ঢাকা ০২:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

না ফেরার দেশে প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বাপ্পী লাহিড়ী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ২২৭৫ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারতীয় সংগীতাঙ্গনে আরও এক জ্বলজ্বলে নক্ষত্রের পতন হলো। লতা মঙ্গেশকর ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই এবার না ফেরার পথে যাত্রা করলেন উপমহাদেশের আরেক প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ি।
মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার সূত্রে জানা গেছে। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।

গত বছর এপ্রিল মাসে তাঁর করোনা ধরা পড়ে। সেই সময় মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। কিছুদিন পর সুস্থ হয়ে বাড়িও ফেরেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ)’-তে আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত প্রায় একমাস তিনি বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার জন্য হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সোমবারই বাড়ি ফেরেন বাপ্পি। কিন্তু মঙ্গলবারই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরিবারিক চিকিৎসক তাঁকে ফের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে সেই হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়।
অসংখ্য বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেওয়া বাপ্পি লাহিড়ি একাধারে ছিলেন গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক। সংগীতাঙ্গনে তিনি বাপ্পি-দা নামেও সমধিক পরিচিত ছিলেন।
১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে সমৃদ্ধ এক পরিবারে জন্ম বাপ্পি লাহিড়ির। তার ডাক নাম ছিল আলোকেশ বাপ্পী লাহিড়ি। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ছিলেন বাংলা সঙ্গীতের জনপ্রিয় গায়ক এবং মা বাঁশরী লাহিড়ি ছিলেন একজন সঙ্গীতজ্ঞ ও গায়িকা। বাবা-মায়ের সান্নিধ্যে থেকেই সংগীতকলায় হাতেখড়ি বাপ্পির। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী চিত্রাণী, কন্যা রিমা এবং পুত্র বাপ্পা ছাড়াও অসংখ্য ভক্ত-গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

বাপ্পি লাহিড়ি পোশাকের সঙ্গে স্বর্ণের অলঙ্কার ও কালো চশমা পরতে খুব পছন্দ করতেন। কালজয়ী সংগীতশিল্পী কিশোর কুমার সম্পর্কে তার মামা।
হিন্দিতে ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’ প্রভৃতি ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন অসংখ্য গান। ২০২০ সালে তার শেষ গান ছিল ‘বাগি- ৩’ ছবির জন্য। তিনি বেশ কিছু গজলও লিখেছেন।
সংগীতের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের একটা পর্যায়ে বাপ্পি লাহিড়ি রাজনীতিতে পা রাখেন। যোগ দেন বিজেপিতে। পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুর কেন্দ্র থেকে ভোটেও লড়েন। যদিও তিনি রাজনীতিতে কখনোই স্বচ্ছন্দ ছিলেন না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

না ফেরার দেশে প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বাপ্পী লাহিড়ী

আপডেট সময় : ১১:৫৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

ভারতীয় সংগীতাঙ্গনে আরও এক জ্বলজ্বলে নক্ষত্রের পতন হলো। লতা মঙ্গেশকর ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই এবার না ফেরার পথে যাত্রা করলেন উপমহাদেশের আরেক প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ি।
মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার সূত্রে জানা গেছে। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।

গত বছর এপ্রিল মাসে তাঁর করোনা ধরা পড়ে। সেই সময় মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। কিছুদিন পর সুস্থ হয়ে বাড়িও ফেরেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ)’-তে আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত প্রায় একমাস তিনি বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার জন্য হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সোমবারই বাড়ি ফেরেন বাপ্পি। কিন্তু মঙ্গলবারই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরিবারিক চিকিৎসক তাঁকে ফের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে সেই হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়।
অসংখ্য বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেওয়া বাপ্পি লাহিড়ি একাধারে ছিলেন গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক। সংগীতাঙ্গনে তিনি বাপ্পি-দা নামেও সমধিক পরিচিত ছিলেন।
১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে সমৃদ্ধ এক পরিবারে জন্ম বাপ্পি লাহিড়ির। তার ডাক নাম ছিল আলোকেশ বাপ্পী লাহিড়ি। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ছিলেন বাংলা সঙ্গীতের জনপ্রিয় গায়ক এবং মা বাঁশরী লাহিড়ি ছিলেন একজন সঙ্গীতজ্ঞ ও গায়িকা। বাবা-মায়ের সান্নিধ্যে থেকেই সংগীতকলায় হাতেখড়ি বাপ্পির। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী চিত্রাণী, কন্যা রিমা এবং পুত্র বাপ্পা ছাড়াও অসংখ্য ভক্ত-গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

বাপ্পি লাহিড়ি পোশাকের সঙ্গে স্বর্ণের অলঙ্কার ও কালো চশমা পরতে খুব পছন্দ করতেন। কালজয়ী সংগীতশিল্পী কিশোর কুমার সম্পর্কে তার মামা।
হিন্দিতে ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’ প্রভৃতি ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন অসংখ্য গান। ২০২০ সালে তার শেষ গান ছিল ‘বাগি- ৩’ ছবির জন্য। তিনি বেশ কিছু গজলও লিখেছেন।
সংগীতের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের একটা পর্যায়ে বাপ্পি লাহিড়ি রাজনীতিতে পা রাখেন। যোগ দেন বিজেপিতে। পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুর কেন্দ্র থেকে ভোটেও লড়েন। যদিও তিনি রাজনীতিতে কখনোই স্বচ্ছন্দ ছিলেন না।