ঢাকা ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

ভাঙা কুটিরে মানবেতর জীবন যাপন, একটি ঘরের আকুতি বাচ্চু’র

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৪২:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ৩৭৪৯ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফেনী প্রতিনিধি:

 

বিয়ের উপযুক্ত তিন কণ্যা সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ভাঙ্গা কুটিরের একটি অপরিচ্ছন্ন স্যাঁতস্যাতে রুমে মানবেতর জীবন যাপন করছেন প্রবীন ত্যাগী ও দলপাগল আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ বাচ্চু।

জীবন যৌবনের সোনালী দিনগুলো দলের জন্য উৎস্বর্গ করা এই তৃণমূল নেতা ছোট কাল থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। বগাদানা ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে তার নাম অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

বিগত বিএনপি জামায়াত সরকারের আমলে তার নামে ১৭টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা হয়েছিলো এবং তিনি ১৯ মাস জেল খেটেছিলেন। গত ইউপি নির্বাচনে ওয়ার্ড মেম্বার পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন কিন্তু আর্থিক দুরবস্থার কারণে এগুতে পারেননি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বগাদানা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আলমপুর গ্রামের এনায়েত উল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ উল্লাহর টিনের তৈরী বসত ঘরটি তিন বছর আগে ঝড়ের কারনে ভেঙ্গে যায়। আর্থিক দণ্যদশার কারনে তিনি পুনরায় ঘর নির্মান করতে পারেননি, একটি ঘর অথবা সরকারি ত্রানের টিন পাওয়ার জন্য তিনি বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে বার বার গিয়েও কোন ফল না পেয়ে পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেন।

বাচ্চুর ঘরের বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করতে উপজেলা চেয়ারম্যান আবেদনটি ইউনিয়ন পরিষদে পাঠান, কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কয়েকজন সরকারি ঘর পেলেও অজানা কারনে বাচ্চুর জন্য ঘর বরাদ্ধ হয়নি। বার বার ঘুরে ফিরে হতাশ হয়ে বাচ্চু জেলা পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান আজিজ আহমদ চৌধুরীর সাথে সাক্ষাত করে তার ভাঙা ঘরে মানবেতর জীবন যাপনের কথা জানান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাচ্চু কে আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়ার আগেই তিনি অসুস্থ্য হয়ে যান এবং পরে মারা যান, যার কারনে জেলা পরিষদ থেকেও ঘর বা অনুদান পাওয়ার সম্বাবনা তিরোহিত হয়।

মোহাম্মদ উল্লাহ বাচ্চুর আকুতি, যে দলের জন্য তিনি জীবনের সৌনালী দিনগুলো ব্যায় করেছেন সেই দল টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায়, তার দৈন্যদশায় এই মানবেতর জীবনে বিয়ের উপযুক্ত তিনজন কন্যা সন্তানসহ পরিবার নিয়ে মাথাঘোঁজার মত নূন্যতম একটি ঘর যেন তাকে দেয়া হয়। একটি ঘর কিংবা সরকারি ত্রানের টিন জন্য বারবার তালিকায় নাম দিলেও চেয়ারম্যান প্রতিপক্ষ ভাবায় ফাইল গায়েব হয়ে যাওয়ার অভিযোগ তোলেন বাচ্চু।

মোহাম্মদ উল্লাহ বাচ্চুর বিষয়ে জানতে চাইলে বাগাদানা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন বাবুল বলেন, ঘর বরাদ্ধের জন্য বাচ্চুর নাম আমি পরিষদে পাঠিয়েছি এবং চেয়ারম্যানকে বিশেষ অনুরোধ করেছি।

বাচ্চুর মানবেতর জীবন যাপনের বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরদ-ই খুদা মোহাম্মদ ইসহাক খোকন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

ভাঙা কুটিরে মানবেতর জীবন যাপন, একটি ঘরের আকুতি বাচ্চু’র

আপডেট সময় : ০৭:৪২:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

ফেনী প্রতিনিধি:

 

বিয়ের উপযুক্ত তিন কণ্যা সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ভাঙ্গা কুটিরের একটি অপরিচ্ছন্ন স্যাঁতস্যাতে রুমে মানবেতর জীবন যাপন করছেন প্রবীন ত্যাগী ও দলপাগল আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ বাচ্চু।

জীবন যৌবনের সোনালী দিনগুলো দলের জন্য উৎস্বর্গ করা এই তৃণমূল নেতা ছোট কাল থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। বগাদানা ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে তার নাম অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

বিগত বিএনপি জামায়াত সরকারের আমলে তার নামে ১৭টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা হয়েছিলো এবং তিনি ১৯ মাস জেল খেটেছিলেন। গত ইউপি নির্বাচনে ওয়ার্ড মেম্বার পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন কিন্তু আর্থিক দুরবস্থার কারণে এগুতে পারেননি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বগাদানা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আলমপুর গ্রামের এনায়েত উল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ উল্লাহর টিনের তৈরী বসত ঘরটি তিন বছর আগে ঝড়ের কারনে ভেঙ্গে যায়। আর্থিক দণ্যদশার কারনে তিনি পুনরায় ঘর নির্মান করতে পারেননি, একটি ঘর অথবা সরকারি ত্রানের টিন পাওয়ার জন্য তিনি বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে বার বার গিয়েও কোন ফল না পেয়ে পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেন।

বাচ্চুর ঘরের বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করতে উপজেলা চেয়ারম্যান আবেদনটি ইউনিয়ন পরিষদে পাঠান, কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কয়েকজন সরকারি ঘর পেলেও অজানা কারনে বাচ্চুর জন্য ঘর বরাদ্ধ হয়নি। বার বার ঘুরে ফিরে হতাশ হয়ে বাচ্চু জেলা পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান আজিজ আহমদ চৌধুরীর সাথে সাক্ষাত করে তার ভাঙা ঘরে মানবেতর জীবন যাপনের কথা জানান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাচ্চু কে আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়ার আগেই তিনি অসুস্থ্য হয়ে যান এবং পরে মারা যান, যার কারনে জেলা পরিষদ থেকেও ঘর বা অনুদান পাওয়ার সম্বাবনা তিরোহিত হয়।

মোহাম্মদ উল্লাহ বাচ্চুর আকুতি, যে দলের জন্য তিনি জীবনের সৌনালী দিনগুলো ব্যায় করেছেন সেই দল টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায়, তার দৈন্যদশায় এই মানবেতর জীবনে বিয়ের উপযুক্ত তিনজন কন্যা সন্তানসহ পরিবার নিয়ে মাথাঘোঁজার মত নূন্যতম একটি ঘর যেন তাকে দেয়া হয়। একটি ঘর কিংবা সরকারি ত্রানের টিন জন্য বারবার তালিকায় নাম দিলেও চেয়ারম্যান প্রতিপক্ষ ভাবায় ফাইল গায়েব হয়ে যাওয়ার অভিযোগ তোলেন বাচ্চু।

মোহাম্মদ উল্লাহ বাচ্চুর বিষয়ে জানতে চাইলে বাগাদানা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন বাবুল বলেন, ঘর বরাদ্ধের জন্য বাচ্চুর নাম আমি পরিষদে পাঠিয়েছি এবং চেয়ারম্যানকে বিশেষ অনুরোধ করেছি।

বাচ্চুর মানবেতর জীবন যাপনের বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরদ-ই খুদা মোহাম্মদ ইসহাক খোকন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।