ঢাকা ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

নোয়াখালীতে কিশোরী ধর্ষণ, ১৫দিন পর মামলা, গ্রেপ্তার-১

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১৮:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অক্টোবর ২০২০ ২৬৯৯ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালী পুুলিশ সুপার মো: আলমগীর হোসেনের হস্তক্ষেপে জেলার সুবর্ণচর উপজেলায় কিশোরী ধর্ষণের ঘটনার ১৫ দিন পর মামলা নিয়েছে পুলিশ। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষক আরিফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মামলায় ধর্ষন ঘটনার সালিশদার মাহে আলম মেম্বারকে আসামী করা হয়নি।  
শনিবার রাতে চরজব্বর থানায় ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
কিশোরীর পরিবার জানায়, সোলেমান বাজার এলাকার আরিফ হোসেন গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে কিশোরীকে বাড়ীর বাইরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ২৮ সেপ্টেম্বর পুনঃরায় আবারও কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরদিন তার পরিবার চরজব্বার থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ লিখে ওসি শাহেদ উদ্দিনের কাছে গেলে তিনি অভিযোগ না নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সালিশের মাধ্যমে ঘটনাটি মীমাংসা করার কথা বলে ফিরিয়ে দেন। এরপর তিনি চরক্লার্ক ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য মাহে আলম মেম্বারকে ঘটনাটি জানান। তিনি গত ৪অক্টোবর স্থানীয় সোলেমান বাজারে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন। এতে দুই শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ ঘটনার বর্ণনা দিতে বাধ্য করা হয়। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে কিশোরীটি।
সালিশে আরিফ ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করলে মাহে আলম তাকে আলাদা ডেকে নিয়ে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে মীমাংসার কথা বললে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন বলেও জানান কিশোরীর মা।
বিষয়টি নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো: আলমগীর হোসেন শনিবার বিকালে জানতে পেরে তাৎক্ষনিক চরজব্বার থানার ওসিকে  ঘটনা তদন্ত করে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে শনিবার রাতেই নির্যাতনের শিকার মেয়েটি ও তার পরিবারকে থানায় ডেকে নিয়ে মামলা নেন। এরপর ধর্ষক আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার বিকালে মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এবং ২২ধারায় জবানবন্দির জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়।
এব্যপারে ইউপি সদস্য মাহে আলম সালিশ করার কথা স্বীকার করলেও টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেননি বলে দাবি করেন।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহেদ উদ্দিন কিশোরীর মায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ধর্ষণের শিকার মেয়েটির সঙ্গে ছেলেটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কেউ তার কাছে ধর্ষণ ঘটনার অভিযোগ নিয়ে আসেনি। শনিবার রাতে মেয়েটি বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিলে ধর্ষক আরিফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো: আলমগীর হোসেন বলেন, ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনায় মামলা দায়ের হবে না তা কি করে হয়? এঘটনা সালিশ যোগ্য না। যারা ধর্ষণের ঘটনায় সালিশ করেছে তারাও অপরাধী। তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

নোয়াখালীতে কিশোরী ধর্ষণ, ১৫দিন পর মামলা, গ্রেপ্তার-১

আপডেট সময় : ১১:১৮:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অক্টোবর ২০২০
নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালী পুুলিশ সুপার মো: আলমগীর হোসেনের হস্তক্ষেপে জেলার সুবর্ণচর উপজেলায় কিশোরী ধর্ষণের ঘটনার ১৫ দিন পর মামলা নিয়েছে পুলিশ। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষক আরিফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মামলায় ধর্ষন ঘটনার সালিশদার মাহে আলম মেম্বারকে আসামী করা হয়নি।  
শনিবার রাতে চরজব্বর থানায় ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
কিশোরীর পরিবার জানায়, সোলেমান বাজার এলাকার আরিফ হোসেন গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে কিশোরীকে বাড়ীর বাইরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ২৮ সেপ্টেম্বর পুনঃরায় আবারও কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরদিন তার পরিবার চরজব্বার থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ লিখে ওসি শাহেদ উদ্দিনের কাছে গেলে তিনি অভিযোগ না নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সালিশের মাধ্যমে ঘটনাটি মীমাংসা করার কথা বলে ফিরিয়ে দেন। এরপর তিনি চরক্লার্ক ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য মাহে আলম মেম্বারকে ঘটনাটি জানান। তিনি গত ৪অক্টোবর স্থানীয় সোলেমান বাজারে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন। এতে দুই শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ ঘটনার বর্ণনা দিতে বাধ্য করা হয়। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে কিশোরীটি।
সালিশে আরিফ ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করলে মাহে আলম তাকে আলাদা ডেকে নিয়ে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে মীমাংসার কথা বললে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন বলেও জানান কিশোরীর মা।
বিষয়টি নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো: আলমগীর হোসেন শনিবার বিকালে জানতে পেরে তাৎক্ষনিক চরজব্বার থানার ওসিকে  ঘটনা তদন্ত করে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে শনিবার রাতেই নির্যাতনের শিকার মেয়েটি ও তার পরিবারকে থানায় ডেকে নিয়ে মামলা নেন। এরপর ধর্ষক আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার বিকালে মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এবং ২২ধারায় জবানবন্দির জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়।
এব্যপারে ইউপি সদস্য মাহে আলম সালিশ করার কথা স্বীকার করলেও টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেননি বলে দাবি করেন।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহেদ উদ্দিন কিশোরীর মায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ধর্ষণের শিকার মেয়েটির সঙ্গে ছেলেটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কেউ তার কাছে ধর্ষণ ঘটনার অভিযোগ নিয়ে আসেনি। শনিবার রাতে মেয়েটি বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিলে ধর্ষক আরিফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো: আলমগীর হোসেন বলেন, ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনায় মামলা দায়ের হবে না তা কি করে হয়? এঘটনা সালিশ যোগ্য না। যারা ধর্ষণের ঘটনায় সালিশ করেছে তারাও অপরাধী। তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।