ঢাকা ০৭:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

স্বামী হত্যার দায়ে নোয়াখালীতে স্ত্রীর মৃত্যুদন্ড, শ্বশুর-শাশুড়ীর যাবজ্জীবন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫১:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১ ৯৯২ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

 

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শহিদ উল্যা হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী বিবি কুলসুমকে মৃত্যুদন্ড, শ্বশুর আবুল হোসেন ও শাশুড়ী লিলি বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে আবুল হোসেন ও লিলি বেগমকে ৫০হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়েছে।

 

মঙ্গলবার বিকালে নোয়াখালী দায়রা জজ আদলতের বিজ্ঞ বিচারক সালেহ উদ্দিন আহমদ এ রায় প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন, নিহত শহিদের স্ত্রী বিবি কুলসুম, শ্বশুর শহিদ উল্যা ও শাশুড়ী লিলি বেগম। তারা সবাই বেগমগঞ্জ উপজেলার মধ্য নরোত্তমপুর গ্রামের ওয়াহেদ আলী সর্দার বাড়ীর বাসিন্দা।

 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শহিদ উল্যা ১৩বছর বয়সে দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে অন্ধ হয়ে যান। সবকিছু জেনে বিবি কুলসুম শহিদকে বিয়ে করেন। শহিদের বাবা মা ঢাকায় থাকতেন। তাদের ঢাকায় ৫তলা দালান ছিল। নিহতের প্রবাসী ভাইরা প্রায় সময় তার জন্য টাকা পাঠাতো। কুলসুম ও তার মা-বাবা মিলে ওই টাকা এবং ঢাকার ফ্ল্যাটবাড়ী আত্মসাতের জন্যই শহিদকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এর সূত্র ধরে গত ২০১৮সালের ৩মে শহিদ উল্যার স্ত্রী কুলসুম তাকে নাস্তা করার কথা বলে ঘরে ডেকে এনে তার গায়ে গরম তেল ঢেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এরআগে কৌশলে বাড়ীর সকল মূল্যবান আসবাবপত্র ও সন্তানদের তার বাবার বাড়ীতে রেখে আসে কুলসুম। পরে শহিদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল, পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসকার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে নিয়ে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১২মে মারা যান শহিদ। শহিদের বাবা-মা বৃদ্ধ হওয়ায় তারা ঢাকায় থাকতেন। তার ভাইরাও থাকতেন দেশের বাহিরে। তাই এ ঘটনায় শহিদের ভগ্নিপতি সাহেব উল্যাহ বাদী হয়ে নিহতের স্ত্রী বিবি কুলসুম, শ্বশুর আবুল হোসেন ও শাশুড়ী লিলি বেগমকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদালত আসমীদের বিরুদ্ধে এ রায় প্রদান করেন। রাষ্ট্র পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর এড. গুলজার আহমেদ জুয়েল এবং আসামী পক্ষে এড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, এড. আবদুর রহমান ও এড. স্বপন চন্দ্র পাল মামলা পরিচালনা করেন।

 

এড. গুলজার আহমেদ জুয়েল জানান, দীর্ঘ শুনানী শেষে আদালত মঙ্গলবার মামলার প্রধান আসামী ও নিহতের স্ত্রী বিবি কুলসুমের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ড এবং শ্বশুর ও শাশুড়ীর যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন। রায়ের সময় আসামী আবুল হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে মামলার প্রধান আসামী বিবি কুলসুম ও শাশুড়ি লিলি বেগম পলাতক রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

স্বামী হত্যার দায়ে নোয়াখালীতে স্ত্রীর মৃত্যুদন্ড, শ্বশুর-শাশুড়ীর যাবজ্জীবন

আপডেট সময় : ০৯:৫১:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

 

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শহিদ উল্যা হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী বিবি কুলসুমকে মৃত্যুদন্ড, শ্বশুর আবুল হোসেন ও শাশুড়ী লিলি বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে আবুল হোসেন ও লিলি বেগমকে ৫০হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়েছে।

 

মঙ্গলবার বিকালে নোয়াখালী দায়রা জজ আদলতের বিজ্ঞ বিচারক সালেহ উদ্দিন আহমদ এ রায় প্রদান করেন। দন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন, নিহত শহিদের স্ত্রী বিবি কুলসুম, শ্বশুর শহিদ উল্যা ও শাশুড়ী লিলি বেগম। তারা সবাই বেগমগঞ্জ উপজেলার মধ্য নরোত্তমপুর গ্রামের ওয়াহেদ আলী সর্দার বাড়ীর বাসিন্দা।

 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শহিদ উল্যা ১৩বছর বয়সে দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে অন্ধ হয়ে যান। সবকিছু জেনে বিবি কুলসুম শহিদকে বিয়ে করেন। শহিদের বাবা মা ঢাকায় থাকতেন। তাদের ঢাকায় ৫তলা দালান ছিল। নিহতের প্রবাসী ভাইরা প্রায় সময় তার জন্য টাকা পাঠাতো। কুলসুম ও তার মা-বাবা মিলে ওই টাকা এবং ঢাকার ফ্ল্যাটবাড়ী আত্মসাতের জন্যই শহিদকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এর সূত্র ধরে গত ২০১৮সালের ৩মে শহিদ উল্যার স্ত্রী কুলসুম তাকে নাস্তা করার কথা বলে ঘরে ডেকে এনে তার গায়ে গরম তেল ঢেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এরআগে কৌশলে বাড়ীর সকল মূল্যবান আসবাবপত্র ও সন্তানদের তার বাবার বাড়ীতে রেখে আসে কুলসুম। পরে শহিদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল, পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসকার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে নিয়ে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১২মে মারা যান শহিদ। শহিদের বাবা-মা বৃদ্ধ হওয়ায় তারা ঢাকায় থাকতেন। তার ভাইরাও থাকতেন দেশের বাহিরে। তাই এ ঘটনায় শহিদের ভগ্নিপতি সাহেব উল্যাহ বাদী হয়ে নিহতের স্ত্রী বিবি কুলসুম, শ্বশুর আবুল হোসেন ও শাশুড়ী লিলি বেগমকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদালত আসমীদের বিরুদ্ধে এ রায় প্রদান করেন। রাষ্ট্র পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর এড. গুলজার আহমেদ জুয়েল এবং আসামী পক্ষে এড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, এড. আবদুর রহমান ও এড. স্বপন চন্দ্র পাল মামলা পরিচালনা করেন।

 

এড. গুলজার আহমেদ জুয়েল জানান, দীর্ঘ শুনানী শেষে আদালত মঙ্গলবার মামলার প্রধান আসামী ও নিহতের স্ত্রী বিবি কুলসুমের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ড এবং শ্বশুর ও শাশুড়ীর যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন। রায়ের সময় আসামী আবুল হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে মামলার প্রধান আসামী বিবি কুলসুম ও শাশুড়ি লিলি বেগম পলাতক রয়েছে।