ঢাকা ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

চীনের ছোংছিং কুওইউয়ান বন্দর সংযুক্ত করেছে বিশ্বকে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৪২:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মে ২০২৩ ১২৫৯৫ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এনকে বার্তা, আন্তর্জাতিক:

 

আকাশ থেকে ছোংছিংয়ের লিয়াংচিয়াং নিউ অ্যারিয়ার কুও ইউয়ান বন্দরের দিকে তাকালে দেখা যায়, নদীতে সারিবদ্ধভাবে ১৬টি ৫ হাজার টনের বার্থ রাখা আছে। আর ১৩ লাখ বর্গমিটারের স্টোরেজ ইয়ার্ডে দেখা যায় খুবই ব্যস্ততা। জাহাজগুলির যাতায়াত বহুপদ্ধতির পরিবহনে বন্দর প্রাণশক্তি দেখাচ্ছে।

অদূরে অবস্থিত রেলপথের বিশেষ স্টেশন ইয়ার্ডে কিছু সংখ্যক ব্রাজিল থেকে আনা লৌহ আকরিক রয়েছে। এগুলো ইয়াংসি নদীর সোনালী জলপথের মাধ্যমে এখানে এসেছে। এখান থেকে রেলপথে করে সিছুয়ান প্রদেশের ওয়েইউয়ানের ইস্পাত ও লোহার কারখানায় পৌঁছাবে।

ছোংছিং পোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ছুই হোং জানান, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কুওইউয়ান বন্দর ভাল সূচনা করেছে। তখন এর কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ছিল ৬১.৯ লাখ টন এবং কন্টেইনারের মাল বহন ও খালাসের পরিমাণ ছিল ২.৩১ লাখ টিইইউ। তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ৯.৯ ও ১৬.৪ শতাংশ বেশি।

অতীতে বাল্ক সাধারণ পণ্য পরিবহন ছোট জাহাজঘাট থেকে চীনের অভ্যন্তরীণ নদীতে বৃহত্তম জল, রেলপথ ও মহাসড়ক মাল্টিমোডাল পরিবহন হাব পোর্ট পর্যন্ত দশ বছরে কুওইউয়ান বন্দর ইতিবাচকভাবে জল পরিবহন বন্দর ফাংশন নির্মাণ এবং আন্তর্জাতিক লজিস্টিক চ্যানেল নির্মাণ ঠেলে দিয়ে যথাক্রমে ছেং-ইয়ু (ছেংদু—ছোংছিং) এলাকায় যমজ শহরের অর্থনৈতিক বৃত্ত খোলা দরজা এবং ইয়াংসি নদীর উচ্চ অববাহিকা বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করা “বদলি স্থলে” পরিণত হয়েছে।

লজিস্টিক কার্যকারিতার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য কুও ইউয়ান বন্দর চায়না রেলওয়ে ছেংদু গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে রেল-জল সম্মিলিত পরিবহন আন্তঃযোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করে ট্রেনের তথ্য এবং কার্গো ট্রানজিট ও পোর্ট তথ্য শেয়ারিং বাস্তবায়ন করেছে। এছাড়া কুয়াংসি’র ছিনচৌ বন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে আন্তঃআঞ্চলিক কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি শাংহাই-ছোংছিং সরাসরি এক্সপ্রেস চালু করে ছোংছিং থেকে শাংহাইগামী পরিবহনের সময় প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমিয়েছে।

সম্প্রতি কয়েক ডজন সেরেস নতুন জ্বালানি-চালিত গাড়ি নতুন পশ্চিম স্থল-সমুদ্র করিডোরের রেল-সমুদ্র মালবাহী ট্রেনে করে ছোংছিংয়ের কুওইউয়ান বন্দরের ইয়ুজুই স্টেশন থেকে রওয়ানা করে। সেরেস গ্রুপের বিদেশ বিষয়ক বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার জাং সিংইয়ান জানান, গাড়িগুলি ছিনচৌ বন্দরে বোঝাই সম্পন্ন করার পর ইউরোপে বিক্রি করা হবে। যা কার্যকরভাবে পরিবহনের সময় সাশ্রয় করার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের অপারেটিং মূল্য কমানো হয়। ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানিকৃত গাড়ি পরিবহন করতে ঐতিহ্যগত নৌ-পরিবহনে ৩০ দিন সময় লাগে। কিন্তু নতুন পশ্চিম স্থল-সমুদ্র করিডোরের মাধ্যমে এটি এখন শুধু ১৮ দিন লাগে। কুওইউয়ান বন্দরের ওপর নির্ভর করে ছোংছিং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৃহত্তম বাণিজ্যিক যানবাহনের মাল্টিমোডাল বিতরণ কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে।

বর্তমানে কুওইউয়ান বন্দরের নতুন লজিস্টিক কাঠামো সম্প্রসারিত হয়েছে—পূর্ব দিকে ইয়াংসি নদীর নৌপরিবহনের মাধ্যমে প্যাসিফিকে পৌঁছানো যায়। পশ্চিম দিকে চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনের মাধ্যমে মধ্য এশিয়া ও ইউরোপীয় অঞ্চলে পৌঁছানো যায়। দক্ষিণ দিকে নতুন পশ্চিম স্থল-সমুদ্র করিডোরের মাধ্যমে ভারত মহাসাগরে পৌঁছানো যায় এবং উত্তর দিকে চীন, মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়া অর্থনৈতিক করিডোরের মাধ্যমে মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া যায়। মালামাল দ্রুত বিশ্বের শতাধিক দেশ ও অঞ্চলের তিন শতাধিক বন্দরে পৌঁছে যায়। সূত্র : প্রেমা এনাম, চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক

চীনের ছোংছিং কুওইউয়ান বন্দর সংযুক্ত করেছে বিশ্বকে

আপডেট সময় : ০৪:৪২:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মে ২০২৩

এনকে বার্তা, আন্তর্জাতিক:

 

আকাশ থেকে ছোংছিংয়ের লিয়াংচিয়াং নিউ অ্যারিয়ার কুও ইউয়ান বন্দরের দিকে তাকালে দেখা যায়, নদীতে সারিবদ্ধভাবে ১৬টি ৫ হাজার টনের বার্থ রাখা আছে। আর ১৩ লাখ বর্গমিটারের স্টোরেজ ইয়ার্ডে দেখা যায় খুবই ব্যস্ততা। জাহাজগুলির যাতায়াত বহুপদ্ধতির পরিবহনে বন্দর প্রাণশক্তি দেখাচ্ছে।

অদূরে অবস্থিত রেলপথের বিশেষ স্টেশন ইয়ার্ডে কিছু সংখ্যক ব্রাজিল থেকে আনা লৌহ আকরিক রয়েছে। এগুলো ইয়াংসি নদীর সোনালী জলপথের মাধ্যমে এখানে এসেছে। এখান থেকে রেলপথে করে সিছুয়ান প্রদেশের ওয়েইউয়ানের ইস্পাত ও লোহার কারখানায় পৌঁছাবে।

ছোংছিং পোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ছুই হোং জানান, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কুওইউয়ান বন্দর ভাল সূচনা করেছে। তখন এর কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ছিল ৬১.৯ লাখ টন এবং কন্টেইনারের মাল বহন ও খালাসের পরিমাণ ছিল ২.৩১ লাখ টিইইউ। তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ৯.৯ ও ১৬.৪ শতাংশ বেশি।

অতীতে বাল্ক সাধারণ পণ্য পরিবহন ছোট জাহাজঘাট থেকে চীনের অভ্যন্তরীণ নদীতে বৃহত্তম জল, রেলপথ ও মহাসড়ক মাল্টিমোডাল পরিবহন হাব পোর্ট পর্যন্ত দশ বছরে কুওইউয়ান বন্দর ইতিবাচকভাবে জল পরিবহন বন্দর ফাংশন নির্মাণ এবং আন্তর্জাতিক লজিস্টিক চ্যানেল নির্মাণ ঠেলে দিয়ে যথাক্রমে ছেং-ইয়ু (ছেংদু—ছোংছিং) এলাকায় যমজ শহরের অর্থনৈতিক বৃত্ত খোলা দরজা এবং ইয়াংসি নদীর উচ্চ অববাহিকা বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করা “বদলি স্থলে” পরিণত হয়েছে।

লজিস্টিক কার্যকারিতার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য কুও ইউয়ান বন্দর চায়না রেলওয়ে ছেংদু গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে রেল-জল সম্মিলিত পরিবহন আন্তঃযোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করে ট্রেনের তথ্য এবং কার্গো ট্রানজিট ও পোর্ট তথ্য শেয়ারিং বাস্তবায়ন করেছে। এছাড়া কুয়াংসি’র ছিনচৌ বন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে আন্তঃআঞ্চলিক কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি শাংহাই-ছোংছিং সরাসরি এক্সপ্রেস চালু করে ছোংছিং থেকে শাংহাইগামী পরিবহনের সময় প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমিয়েছে।

সম্প্রতি কয়েক ডজন সেরেস নতুন জ্বালানি-চালিত গাড়ি নতুন পশ্চিম স্থল-সমুদ্র করিডোরের রেল-সমুদ্র মালবাহী ট্রেনে করে ছোংছিংয়ের কুওইউয়ান বন্দরের ইয়ুজুই স্টেশন থেকে রওয়ানা করে। সেরেস গ্রুপের বিদেশ বিষয়ক বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার জাং সিংইয়ান জানান, গাড়িগুলি ছিনচৌ বন্দরে বোঝাই সম্পন্ন করার পর ইউরোপে বিক্রি করা হবে। যা কার্যকরভাবে পরিবহনের সময় সাশ্রয় করার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের অপারেটিং মূল্য কমানো হয়। ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানিকৃত গাড়ি পরিবহন করতে ঐতিহ্যগত নৌ-পরিবহনে ৩০ দিন সময় লাগে। কিন্তু নতুন পশ্চিম স্থল-সমুদ্র করিডোরের মাধ্যমে এটি এখন শুধু ১৮ দিন লাগে। কুওইউয়ান বন্দরের ওপর নির্ভর করে ছোংছিং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৃহত্তম বাণিজ্যিক যানবাহনের মাল্টিমোডাল বিতরণ কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে।

বর্তমানে কুওইউয়ান বন্দরের নতুন লজিস্টিক কাঠামো সম্প্রসারিত হয়েছে—পূর্ব দিকে ইয়াংসি নদীর নৌপরিবহনের মাধ্যমে প্যাসিফিকে পৌঁছানো যায়। পশ্চিম দিকে চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনের মাধ্যমে মধ্য এশিয়া ও ইউরোপীয় অঞ্চলে পৌঁছানো যায়। দক্ষিণ দিকে নতুন পশ্চিম স্থল-সমুদ্র করিডোরের মাধ্যমে ভারত মহাসাগরে পৌঁছানো যায় এবং উত্তর দিকে চীন, মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়া অর্থনৈতিক করিডোরের মাধ্যমে মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া যায়। মালামাল দ্রুত বিশ্বের শতাধিক দেশ ও অঞ্চলের তিন শতাধিক বন্দরে পৌঁছে যায়। সূত্র : প্রেমা এনাম, চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)।