আজ বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালে এই দিনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বাংলা চলচ্চিত্রের এই কিংবদন্তি।
কখনও নায়ক, কখনও বা খলনায়ক। আবার কেউ বলেন অভিনেতাদের অভিনেতা তিনি। কারো কাছে আবার আদর্শ। অর্থনীতির ছাত্র হুমায়ুন ফরীদি দাপিয়ে বেড়িয়েছেন অভিনয় জগতের প্রত্যেকটি আঙিনায়।
একুশে পদকসহ পেয়েছেন অনেক সম্মাননা। বীর মুক্তিযোদ্ধা, অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির আজ ১০ম মৃত্যু বার্ষিকী।
আশি ও নব্বইয়ের দশকে যে কজন অভিনয় শিল্পী মঞ্চ ও টিভি নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন হুমায়ুন ফরীদি ছিলেন তাদের অন্যতম। জীবদ্দশায় তিন দশকেরও বেশি সময় মঞ্চ, টিভি নাটক, চলচ্চিত্রে সমান দাপটের সঙ্গে অভিনয়ের মাধ্যমে রঙ ছড়িয়ে গেছেন নন্দিত ও বরেণ্য এই অভিনেতা।
১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্গানিক কেমিস্ট্রিতে ভর্তি হলেও মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ায় হাতে তুলে নেন রাইফেল। রণাঙ্গন থেকে ফিরে শুরু করেন শিক্ষাজীবন। ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে। অভিনয়ের টানে সেলিম আল দীনের সাহচর্য নেন হুমায়ুন।
মঞ্চ কাঁপিয়ে ‘নিখোঁজ সংবাদ’ নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশনে অভিষেক হয় তার। কিন্তু কালজয়ী ‘সংশপ্তক’ নাটকের কান কাটা রমজান চরিত্র দিয়ে তখনই জয় করে নেন বহু দর্শকের মন।
বহু সিনেমায় অভিনয় করে তিনি হয়ে আছেন সবার আদর্শ। ২০০৪ সালে ‘মাতৃত্ব’ ছবির জন্য তিনি পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। জীবদ্দশায় একুশে পদক না পেলেও ২০১৮ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন শক্তিমান এই অভিনেতা।
নেতিবাচক চরিত্রের জন্য বিখ্যাত এই অভিনেতা ইতিবাচক চরিত্র দিয়েও ছিলেন সমানভাবে সমাদৃত।
তবে ব্যক্তি হুমায়ুন ফরীদির জীবন খুব একটা সুখকর ছিল না। আশির দশকের শুরুতে প্রথম বিয়ে হলেও টেকেনি খুব বেশিদিন। পরবর্তী সময় অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তফার সঙ্গে সংসারজীবন ভাগাভাগি করলেও তার পরিণতিও ছিল প্রথমটার মতোই। তাই বাকি জীবন নিঃসঙ্গ কাটান এই মহাখলনায়ক।