ঢাকা ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

বকেয়া বেতন ভাতার দাবীতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল কর্মচারীদের অবস্থান ধর্মঘট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:০৪:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মে ২০২১ ৭৭৪৩ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নোয়াখালী প্রতিবেদক:

 

ঠিকাদারের মাধ্যমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়োগকৃত আউটসোর্সিং এর অর্ধশত কর্মচারীরা তাদের বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে কাজ বন্ধ রেখে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন।

শনিবার (৮ মে) সকাল ১০টা দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরী বিভাগ চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করেন। পরে হাসপাতালের উপ-পরিচালকের হস্তক্ষেপে কর্মচারীরা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে ফিরে যান। এ ঘটনায় বেতন ভাতা বঞ্চিত কর্মচারীদের মাঝে তীব্র অস্তোষ বিরাজ করছে।

জানা যায়, ২০২০সালের জানুয়ারী মাসে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে দরপত্রের মাধ্যমে আউট সোর্সিং এ ২০জন কর্মচারী সরবরাহ করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রোমেল এন্টার প্রাইজ। দরপত্র অনুযায়ী এদের প্রত্যেকের মাসিক বেতন ভাতা ১৬ হাজার ১৩০টাকা। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের চাহিদা বেশি থাকায় ২০ জনের বেতন ভাতা দিয়ে ৬৩জন কর্মচারী নিয়োগ দেন। এর ফলে একেক জন কর্মচারী মাসে ৫হাজার টাকার বেশি পান না। এর পরে ও গত ১ বছর যাবৎ তারা কোন বেতন ভাতা না পেয়ে কাজ করে আসছেন। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কর্মচারীরা তাদের বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের দাবীতে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাজে যোগদান না করে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।

আউট সোর্সিং এর নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারী সুজন জানান গত ১ বছর যাবৎ তিনি ও তার সহকর্মীরা হাসপাতালে নিরলস ভাবে কাজ করে আসলে ও কোন বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। এতে করে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

গাইনী ওয়ার্ডে কর্মরত নারী আয়া শিল্পী জানান বিগত ১ বছর যাবৎ কোন বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। আর কয়েকদিন পরেই ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বেতন ভাতা না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবেন। তিনি ঈদের আগেই তার বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের দাবী জানান। একই কথা বললেন কর্মচারী জহির, নুরহোসেন, মান্নান ও জসিম।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রোমেল এন্টার প্রাইজের স্বত্ত্বাধীকারী আল মাহমুদ হোসেন রোমেল এর সঙ্গে কথা বললে তিনি কর্মচারীদের বেতন ভাতা বকেয়া থাকা ও ধর্মঘটের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দরপত্রের মাধ্যমে আমি ২০ জন লোকবল সরবরাহ করি কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের লোকের চাহিদা বেশি থাকায় ২০ জনের পরিবর্তে ৬৩জন লোক নিয়োগ দিয়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে বিল না আসায় তিনি কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধ করতে পারছেন না। তবে ঈদের আগে কিছু টাকা পরিশোধ করবেন। ঈদের পরে বিল পেলে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করা হবে।

স্বাচিপ নোয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহাবুবুর রহমান বলেন, দরপত্র নিয়মানুযায়ী ঠিকাদার প্রতিমাসে আউট সোর্সিং এ নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারীদের বেতন ভাতার বিল পরিশোধ করবেন। কিন্তু কি কারনে তিনি গত ১ বছর ধরে কর্মচারীদের
বেতন বিল আটকে রেখেছেন তা তার বোধগম্য নয়।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. শায়েলা শাহারিয়া জাহান বলেন, অবস্থান ধর্মঘটরত কর্মচারীদের বেতন ভাতা ঈদের আগে পরিশোদের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি । ঈদের আগেই কর্মচারীরা তাদের বেতন ভাতার একটি অংশ পাবেন বলে তিনি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

বকেয়া বেতন ভাতার দাবীতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল কর্মচারীদের অবস্থান ধর্মঘট

আপডেট সময় : ০৫:০৪:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মে ২০২১

নোয়াখালী প্রতিবেদক:

 

ঠিকাদারের মাধ্যমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়োগকৃত আউটসোর্সিং এর অর্ধশত কর্মচারীরা তাদের বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে কাজ বন্ধ রেখে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন।

শনিবার (৮ মে) সকাল ১০টা দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরী বিভাগ চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করেন। পরে হাসপাতালের উপ-পরিচালকের হস্তক্ষেপে কর্মচারীরা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে ফিরে যান। এ ঘটনায় বেতন ভাতা বঞ্চিত কর্মচারীদের মাঝে তীব্র অস্তোষ বিরাজ করছে।

জানা যায়, ২০২০সালের জানুয়ারী মাসে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে দরপত্রের মাধ্যমে আউট সোর্সিং এ ২০জন কর্মচারী সরবরাহ করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রোমেল এন্টার প্রাইজ। দরপত্র অনুযায়ী এদের প্রত্যেকের মাসিক বেতন ভাতা ১৬ হাজার ১৩০টাকা। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের চাহিদা বেশি থাকায় ২০ জনের বেতন ভাতা দিয়ে ৬৩জন কর্মচারী নিয়োগ দেন। এর ফলে একেক জন কর্মচারী মাসে ৫হাজার টাকার বেশি পান না। এর পরে ও গত ১ বছর যাবৎ তারা কোন বেতন ভাতা না পেয়ে কাজ করে আসছেন। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কর্মচারীরা তাদের বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের দাবীতে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাজে যোগদান না করে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।

আউট সোর্সিং এর নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারী সুজন জানান গত ১ বছর যাবৎ তিনি ও তার সহকর্মীরা হাসপাতালে নিরলস ভাবে কাজ করে আসলে ও কোন বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। এতে করে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

গাইনী ওয়ার্ডে কর্মরত নারী আয়া শিল্পী জানান বিগত ১ বছর যাবৎ কোন বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। আর কয়েকদিন পরেই ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বেতন ভাতা না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবেন। তিনি ঈদের আগেই তার বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের দাবী জানান। একই কথা বললেন কর্মচারী জহির, নুরহোসেন, মান্নান ও জসিম।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রোমেল এন্টার প্রাইজের স্বত্ত্বাধীকারী আল মাহমুদ হোসেন রোমেল এর সঙ্গে কথা বললে তিনি কর্মচারীদের বেতন ভাতা বকেয়া থাকা ও ধর্মঘটের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দরপত্রের মাধ্যমে আমি ২০ জন লোকবল সরবরাহ করি কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের লোকের চাহিদা বেশি থাকায় ২০ জনের পরিবর্তে ৬৩জন লোক নিয়োগ দিয়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে বিল না আসায় তিনি কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধ করতে পারছেন না। তবে ঈদের আগে কিছু টাকা পরিশোধ করবেন। ঈদের পরে বিল পেলে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করা হবে।

স্বাচিপ নোয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহাবুবুর রহমান বলেন, দরপত্র নিয়মানুযায়ী ঠিকাদার প্রতিমাসে আউট সোর্সিং এ নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারীদের বেতন ভাতার বিল পরিশোধ করবেন। কিন্তু কি কারনে তিনি গত ১ বছর ধরে কর্মচারীদের
বেতন বিল আটকে রেখেছেন তা তার বোধগম্য নয়।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. শায়েলা শাহারিয়া জাহান বলেন, অবস্থান ধর্মঘটরত কর্মচারীদের বেতন ভাতা ঈদের আগে পরিশোদের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি । ঈদের আগেই কর্মচারীরা তাদের বেতন ভাতার একটি অংশ পাবেন বলে তিনি জানান।