মানবেতর ভাবে দিনাতিপাত করছে চর জব্বার থানা পুলিশ, ডিসি’কে জানালেন ওসি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০২২

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

 

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর জব্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল হক তরিক খন্দকার বলেছেন, চর জব্বার থানা ও থানা এরিয়ার দুইটি পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা যেভাবে দিনাতিপাত করেন এর চেয়েও ভালো পরিবেশে দিনাতিপাত করে সে এলাকার গরু-ছাগল কিংবা কুকুর বিড়াল গুলো।

 

তিনি আজ (১২ এপ্রিল) সোমবার সুবর্ণচর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত, জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের সাথে উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষক, এনজিও প্রতিনিধিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় সভায় তার বক্তব্য প্রদানকালে এ মন্তব্য করেন।

 

ওসি তরিক খন্দকার তার বক্তব্যে বলেন, প্রথমেই আমি চর জব্বার থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ডিসি মহোদয়কে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, তিনি তার কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও এ সুবর্ণচরে ছুটে এসেছেন সেজন্য। তিনি আজ এ এলাকার সর্বস্তরের মানুষের দুঃখ কষ্টের কথাগুলো শুনবেন, তাই আমি নিজে ও এ সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাই না। আমি সম্মানিত ডিসি মহোদয়ের কাছে দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে চাই অত্র সুবর্ণচরের প্রায় ৬০০ বর্গকিলোমিটার এলাকার মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে চর জব্বার থানা পুলিশ ও দুইটি পুলিশ ফাঁড়ি। অত্যন্ত পীড়াদায়ক বিষয় হচ্ছে আমরা রাত জেগে এই মানুষগুলোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করি। যেকোনো সমস্যায় আমরা তাদের পাশে থাকি, এমনকি যেগুলো পুলিশের কাজ নয়, সেগুলোও তারা আমাদেরকে জানালে আমরা সমাধানের চেষ্টা করি। কিন্তু দুঃখজনক ঘটনা হচ্ছে আমাদের কোন আবাসস্থল নাই। আমাদের কোন আশ্রয় নাই। সর্বশেষ দীর্ঘদিন যাবত যে পুকুর টি থানার পুকুর হিসেবে পুলিশ ব্যবহার করতো সেটিও বন্ধক বা বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। যা খুবই দুঃখজনক এবং অপমান জনক। তিনি অভিমানের সুরে বলেন, হয়তো কোনদিন আমাদের থানা ভবনটাকেও ভাড়া দেওয়ার জন্য বা কোন কাজে ব্যবহারের জন্য এভাবে নিলামে তোলা হবে।

 

ওসি বলেন, স্যার এই যখন অবস্থা, হয়তো পদ্ধতি গত কিংবা সিস্টেমের কোন সমস্যার কারণে এটা হয়নাই। তবে সকল নিয়মের ব্যত্যয় ঘটানো সম্ভব। যেহেতু থানা পুলিশ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, জনস্বার্থে তারা নিয়োজিত। ডিসি’কে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, স্যার যদি সম্ভব হয় মানবিক কারণে প্রচলিত নিয়মের বাইরে গিয়ে বিশেষ বিবেচনায় আমাদের আবেদন গুলো গ্রহণ করুন, আমরা আবেদন করে রেখেছি এসব বিষয়ে।

 

এসময় তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, স্যার আপনি যদি নিজের চোখে চর জব্বার থানা ও দুইটি পুলিশ ফাঁড়ির দৈনদশা দেখতেন আমি বিশ্বাস করি আপনি সেটা সহ্য করতে পারতেন না। এখানকার পুলিশ সদস্যরা যেভাবে দিনাতিপাত করে, এটাকে মানবেতর বললেও ভুল হবে, অনেক গরু-ছাগল কিংবা কুকুর বিড়ালের ঘরও এর চাইতে ভালো। মানবেতরের নিচে যদি আর কিছু থেকে থাকে তাহলে সেরকম ভাবেই তারা বসবাস করে। সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়া এখানকার পুলিশ সদস্যরা জীবনযাপন করে। তাই আপনার কাছে আমাদের আবেদন, আমাদের এই সমস্যা সমাধানে ভূমি অধিগ্রহণ বা ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করে আমাদেরকে কৃতার্থ করবেন। যাতে আমরা আমাদের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল করতে পারি।

 

ওসি জিয়াউল হক তরিক খন্দকারের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনার পর, জেলাপ্রশাসক (ডিসি) দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, থানার পুকুরের বিষয়ে একটা ইজারার প্রস্তাব এসেছে, যেহেতু আমি এখন সবকিছু জেনেছি, এ বিষয়ে আমি ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে সমস্যা গুলো সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করবো।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০