ঢাকা ১১:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ‘প্লাজমা ব্যাংক’ করতে চায়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মে ২০২০ ৩০৪ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

করোনাভাইরাসের নমুনা শনাক্তের কিট ‍উদ্ভাবনের পর এবার এই ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপির কার্যকারিতার পরিপ্রেক্ষিতে ‘প্লাজমা ব্যাংক’ করার উদ্যোগ নিয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

শুক্রবার (২৯ মে) গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ কথা জানিয়েছেন। যিনি নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্লাজমা নিয়েছেন।

গত ২৫ মে রাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরদিন ‘ও’ পজিটিভ ব্লাড গ্রুপের ২০০ মিলিলিটার প্লাজমা নেন তিনি। বৃহস্পতিবার আরেক দফা প্লাজমা নিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার তিনি বলেন, “প্লাজমা একটি প্রতিষেধক। যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের রক্ত থেকে প্লাজমা প্রতিষেধক তৈরি করা হয়। আমরা (গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র) এরকম একটি প্লাজমা ব্যাংক করতে চাই। এজন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। সবার সহযোগিতা আমরা চাই।

“আমরা সকলকে নিয়ে এই প্লাজমা ব্যাংক করতে চাই। ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমেদ খান, শিশু হাসপাতালের ডা. হামিদ রয়েছেন। এরা মহৎ কাজ করছেন। তাদেরকে নিয়ে আমরা নগর হাসপাতালে খুব বড় আকারে এটা করতে চাই। যাতে দিনে ১০০ মানুষকে আমরা প্লাজমা দিতে পারি।”

রক্তের তরল, হালকা হলুদাভ অংশকে প্লাজমা বা রক্তরস বলে। চিকিৎসকরা বলছেন, কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা এ ভাইরাস মোকাবেলা করে টিকে থাকতে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই অ্যান্টিবডি করোনাভাইরাসকে আক্রমণ করে। সময়ের সাথে সাথে আক্রান্ত ব্যক্তির প্লাজমায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। ওই অ্যান্টিবডিই অসুস্থদের সারিয়ে তুলতে ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশেও এই থেরাপির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে।

প্লাজমা থেরাপিতে উপকার পেয়েছেন জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, “আমার করোনাভাইরাস পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার পর অধ্যাপক মহিউদ্দিন খান ফোন করে প্লাজমা থেরাপি নেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর আমি প্লাজমা নিই। ডিএমসির সরকারের ট্রান্সমিশন থেকে আমি এটা পেয়েছি। আমি এই থেরাপিতে উপকার পাচ্ছি।”

“প্লাজমা থেরাপি ম্যাজিকের মতো কাজ করে। আমি নিজে নিয়ে এটা বুঝতে পারছি। আক্রান্ত হওয়ার পর বেশ দুর্বল অনুভব করেছিলাম। প্লাজামা নেওয়ার পর ভালো অনুভব করছি। প্লাজমা ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে বলে জানান তিনি।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, “সব করোনা রোগীর প্লাজমা পাওয়া দুষ্কর। শুধু আমরা কয়েকজন এই সুবিধা পাব, দেশের সাধারণ মানুষ পাবে না, তা হতে পারে না।

“প্লাজমা ব্যাংক করতে হলে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে, এর ফলে প্রত্যেকটা মানুষ এই প্লাজমা চিকিৎসা নিতে পারবেন। যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে গেছেন ও যাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে তারা খুব সহজে এটা ডোনেট করতে পারবে।”

শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ বলেন, “এখন (দুপুর ২টা) শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি। ভালো অনুভব করছি। গতকাল রাতে আমি ডায়ালাইসিস করিয়েছি এবং প্লাজমা থেরাপি নিয়েছি। এ নিয়ে দুইবার নিলাম। সাপ্তাহে একবার নেয়া ভালো।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ‘প্লাজমা ব্যাংক’ করতে চায়

আপডেট সময় : ০৯:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মে ২০২০

করোনাভাইরাসের নমুনা শনাক্তের কিট ‍উদ্ভাবনের পর এবার এই ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপির কার্যকারিতার পরিপ্রেক্ষিতে ‘প্লাজমা ব্যাংক’ করার উদ্যোগ নিয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

শুক্রবার (২৯ মে) গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ কথা জানিয়েছেন। যিনি নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্লাজমা নিয়েছেন।

গত ২৫ মে রাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরদিন ‘ও’ পজিটিভ ব্লাড গ্রুপের ২০০ মিলিলিটার প্লাজমা নেন তিনি। বৃহস্পতিবার আরেক দফা প্লাজমা নিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার তিনি বলেন, “প্লাজমা একটি প্রতিষেধক। যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের রক্ত থেকে প্লাজমা প্রতিষেধক তৈরি করা হয়। আমরা (গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র) এরকম একটি প্লাজমা ব্যাংক করতে চাই। এজন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। সবার সহযোগিতা আমরা চাই।

“আমরা সকলকে নিয়ে এই প্লাজমা ব্যাংক করতে চাই। ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমেদ খান, শিশু হাসপাতালের ডা. হামিদ রয়েছেন। এরা মহৎ কাজ করছেন। তাদেরকে নিয়ে আমরা নগর হাসপাতালে খুব বড় আকারে এটা করতে চাই। যাতে দিনে ১০০ মানুষকে আমরা প্লাজমা দিতে পারি।”

রক্তের তরল, হালকা হলুদাভ অংশকে প্লাজমা বা রক্তরস বলে। চিকিৎসকরা বলছেন, কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা এ ভাইরাস মোকাবেলা করে টিকে থাকতে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই অ্যান্টিবডি করোনাভাইরাসকে আক্রমণ করে। সময়ের সাথে সাথে আক্রান্ত ব্যক্তির প্লাজমায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। ওই অ্যান্টিবডিই অসুস্থদের সারিয়ে তুলতে ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশেও এই থেরাপির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে।

প্লাজমা থেরাপিতে উপকার পেয়েছেন জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, “আমার করোনাভাইরাস পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার পর অধ্যাপক মহিউদ্দিন খান ফোন করে প্লাজমা থেরাপি নেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর আমি প্লাজমা নিই। ডিএমসির সরকারের ট্রান্সমিশন থেকে আমি এটা পেয়েছি। আমি এই থেরাপিতে উপকার পাচ্ছি।”

“প্লাজমা থেরাপি ম্যাজিকের মতো কাজ করে। আমি নিজে নিয়ে এটা বুঝতে পারছি। আক্রান্ত হওয়ার পর বেশ দুর্বল অনুভব করেছিলাম। প্লাজামা নেওয়ার পর ভালো অনুভব করছি। প্লাজমা ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে বলে জানান তিনি।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, “সব করোনা রোগীর প্লাজমা পাওয়া দুষ্কর। শুধু আমরা কয়েকজন এই সুবিধা পাব, দেশের সাধারণ মানুষ পাবে না, তা হতে পারে না।

“প্লাজমা ব্যাংক করতে হলে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে, এর ফলে প্রত্যেকটা মানুষ এই প্লাজমা চিকিৎসা নিতে পারবেন। যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে গেছেন ও যাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে তারা খুব সহজে এটা ডোনেট করতে পারবে।”

শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ বলেন, “এখন (দুপুর ২টা) শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি। ভালো অনুভব করছি। গতকাল রাতে আমি ডায়ালাইসিস করিয়েছি এবং প্লাজমা থেরাপি নিয়েছি। এ নিয়ে দুইবার নিলাম। সাপ্তাহে একবার নেয়া ভালো।”