নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে ঘুষ দিতে অপারগতার জেরে এক সাংবাদিককে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
হেনস্তা ও মারধরের শিকার মো. করিম নুরী (৬৫) দৈনিক সবুজ নিশান নামের একটি পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে জেলায় কর্মরত। এ ঘটনায় তিনি বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি নির্বাহী প্রকৌশলী শাহদাত ইসলাম ও সহকারী প্রকৌশলী মো. শরিফুল ইসলামসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করেছেন।
সাংবাদিক মো. করিম নূরী জানান, তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে মো. করিম নূরী উল্লেখ করেন, তার ভাগনে বেগমগঞ্জ উপজেলার আমানতপুর গ্রামের মো. রাসেলের (৪৫) ভবনের জন্য বিউবোর বেগমগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে বিদ্যুৎ–সংযোগের জন্য আবেদন করেন। এরপর থেকে বিউবোর লোকজন আমাকে অস্বচ্ছ ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়। বুধবার দুপুরে বিদ্যুৎ অফিসে গেলে মিটার স্থাপন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেবার জন্য নগদ ৩ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করায় অতর্কিতে হামলা চালায়।
করিম নুরী জানান, কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভবনের নকশা দেখে একবার ৮টি, আরেকবার ১৬টি এবং সর্বশেষ ২৪টি মিটার বসাতে হবে বলে তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী শাহাদাত ইসলামের কক্ষে গেলে সেখানে কথা বলার একপর্যায়ে ঘুষ দাবির বিষয়টি ভাগনেকে কল করে জানানোর সময় কক্ষে থাকা বিউবোর কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামসহ কয়েকজন তার ওপর হামলা চালান। এ সময় তারা তার গলা টিপে ধরেন ও তাকে মারধর করেন।
ঘুষ দাবির অভিযোগ অস্বীকার করে বিউবোর বেগমগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহদাত ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, কিছু তথ্য ঘাটতির কারণেই বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তিনি বলেন, আবেদন ছিলো ৮ বাসার, আমার লোক গিয়ে দেখলো ৪ তলা বিল্ডিং ১৬ ফ্ল্যাট কিন্তু বাড়ির অনুমোদনে দেখা গেলো ৬ তলা তাই ২৪টি মিটার লাগবে বলায় তিনি ভেবেছেন আমরা ঘুষ দাবি করছি।
তিনি বলেন, নুরী সাহেব (মো. করিম নূরী) অফিসের ভেতরে খুব জোরে জোরে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে ওনার কাছে ঘুষ দাবি করা হয়েছে বলে মুঠোফোনে কাউকে জানাচ্ছিলেন। তাই একটু কথা–কাটাকাটি হয়েছে। ঘুষ দাবির অভিযোগ ভিত্তিহীন।
মারধর ও ১৭টি বিদ্যুৎ মিটারের কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার কক্ষের বাইরে হয়েছে কী না আমার জানা নেই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনিকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।