মো. সেলিম, নোয়াখালী:
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন (২০) এক গৃহবধূ। এসময় ধর্ষণকারীদের হামলায় ওই নারীর স্বামীসহ দুইজন আহত হয়েছেন। বাড়ী করার জন্য জায়গা ক্রয় করতে এসে সমাজ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দাবীকৃত চাঁদার টাকা দিয়েও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ গৃহবধূর।
ঘটনায় শনিবার বিকালে ওইনারী বাদী হয়ে কবিরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩জুন বুধবার বিকালে পাশ্ববর্তী সুবর্ণচর উপজেলার চরবৈশাখী গ্রাম থেকে কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের পূর্ব নবগ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ীতে আসেন গৃহবধূ (২০) ও তার স্বামী (২৬)। কাজ শেষ না হওয়ায় ওই আত্মীয়ের বাড়ীতে রাতে অবস্থান করেন তারা। রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় সমাজ কমিটির সভাপতি আব্দুস সাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামের নেতৃত্বে ৬-৭জন গৃহবধূর আত্মীয়ের বাড়ীতে আসে। এসময় তারা ঘরে ডুকে এই দম্পতির মধ্যে সম্পর্ক অবৈধ বলে তাদের বিয়ের কাগজপত্র দেখতে চায়। কিছু বুঝে উঠার আগে গৃহবধূ ও তার স্বামীকে আটক করে বাড়ীর পাশের একটি জায়গায় নিয়ে তাদের সাথে থাকা টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। সাত্তার ও কালাম তাদের ছেড়ে দিতে ওই দম্পতির কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। পরে ওই গৃহবধূর স্বামী তার খালাতো ভাইকে বিষয়টি মোবাইলে জানালে সে ৩৫হাজার টাকা মুক্তিপণ হিসেবে নিয়ে সাত্তারের হাতে দিয়ে আরও ২৫হাজার টাকা পরে দিবে মর্মে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে। টাকা নিয়ে সাত্তার গৃহবধূকে নিরাপত্তা দিবে বলে তার মেয়ের বাড়ীতে নিয়ে যায় এবং তার স্বামী ও খালাতো ভাইকে পিটিয়ে জখম করে।
নির্যাতিতা গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, রাত ১২টার দিকে আমাকে নিতে খালাতো ভাই ও তার বউ এসেছে বলে সাত্তার তার মেয়ের বাড়ী থেকে আমাকে বের করে নিয়ে যায়। কিছু পথ যাওয়ার পর ফাঁকা রাস্তায় ৫-৬ জন লোকের হাতে আমাকে ছেড়ে দেয় সাত্তার। ওই লোকগুলোর আচারণ দেখে আমি সাত্তারকে বাবা ডেকে আমাকে রক্ষা করতে বলি, কিন্তু সাত্তার আমাকে তাদের হাতে ছেড়ে দেয়। পরে রাস্তার পাশের একটি কলা বাগানে নিয়ে মাটিতে পেলে পালাক্রমে সাত্তারসহ সবাই আমাকে গণধর্ষণ করে। অচেতন অবস্থায় তারা পাশ্ববর্তী আজাদের দোকানের সামনের একটি বট গাছের নিচে আমাকে রেখে চলে যায়। সেখান থেকে লোকজনের সহযোগিতায় আমার স্বামী ও খালাতো ভাই আমাকে উদ্ধার করে। ধর্ষকদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছেন নির্যাতিতা ওই নারী।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মোহাম্মদ হাসান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে সাত জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন গৃহবধূ। আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। রবিবার সকালে ওই গৃহবধূকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হবে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।