নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর সেনবাগের ছাতারপাইয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন শেষে ফেরার পথে সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার (৫০) কে পিটিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়েছে আরেক সাধারণ সম্পাদক পদ প্রাথী সোহরাব হোসেন সুমনের অনুসারীরা। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক উপজেলার ছাতারপাইয়া বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
গতকাল শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার ছাতারপাইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।
ছাতারপাইয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সভাপতি নুরুল হক মজুদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দীর্ঘ ১৮বছর পর শুক্রবার বিকেলে ছাতারপাইয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আমার সভাপতিত্বে ও সাবেক সাধরাণ সম্পাদক আবদুস সাত্তারের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদ আলম এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম। মাগরিবের নামাজের আজানের সাথে সাথে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। তখন উপজেলা আওয়ামী লীগের কিছু নেতা চেয়েছে ভোট ছাড়া মৌখিক ভাবে কমিটি ঘোষণা করে দিতে। এতে আমি বাধা দেয়। এরপর এমপি চলে গেলে আমিও চলে যাওয়ার জন্য হাঁটা শুরু করি। এ সময় আরেক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সোহরাব হোসেন সুমনের ইন্ধনে তার অনুসারী বুলেট বাবু, সোহাগ, ফরহাদসহ ৭-৮জন সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তারের ওপর। এই সন্ত্রাসী বাহিনী তাকে বেধড়ক পিটিয়ে ছাতারপাইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কুচুরি পানা ঠাসা বড় পুকুরে তাকে ফেলে দেয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে দলীয় নেতাকর্মিরা উত্তেজিত হয়ে উঠলে সোহরাব হোসেন সুমন পালিয়ে যায়।
সাবেক সভাপতি নুরুল হক মজুদার অভিযোগ করে আরো বলেন, নির্যাতনের শিকার আবদুস সাত্তার গত ১৮ বছর এই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে। সুষ্ঠ বিচার না ফেলে আমরা ছাতারপাইয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করবনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছাতারপাইয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হয়। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নাম ঘোষণা না করায় বিভিন্ন পদ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জেরধরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, নোয়াখালীর চাটখিলে আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা দুই দফায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক আহবায়ক য়কের আক্রোশের শিকার হন। তবে এখনো কোনে বিচার হয়নি। চাটখিল থেকে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো সেনবাগে। সুষ্ঠু কোনো বিচার নেই?
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ডুমুরুয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শওকত হোসেন কানন বলেন, ছাতারপাইয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রাথী আহাদ আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। এই নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদ আলম এমপি ও সাধারণ সম্পাদক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, সম্মেলন শেষে ঠেলা ধাক্কার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। এলাকায় পুলিশী পাহারা জোরদার করা হয়েছে।