ঢাকা ০৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

নোয়াখালী আদালতের নাজির’সহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:০৫:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮৮৬ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

 

অবৈধ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের নাজির মোহাম্মদ আলমগীর ও তার স্ত্রীসহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দুদক। এঘটনায় আদালত পাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর এ মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার বিকালে দূর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় নোয়াখালীর উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ সালাহ উদ্দিন আহাম্মেদের আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অন্য আসামীরা হচ্ছেন আলমগীরের স্ত্রী নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জুডিসিয়াল পেশকার নাজমুন নাহার, আলমগীরে বোন আফরোজা আক্তার ও তার বন্ধু বিজন ভৌমিক।

 

দুদক নোয়াখালী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া উপজেলার দক্ষিণ লালপুর গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের ছেলে ও নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সাবেক রেকর্ড কিপার-বর্তমানে জেলা জজ আদালতের নাজির মোহাম্মদ আলমগীর ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলা জজ আদালতে স্টেনোগ্রাফার পদে যোগদান করেন।

 

পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে তিনি রেকর্ড কিপার ও নাজির হন। ২০০৬ সালে তিনি নাজমুন নাহার কে বিয়ে করেন। এরপর ২০০৮ সালে স্ত্রী নাজমুন নাহারকে জুডিসিয়াল পেশকার পদে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চাকরি দেন। তারপর স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করতে থাকেন। এঘটনায় অভিযোগ পেয়ে অবৈধ সম্পদদের অনুসন্ধানে নামে দুদক।

 

আরও জানা গেছে, অনুসন্ধানে নোয়াখালী পৌরসভা এলাকা, ফেনী ও ঢাকা জেলায় আলমগীর-নাজমুন নাহার দম্পতির নামে ৭কোটি টাকারও বেশি অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া যায়। এছাড়াও ভূয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকে হিসাব খুলে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা অবৈধ লেনদেন করেন। অবৈধ সম্পদ অর্জন প্রতারনা ও জালিয়াতির অপরাধে তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের হয়। গত ২০১৯সালের ৫আগস্ট দুদক নোয়াখালী কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক সুবেল আহম্মেদ মাইজদী শহরের কৃষ্ণরামপুর পল্লবী সরকারি আবাসিক এলাকা থেকে আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে। আলমগীর দুদকের এ গ্রেপ্তারের প্রতি চ্যালেঞ্জ করে দূর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও সহাকারি পরিচালক সুবেল আহম্মদকে উকিল নোটিশ পাঠায়।

 

এ বিষয়ে আলমগীর জানান, চার্জশিট দাখিলের বিষয়টি তিনি শুনেছেন।

 

দুদক নোয়াখালী উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বছর আগস্ট মাসে মোহাম্মদ আলমগীর ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ ১বছর তদন্ত শেষে তার ও তার স্ত্রীর নামে বেনামে ৭ কোটি ১৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬২৫ টাকার অবৈধ সম্পদ, প্রতারণা মূলকভাবে মানি লন্ড্রারিং কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকা, ঘুষ ও দূর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আয় এবং ব্যাংক হিসেবে ৩৭কোটি টাকার অবৈধ লেনেদেনের প্রমাণ মিলেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

নোয়াখালী আদালতের নাজির’সহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

আপডেট সময় : ০৪:০৫:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

 

অবৈধ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের নাজির মোহাম্মদ আলমগীর ও তার স্ত্রীসহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দুদক। এঘটনায় আদালত পাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর এ মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার বিকালে দূর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় নোয়াখালীর উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ সালাহ উদ্দিন আহাম্মেদের আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অন্য আসামীরা হচ্ছেন আলমগীরের স্ত্রী নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জুডিসিয়াল পেশকার নাজমুন নাহার, আলমগীরে বোন আফরোজা আক্তার ও তার বন্ধু বিজন ভৌমিক।

 

দুদক নোয়াখালী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া উপজেলার দক্ষিণ লালপুর গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের ছেলে ও নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সাবেক রেকর্ড কিপার-বর্তমানে জেলা জজ আদালতের নাজির মোহাম্মদ আলমগীর ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলা জজ আদালতে স্টেনোগ্রাফার পদে যোগদান করেন।

 

পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে তিনি রেকর্ড কিপার ও নাজির হন। ২০০৬ সালে তিনি নাজমুন নাহার কে বিয়ে করেন। এরপর ২০০৮ সালে স্ত্রী নাজমুন নাহারকে জুডিসিয়াল পেশকার পদে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চাকরি দেন। তারপর স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করতে থাকেন। এঘটনায় অভিযোগ পেয়ে অবৈধ সম্পদদের অনুসন্ধানে নামে দুদক।

 

আরও জানা গেছে, অনুসন্ধানে নোয়াখালী পৌরসভা এলাকা, ফেনী ও ঢাকা জেলায় আলমগীর-নাজমুন নাহার দম্পতির নামে ৭কোটি টাকারও বেশি অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া যায়। এছাড়াও ভূয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকে হিসাব খুলে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা অবৈধ লেনদেন করেন। অবৈধ সম্পদ অর্জন প্রতারনা ও জালিয়াতির অপরাধে তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের হয়। গত ২০১৯সালের ৫আগস্ট দুদক নোয়াখালী কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক সুবেল আহম্মেদ মাইজদী শহরের কৃষ্ণরামপুর পল্লবী সরকারি আবাসিক এলাকা থেকে আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে। আলমগীর দুদকের এ গ্রেপ্তারের প্রতি চ্যালেঞ্জ করে দূর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও সহাকারি পরিচালক সুবেল আহম্মদকে উকিল নোটিশ পাঠায়।

 

এ বিষয়ে আলমগীর জানান, চার্জশিট দাখিলের বিষয়টি তিনি শুনেছেন।

 

দুদক নোয়াখালী উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বছর আগস্ট মাসে মোহাম্মদ আলমগীর ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ ১বছর তদন্ত শেষে তার ও তার স্ত্রীর নামে বেনামে ৭ কোটি ১৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬২৫ টাকার অবৈধ সম্পদ, প্রতারণা মূলকভাবে মানি লন্ড্রারিং কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকা, ঘুষ ও দূর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আয় এবং ব্যাংক হিসেবে ৩৭কোটি টাকার অবৈধ লেনেদেনের প্রমাণ মিলেছে।