ঢাকা ০৫:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

যে উপজেলার একমাত্র পণ্য বাহনই হেচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫১:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩ ৩০৪৭ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অনলাইন ডেস্ক:

 

সিরাজগঞ্জ বেলকুচি উপজেলার সুবিধা ও উন্নয়ন বঞ্চিত চরাঞ্চলে শুস্ক মৌসুমে পণ্য বাহনের একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ি। চরাঞ্চলের মানুষের নিকট ঘোড়ার গাড়ির কদর বেড়েছে। তবে বর্ষাকালে এ বাহন অচল, তখন ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে পন্য পরিবহন করতে হয়।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুস্ক মৌসুমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন যমুনা নদীর চরে কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে যে কোন ধরনের মালামাল পরিবহনের একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ি। চরাঞ্চালে খানাখন্দে ভরপুর বালিময় রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রাক যাওয়া অসম্ভব সে সকল রাস্তায় জনপ্রিয় বাহন হিসেব ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার হয়। বেলকুচি উপজেলার একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে বেলকুচি সদর ও বড়ধুল ইউনিয়নের সবটুকুই চর। এ সমস্ত চরে সিংহভাগ রবি শস্য উৎপাদন হয়। পাট, আলু, বাদাম, ভূট্টা, গম, ডাল এসব অর্থকরী ফসল পরিবহনের জন্য বাহন হিসাবে ঘোড়ার গাড়িই একমাত্র ভরসা।

কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল ঘোড়ার গাড়িতেই হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন।ব্যবসায়ীদের কাছে কম মূল্যে ফসল বিক্রি করতে হয় না। উপজেলার দুই ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষকরা একদিকে যেমন উৎপাদিত ফসল হাট-বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন তেমনি কৃষি উপকরণ সার বীজসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে ঘোড়ার গাড়িতেই নিয়ে আসতে পারছেন।ঘোড়ার গাড়ির মালিকরাও ভালোভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন।

 

ঘোড়ার গাড়ি চালক বাবলু জানান, ‘প্রতিদিন গাড়ি দিয়ে গড়ে আট থেকে নয় শত টাকা উপার্জন করা যায়।ঘোড়ার পিছনে দৈনিক দেড় থেকে দুইশত টাকা ব্যয় করতে হয়। বাকি টাকা দৈনিক রোজগার হয়ে থাকে।’

 

বড়ধুল চরের ঘোড়ার গাড়ি চালক বাবলু জানান, ‘শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালানো সম্ভব হয় না। তাই ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে উপার্জন করে সংসার চলছে। দৈনিক যে রোজগার হয় তাতে কারও নিকট মুখাপেক্ষী হতে হয় না। ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ ও জামা-কাপড় দিতে এখন তেমন কষ্ট হয় না।’

 

কোলের চরের ঘোড়ার গাড়ি চালক মোহাম্মাদ আলী জানায়, ‘যেখানে ইঞ্জিন চালিত যানবাহন চলে না সেখানে ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে ফসলাদি পরিবহন করছি। এ কারণে চরের মানুষের কাছে ঘোড়ার গাড়ি জনপ্রিয় পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত।’ দুটি ইউনিয়নে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ টি ঘোড়ার গাড়ি পরিবহনের কাজে ব্যবহার হয়।

বড়ধুল চরবেল চরের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানায়, ‘ঘোড়ার গাড়িতে ধান, পাট, গম, ভুট্টা ও শাকসবজি বহন করে সরাসরি বাজারে নিয়ে বিক্রি করছি। তাতে ভালো দামও পাচ্ছি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক

যে উপজেলার একমাত্র পণ্য বাহনই হেচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি

আপডেট সময় : ০৯:৫১:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক:

 

সিরাজগঞ্জ বেলকুচি উপজেলার সুবিধা ও উন্নয়ন বঞ্চিত চরাঞ্চলে শুস্ক মৌসুমে পণ্য বাহনের একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ি। চরাঞ্চলের মানুষের নিকট ঘোড়ার গাড়ির কদর বেড়েছে। তবে বর্ষাকালে এ বাহন অচল, তখন ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে পন্য পরিবহন করতে হয়।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুস্ক মৌসুমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন যমুনা নদীর চরে কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে যে কোন ধরনের মালামাল পরিবহনের একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ি। চরাঞ্চালে খানাখন্দে ভরপুর বালিময় রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রাক যাওয়া অসম্ভব সে সকল রাস্তায় জনপ্রিয় বাহন হিসেব ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার হয়। বেলকুচি উপজেলার একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে বেলকুচি সদর ও বড়ধুল ইউনিয়নের সবটুকুই চর। এ সমস্ত চরে সিংহভাগ রবি শস্য উৎপাদন হয়। পাট, আলু, বাদাম, ভূট্টা, গম, ডাল এসব অর্থকরী ফসল পরিবহনের জন্য বাহন হিসাবে ঘোড়ার গাড়িই একমাত্র ভরসা।

কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল ঘোড়ার গাড়িতেই হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন।ব্যবসায়ীদের কাছে কম মূল্যে ফসল বিক্রি করতে হয় না। উপজেলার দুই ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষকরা একদিকে যেমন উৎপাদিত ফসল হাট-বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন তেমনি কৃষি উপকরণ সার বীজসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে ঘোড়ার গাড়িতেই নিয়ে আসতে পারছেন।ঘোড়ার গাড়ির মালিকরাও ভালোভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন।

 

ঘোড়ার গাড়ি চালক বাবলু জানান, ‘প্রতিদিন গাড়ি দিয়ে গড়ে আট থেকে নয় শত টাকা উপার্জন করা যায়।ঘোড়ার পিছনে দৈনিক দেড় থেকে দুইশত টাকা ব্যয় করতে হয়। বাকি টাকা দৈনিক রোজগার হয়ে থাকে।’

 

বড়ধুল চরের ঘোড়ার গাড়ি চালক বাবলু জানান, ‘শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালানো সম্ভব হয় না। তাই ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে উপার্জন করে সংসার চলছে। দৈনিক যে রোজগার হয় তাতে কারও নিকট মুখাপেক্ষী হতে হয় না। ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ ও জামা-কাপড় দিতে এখন তেমন কষ্ট হয় না।’

 

কোলের চরের ঘোড়ার গাড়ি চালক মোহাম্মাদ আলী জানায়, ‘যেখানে ইঞ্জিন চালিত যানবাহন চলে না সেখানে ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে ফসলাদি পরিবহন করছি। এ কারণে চরের মানুষের কাছে ঘোড়ার গাড়ি জনপ্রিয় পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত।’ দুটি ইউনিয়নে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ টি ঘোড়ার গাড়ি পরিবহনের কাজে ব্যবহার হয়।

বড়ধুল চরবেল চরের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানায়, ‘ঘোড়ার গাড়িতে ধান, পাট, গম, ভুট্টা ও শাকসবজি বহন করে সরাসরি বাজারে নিয়ে বিক্রি করছি। তাতে ভালো দামও পাচ্ছি।’