ঢাকা ০৭:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

সোনাইমুড়ীতে হাসিলের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে গুলিবিদ্ধ-১

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২১:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ জুলাই ২০২২ ১০২২৫ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

 

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্থাপিত গুরু বাজারের হাসিলের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এক ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় আহত হয়েছেন আরও ৫ জন।

 

গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার নাম রিফাতুল ইসলাম রিফাত (২৩)। সে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য এবং সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের নোয়া বাড়ির মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ রিফাতকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 

রোববার (১০ জুলাই) রাত ৯টার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের মদিনা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

 

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, সোনাইমুড়ী পৌরসভার হাইস্কুল মাঠে ঈদুল আজহা উপলক্ষে একটি গরু বাজার সরকারি ভাবে ইজারা দেওয়া হয়। ওই গরু বাজারের হাসিল আদায়ের টাকা সরকার দলীয় নেতাকর্মিদের সমন্বয় করে শিডিউল ক্রয়কারীদের মধ্যে বিতরণ করার সিন্ধান্ত নেয় স্থানীয় নেতারা। এর মধ্যে সোনাইমুড়ী পৌরসভার বানুয়া গ্রামে সরকার দলীয় নেতাকর্মিকে হাসিলের ৪০ পার্সেন্ট, নাওতলা গ্রামের নেতাকর্মিকে ২০ পার্সেন্ট এবং পৌরসভার ৫-৬নং ওয়ার্ডের নেতাকর্মিকে হাসিলের ৪০ পার্সেন্টের টাকা ভাগ করে দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে আমাকে হাসিল আদায়ের ২০ পার্সেন্ট টাকা ও রাসেলদের লোকজনকে ২০ পার্সেন্টের টাকা দেওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার স্থানীয় এমপির অনুসারী নেতারা হাসিল আদায়ের টাকা ভাগ করে রাসেলের কাছে দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে রাসেল টাকা অর্ধাঅর্ধি ভাগ হবে না ঘোষণা দিলে বিরোধ দেখা দেয়।

 

জুয়েল অভিযোগ করে আরো বলেন, এ নিয়ে শুক্রবার রাতে আমার সাথে রাসেলের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। পরের দিন জানতে পারি যাদের নামে সিডিআর ফরম কেনা হয়েছে তাদের কে ফরম প্রতি ৪০ হাজার টাকা করে দিয়ে দেওয়া হয়। যে সব শিডিউল বিক্রি হয়েছে তার ৫টি রাসেলদের লোকজন ক্রয় করে। তারা স্থানীয় এমপির অনুসারী হিসেবে পরিচিত। শনিবার সন্ধ্যায় তারা আমাকে বাইপাস এলাকার একটি বাড়িতে ডেকে নেয়। একপর্যায়ে ওই স্থানে তারা আমার ২জন লোককে মারধর করে। এরপর রোববার বিকেলের দিকে রাসেল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা শিপন নামে আমাদের আরেক অনুসারীকে মারধর করে। ওই সময় আমরা প্রতিরোধ করতে গেলে দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মারধরের ঘটনা ঘটে। এরপর রোববার রাত ৯টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মি রিফাত তার দোকান থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে মদিনা ভবনের সামনে তাকে গতিরোধ করে রাসেল, জয়নালসহ তাদের ১০-১৫জন সাঙ্গপাঙ্গ তার ওপর হামলা চালায়। শেষে রাসেলের নির্দেশে জয়নাল নামে এক যুবক রিফাতের পায়ে গুলি চালায়।

 

সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শ্যামল উদ্দিন জানান, অভিযুক্ত রাসেল বছর খানেক আগে জামায়াত শিবির থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করে। কিছু দিন আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় বলেও জানান তিনি। গরু বাজারের হাসিলের টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে রিফাতকে গুলি করে রাসেল ও তার সহযোগী বহিরাগত সন্ত্রাসীরা।

 

নোয়াখালী-১ আসনের (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম জানান, অভিযুক্ত যুবক তার অনুসারী নয়। তাকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রিফাত নামে এক যুবকের পায়ের পাতায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। গুলির আঘাতের চিহৃ কিনা তা ডাক্তারি রিপোর্ট হাতে পেলে বলা যাবে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

সোনাইমুড়ীতে হাসিলের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে গুলিবিদ্ধ-১

আপডেট সময় : ১১:২১:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ জুলাই ২০২২

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

 

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্থাপিত গুরু বাজারের হাসিলের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এক ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় আহত হয়েছেন আরও ৫ জন।

 

গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার নাম রিফাতুল ইসলাম রিফাত (২৩)। সে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য এবং সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের নোয়া বাড়ির মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ রিফাতকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 

রোববার (১০ জুলাই) রাত ৯টার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের মদিনা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

 

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, সোনাইমুড়ী পৌরসভার হাইস্কুল মাঠে ঈদুল আজহা উপলক্ষে একটি গরু বাজার সরকারি ভাবে ইজারা দেওয়া হয়। ওই গরু বাজারের হাসিল আদায়ের টাকা সরকার দলীয় নেতাকর্মিদের সমন্বয় করে শিডিউল ক্রয়কারীদের মধ্যে বিতরণ করার সিন্ধান্ত নেয় স্থানীয় নেতারা। এর মধ্যে সোনাইমুড়ী পৌরসভার বানুয়া গ্রামে সরকার দলীয় নেতাকর্মিকে হাসিলের ৪০ পার্সেন্ট, নাওতলা গ্রামের নেতাকর্মিকে ২০ পার্সেন্ট এবং পৌরসভার ৫-৬নং ওয়ার্ডের নেতাকর্মিকে হাসিলের ৪০ পার্সেন্টের টাকা ভাগ করে দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে আমাকে হাসিল আদায়ের ২০ পার্সেন্ট টাকা ও রাসেলদের লোকজনকে ২০ পার্সেন্টের টাকা দেওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার স্থানীয় এমপির অনুসারী নেতারা হাসিল আদায়ের টাকা ভাগ করে রাসেলের কাছে দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে রাসেল টাকা অর্ধাঅর্ধি ভাগ হবে না ঘোষণা দিলে বিরোধ দেখা দেয়।

 

জুয়েল অভিযোগ করে আরো বলেন, এ নিয়ে শুক্রবার রাতে আমার সাথে রাসেলের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। পরের দিন জানতে পারি যাদের নামে সিডিআর ফরম কেনা হয়েছে তাদের কে ফরম প্রতি ৪০ হাজার টাকা করে দিয়ে দেওয়া হয়। যে সব শিডিউল বিক্রি হয়েছে তার ৫টি রাসেলদের লোকজন ক্রয় করে। তারা স্থানীয় এমপির অনুসারী হিসেবে পরিচিত। শনিবার সন্ধ্যায় তারা আমাকে বাইপাস এলাকার একটি বাড়িতে ডেকে নেয়। একপর্যায়ে ওই স্থানে তারা আমার ২জন লোককে মারধর করে। এরপর রোববার বিকেলের দিকে রাসেল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা শিপন নামে আমাদের আরেক অনুসারীকে মারধর করে। ওই সময় আমরা প্রতিরোধ করতে গেলে দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মারধরের ঘটনা ঘটে। এরপর রোববার রাত ৯টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মি রিফাত তার দোকান থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে মদিনা ভবনের সামনে তাকে গতিরোধ করে রাসেল, জয়নালসহ তাদের ১০-১৫জন সাঙ্গপাঙ্গ তার ওপর হামলা চালায়। শেষে রাসেলের নির্দেশে জয়নাল নামে এক যুবক রিফাতের পায়ে গুলি চালায়।

 

সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শ্যামল উদ্দিন জানান, অভিযুক্ত রাসেল বছর খানেক আগে জামায়াত শিবির থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করে। কিছু দিন আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় বলেও জানান তিনি। গরু বাজারের হাসিলের টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে রিফাতকে গুলি করে রাসেল ও তার সহযোগী বহিরাগত সন্ত্রাসীরা।

 

নোয়াখালী-১ আসনের (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম জানান, অভিযুক্ত যুবক তার অনুসারী নয়। তাকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রিফাত নামে এক যুবকের পায়ের পাতায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। গুলির আঘাতের চিহৃ কিনা তা ডাক্তারি রিপোর্ট হাতে পেলে বলা যাবে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।