ঢাকা ০৮:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

করোনাভাইরাস: থামছে না মৃত্যুর মিছিল, ১৫ দিনেই ঝরল ৫৪ শতাংশের প্রাণ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:২২:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মে ২০২০ ৩১৯ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এনকে বার্তা ডেস্ক::

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। সংক্রমণের শুরুর দিকে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। কিন্তু চলতি মে মাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনার রোগী শনাক্ত এবং ১৭ মার্চ প্রথম রোগীর মৃত্যু হয়। ২১ মে পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে সর্বমোট ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত এবং সর্বমোট ৪৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গত ১৫ দিনে অর্থাৎ ৭ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২৩৩ রোগী অর্থাৎ ৫৪ শতাংশ রোগীর জীবনপ্রদীপ নিভে যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ২৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। তারা বলছেন, বর্তমানে ধারাবাহিকভাবে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।

করোনায় আক্রান্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে দেখা গেছে, একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংক্রমণের ও মৃত্যুর হার সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে, এরপর ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে। বাংলাদেশে এখন সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে বলে তাদের ধারণা।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের প্রধান অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, আগামী ১৫ দিনে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাজধানী ঢাকা তথা ঢাকা বিভাগ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা ৪৩২ জনের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ১৬১ জন, ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে ১৩০ জন অর্থাৎ ঢাকা বিভাগে মোট মৃতের সংখ্যা ২৯১। মৃতের হার ৬৭ শতাংশ। এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯০ জন, রাজশাহী বিভাগে তিনজন, রংপুর বিভাগে নয়জন, খুলনা বিভাগে সাতজন, বরিশাল বিভাগে আটজন এবং সিলেট বিভাগে ১১ জনের মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমদিকে নমুনা পরীক্ষা কম হতো। শনাক্তও কম হতো। এখন পরীক্ষা বেশি হচ্ছে, শনাক্তও বাড়ছে। এছাড়া শনাক্তের বাইরে আরও অনেকেই আছেন। উপসর্গবিহীন রোগী রয়েছেন দেড় থেকে দুই শতাংশ। তারা হাটে-বাজারে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করছেন। তাদের সংস্পর্শে গেছেন এমন অনেকেই আছেন, যাদের ট্রেস করা যাচ্ছে না।

এদিকে ঈদঘিরে এখন যারা বাড়ি যাচ্ছেন, তাদের যদি সঠিক নিয়মে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা না যায় তাহলে বিপদ আরও বাড়বে। কারণ এবারের ঈদের জামায়াত মসজিদে মসজিদে হবে। দেশে এক লাখের ওপরে মসজিদ আছে। ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাওয়া এসব মানুষ যখন মসজিদে ঈদের জামায়াতে নামাজ আদায় করবেন, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াবেন, তখন একজনের সংস্পর্শে এসে আরও অনেকের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

করোনাভাইরাস: থামছে না মৃত্যুর মিছিল, ১৫ দিনেই ঝরল ৫৪ শতাংশের প্রাণ

আপডেট সময় : ১০:২২:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মে ২০২০

এনকে বার্তা ডেস্ক::

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। সংক্রমণের শুরুর দিকে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। কিন্তু চলতি মে মাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনার রোগী শনাক্ত এবং ১৭ মার্চ প্রথম রোগীর মৃত্যু হয়। ২১ মে পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে সর্বমোট ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত এবং সর্বমোট ৪৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গত ১৫ দিনে অর্থাৎ ৭ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২৩৩ রোগী অর্থাৎ ৫৪ শতাংশ রোগীর জীবনপ্রদীপ নিভে যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ২৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। তারা বলছেন, বর্তমানে ধারাবাহিকভাবে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।

করোনায় আক্রান্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে দেখা গেছে, একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংক্রমণের ও মৃত্যুর হার সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে, এরপর ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে। বাংলাদেশে এখন সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছে বলে তাদের ধারণা।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের প্রধান অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, আগামী ১৫ দিনে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাজধানী ঢাকা তথা ঢাকা বিভাগ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা ৪৩২ জনের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ১৬১ জন, ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে ১৩০ জন অর্থাৎ ঢাকা বিভাগে মোট মৃতের সংখ্যা ২৯১। মৃতের হার ৬৭ শতাংশ। এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯০ জন, রাজশাহী বিভাগে তিনজন, রংপুর বিভাগে নয়জন, খুলনা বিভাগে সাতজন, বরিশাল বিভাগে আটজন এবং সিলেট বিভাগে ১১ জনের মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমদিকে নমুনা পরীক্ষা কম হতো। শনাক্তও কম হতো। এখন পরীক্ষা বেশি হচ্ছে, শনাক্তও বাড়ছে। এছাড়া শনাক্তের বাইরে আরও অনেকেই আছেন। উপসর্গবিহীন রোগী রয়েছেন দেড় থেকে দুই শতাংশ। তারা হাটে-বাজারে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করছেন। তাদের সংস্পর্শে গেছেন এমন অনেকেই আছেন, যাদের ট্রেস করা যাচ্ছে না।

এদিকে ঈদঘিরে এখন যারা বাড়ি যাচ্ছেন, তাদের যদি সঠিক নিয়মে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা না যায় তাহলে বিপদ আরও বাড়বে। কারণ এবারের ঈদের জামায়াত মসজিদে মসজিদে হবে। দেশে এক লাখের ওপরে মসজিদ আছে। ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাওয়া এসব মানুষ যখন মসজিদে ঈদের জামায়াতে নামাজ আদায় করবেন, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াবেন, তখন একজনের সংস্পর্শে এসে আরও অনেকের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াবে।