০১১ সালের ৫ জুন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা পপ সঙ্গীতের এক পথপ্রদর্শক আজম খান।