ঢাকা ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

সেনবাগে মামলা তুলে নিতে বাদী ও সাক্ষীকে মারধর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৮:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ৪৫৪২ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার লেমুয়া গ্রামে মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় জাহিদ হাসান নামের এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের ওপর অতর্কিত হামলা ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা মামলার সাক্ষী হাফেজ আহমদকেও মারধর করেছে। স্থানীয় সালেহ আহমেদ ও জালাল আহমেদ এ হামলা চালিয়েছে বলে আহতরা অভিযোগ করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে লেমুয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধার এছাক মোল্লা বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত জাহিদ হাসান (২৮) ও হাফেজ আহমদকে (৪৫) সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহত জাহিদ হাসান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা এছাক মোল্লার সন্তান।

জানা যায়, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে লকডাউনের সময় বহিরাগত শ্রমিক এনে ভবন নির্মাণের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন ছালেহ আহমদ ও জালাল আহমদ। অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে এসে নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। এতে প্রতিবেশীদের ইন্ধন আছে সন্দেহে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা এছাক মোল্লার পরিবারের এক সদস্যের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেন। ঘটনায় সালেহ আহমেদ, জালাল আহমেদ, দুলাল হোসেন ও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন (জিআর-৯২৪/২২০) মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জাহিদ হাসান। বর্তমানে মামলাটি নোয়াখালী অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামীরা জামিনে বের হয়ে এসে মামলা তুলে নিতে বাদী জাহিদ হাসানকে চাপ দিতে থাকে। গত ৩০ মে ২০২০ সালে বাদীকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয় আসামিরা।

আরও জানা গেছে, মামলা পুলিশি তদন্তে হুমকির ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে গত ৩ ডিসেম্বর নোয়াখালীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম কাজী সোনিয়া আক্তার আসামিদের সতর্ক করেন। কিন্তু আদালতের এ আদেশ অমান্য করে বৃহস্পতিবার সকালে বাজারে যাওয়ার পথে জাহিদ হাসানের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আসামিরা।

জাহিদ হাসান অভিযোগ করে বলেন, আসামিরা বিভিন্ন সময় মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছিল। মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে মারধর করে। এসময় সঙ্গে থাকা আগের মামলার সাক্ষী হাফেজ আহমেদকেও মারধর করে ও পরিবারের সদস্যদের গুম করার হুমকি দেয়। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারী ও আসামী দুলাল আহমেদ সেনবাগে পেট্রোল বোমা হামলা, নাশকতা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ছয়টি মামলার এজাহারভুক্ত আসামী। তার এসব নাশকতামূলক কাজে জালাল আহমেদ ও ছালেহ আহমেদ অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকেন।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হামলার ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এর আগেও বাদীর ওপর একই ব্যক্তিরা হামলা চালিয়েছিল। ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সেনবাগে মামলা তুলে নিতে বাদী ও সাক্ষীকে মারধর

আপডেট সময় : ০৮:৫৮:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার লেমুয়া গ্রামে মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় জাহিদ হাসান নামের এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের ওপর অতর্কিত হামলা ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা মামলার সাক্ষী হাফেজ আহমদকেও মারধর করেছে। স্থানীয় সালেহ আহমেদ ও জালাল আহমেদ এ হামলা চালিয়েছে বলে আহতরা অভিযোগ করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে লেমুয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধার এছাক মোল্লা বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত জাহিদ হাসান (২৮) ও হাফেজ আহমদকে (৪৫) সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহত জাহিদ হাসান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা এছাক মোল্লার সন্তান।

জানা যায়, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে লকডাউনের সময় বহিরাগত শ্রমিক এনে ভবন নির্মাণের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন ছালেহ আহমদ ও জালাল আহমদ। অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে এসে নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল। এতে প্রতিবেশীদের ইন্ধন আছে সন্দেহে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা এছাক মোল্লার পরিবারের এক সদস্যের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেন। ঘটনায় সালেহ আহমেদ, জালাল আহমেদ, দুলাল হোসেন ও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন (জিআর-৯২৪/২২০) মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জাহিদ হাসান। বর্তমানে মামলাটি নোয়াখালী অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামীরা জামিনে বের হয়ে এসে মামলা তুলে নিতে বাদী জাহিদ হাসানকে চাপ দিতে থাকে। গত ৩০ মে ২০২০ সালে বাদীকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয় আসামিরা।

আরও জানা গেছে, মামলা পুলিশি তদন্তে হুমকির ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে গত ৩ ডিসেম্বর নোয়াখালীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম কাজী সোনিয়া আক্তার আসামিদের সতর্ক করেন। কিন্তু আদালতের এ আদেশ অমান্য করে বৃহস্পতিবার সকালে বাজারে যাওয়ার পথে জাহিদ হাসানের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আসামিরা।

জাহিদ হাসান অভিযোগ করে বলেন, আসামিরা বিভিন্ন সময় মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছিল। মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে মারধর করে। এসময় সঙ্গে থাকা আগের মামলার সাক্ষী হাফেজ আহমেদকেও মারধর করে ও পরিবারের সদস্যদের গুম করার হুমকি দেয়। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারী ও আসামী দুলাল আহমেদ সেনবাগে পেট্রোল বোমা হামলা, নাশকতা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ছয়টি মামলার এজাহারভুক্ত আসামী। তার এসব নাশকতামূলক কাজে জালাল আহমেদ ও ছালেহ আহমেদ অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকেন।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হামলার ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এর আগেও বাদীর ওপর একই ব্যক্তিরা হামলা চালিয়েছিল। ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।