ঢাকা ০৮:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে মারধর: গ্রেফতার ইউপি সদস্যের তিন ছেলে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৩৩:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২ ৪৪২৭ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

 

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ধর্ষণের পর হওয়া অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে (২২) মারধরের ঘটনায় মামলা দায়েরের ৭২ ঘন্টার মধ্যে ৩ ভাইকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোমেনা (মেম্বার) এর ছেলে রোমান (৩৫), রানা (৩২) ও রুবেল (৪০)। তারা ৩ জন সম্পর্কে আপন ভাই।

 

গতকাল শনিবার (২৭আগস্ট) সদর ও বেগমগঞ্জ উপজেলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হাজীপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোমেনার (মেম্বার) ছেলে রোমান (৩৫) গত রমজান ঈদের পর থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। পারিবারিক সমস্যা থাকায় প্রায় সময় মা-বাবা, বড় ভাইয়েরা বাড়ির বাইরে থাকতো। বাড়িতে তাদের বসত ঘরে ছোট ৩ ভাইকে নিয়ে থাকত ওই তরুণী। গত রমজানের ঈদের পর থেকে ভয় দেখিয়ে প্রায় রাতে ভুক্তভোগীর শয়নকক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আসছিল রোমান। এ ঘটনার ১ মাস পর নির্যাতিতার মা বাড়িতে আসলে বিষয়টি তাকে অবগত করা হয়।

 

পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অভিযুক্ত রোমানের পরিবারকে অবগত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের কয়েক দফায় মারধর করে রোমান ও তার পরিবারের লোকজন। এদিকে মেয়েটি ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে রোমানকে বিয়ের জন্য বললে তার পরিবারের লোকজন নির্যাতিতা ও তার পরিবারকে বাড়ি ছাড়ার জন্য এবং থানায় কোনো অভিযোগ দিলে হত্যা করবে বলেও হুমকি দিতে থাকে।

 

গত বুধবার বিকেলে ঘরের পাশের পুকুরঘাটে কাজ করছিল ওই তরুণী। এ সময় রোমান ও তার ভাই রুবেল এসে তাকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মেরে জখম করে ফেলে যায়। পরে বাড়ির লোকজন আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ওই রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে।

 

জানা যায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা এলাকায় মারামারি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। আসামি রোমান, রুবেল ও রানার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও অত্র মামলার অন্যতম আসামি মো. রুবেল বেগমগঞ্জ থানার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আমজাদ হোসেন ওরফে পেট কাটা সুমন ওরফে খালাসি সুমন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। তার বিরুদ্ধে দস্যুতা, খুনসহ ডাকাতি এবং একাধিক মারামারির মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

 

র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মাহমুদুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে মারধর: গ্রেফতার ইউপি সদস্যের তিন ছেলে

আপডেট সময় : ১০:৩৩:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

 

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ধর্ষণের পর হওয়া অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে (২২) মারধরের ঘটনায় মামলা দায়েরের ৭২ ঘন্টার মধ্যে ৩ ভাইকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোমেনা (মেম্বার) এর ছেলে রোমান (৩৫), রানা (৩২) ও রুবেল (৪০)। তারা ৩ জন সম্পর্কে আপন ভাই।

 

গতকাল শনিবার (২৭আগস্ট) সদর ও বেগমগঞ্জ উপজেলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হাজীপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোমেনার (মেম্বার) ছেলে রোমান (৩৫) গত রমজান ঈদের পর থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। পারিবারিক সমস্যা থাকায় প্রায় সময় মা-বাবা, বড় ভাইয়েরা বাড়ির বাইরে থাকতো। বাড়িতে তাদের বসত ঘরে ছোট ৩ ভাইকে নিয়ে থাকত ওই তরুণী। গত রমজানের ঈদের পর থেকে ভয় দেখিয়ে প্রায় রাতে ভুক্তভোগীর শয়নকক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আসছিল রোমান। এ ঘটনার ১ মাস পর নির্যাতিতার মা বাড়িতে আসলে বিষয়টি তাকে অবগত করা হয়।

 

পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অভিযুক্ত রোমানের পরিবারকে অবগত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের কয়েক দফায় মারধর করে রোমান ও তার পরিবারের লোকজন। এদিকে মেয়েটি ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে রোমানকে বিয়ের জন্য বললে তার পরিবারের লোকজন নির্যাতিতা ও তার পরিবারকে বাড়ি ছাড়ার জন্য এবং থানায় কোনো অভিযোগ দিলে হত্যা করবে বলেও হুমকি দিতে থাকে।

 

গত বুধবার বিকেলে ঘরের পাশের পুকুরঘাটে কাজ করছিল ওই তরুণী। এ সময় রোমান ও তার ভাই রুবেল এসে তাকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মেরে জখম করে ফেলে যায়। পরে বাড়ির লোকজন আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ওই রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে।

 

জানা যায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা এলাকায় মারামারি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। আসামি রোমান, রুবেল ও রানার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও অত্র মামলার অন্যতম আসামি মো. রুবেল বেগমগঞ্জ থানার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আমজাদ হোসেন ওরফে পেট কাটা সুমন ওরফে খালাসি সুমন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। তার বিরুদ্ধে দস্যুতা, খুনসহ ডাকাতি এবং একাধিক মারামারির মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

 

র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মাহমুদুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।