নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর সোনামুড়ীতে মৃত্যুর রহস্য উৎঘাটনের জন্য দাফনের পনের দিন পর এক নবজাতকের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সোনাইমুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিসান আহাম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে, একই দিন দুপুরে উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাছিরগাও গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে নবজাতকের লাশ উত্তোলন করে পুলিশ।
আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর কামরুজ্জামান কবির এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিসান আহাম্মেদ সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ওই লাশ তোলা হয়। নবজাতক শিশুটি বাছিরগাও গ্রামের সামছুল আলমের মেয়ে।
মামলা ও ভুক্তভোগী সুত্রে জানা যায়, উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের বাছিরগাও গ্রামের সামসুল আলমের নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নয়ন মনির প্রসব ব্যাথা দেখা দিলে গত (১ অক্টোবর) রাত ১ টার দিকে উপজেলার অল স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে শারীরিক পরীক্ষার পর রুগীর রক্তস্বল্পতা থাকায় প্যাথলজিষ্ট মোহাম্মদ রাসেল রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে বি পজিটিভ রিপোর্ট দেয়। রিপোর্ট অনুযায়ী রক্তের ব্যবস্থা করা হয়। শরীরে রক্ত দেওয়ার কিছুক্ষণ পরে নয়ন মনি চিৎকার শুরু করে। এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পনুরায় আরেক ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পর অবস্থার অবনতি ও জরায়ুতে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
এমবতাবস্থায় কর্তব্যরত ডাক্তার নয়ন মনি কে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাইজদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। নয়ন মনির পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নয়ন মনির রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ বলে জানায়। পরে সেখানকার ডাক্তার জানায় ভুল চিকিৎসায় নয়ন মনি ও তার শিশুটির অবস্থার অবনতি হয় এবং শিশুটির মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নয়ন মনির স্বামী ও মৃত নবজাতকের বাবা সামসুল আলম বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করলে আদালতের নির্দেশে নবজাতকের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
শামসুউদ্দিন অভিযোগ করেন, সোনাইমুড়ী উপজেলা জামায়াতে ইসলামের আমির ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে অনুমোদন ছাড়া হাসপাতাল পরিচালনা করে আসছে। সেখানে নির্ধারিত কোন প্রশিক্ষিত প্যাথলজিষ্ট, ডিপ্লমাধারী নার্স নেই।
সোনাইমুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিসান আহাম্মেদ জানান, আদালতের নির্দেশে লাশ কবর থেকে তোলা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে নবজাতকের মৃত্যুর রহস্য উৎঘাটন সম্ভব হবে।