ঢাকা ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা ছিনতাই করেও এনসিপি সংগঠন হিসেবে ব্যর্থ হয়েছে: নাছির Blind Amjad receives Eid gift from Tarique Zia জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দৃষ্টি হারানো আমজাদ পেলো তারেক জিয়ার ঈদ উপহার ভাড়াটিয়ার দোকানে তালা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা School student murdered in trivial incident: Police unravel mystery নোয়াখালীতে তুচ্ছ ঘটনায় স্কুল ছাত্র খুন: রহস্য উদঘাটন করল পুলিশ তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে কবিরহাটের ইতালি মার্কেটে পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ নিখোঁজের ২ দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে কবিরহাটের পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ নিজ এলাকায় হামলার শিকার এনসিপি নেতা হান্নান মাসুদ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত-১৫

স্বজনদের আহাজারি

ঋণ করে লিবিয়ায় পাড়ি, ২৬ লাখে মুক্তি পাবে আব্দুর রব

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় : ০৮:৪১:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ২২৬ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জীবিকার তাগিদে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় তিন বছর আগে ঋণ করে লিবিয়ায় পাড়ি জমান নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার মো. আব্দুর রব (২৫)। দীর্ঘ ১২ দিন নিখোঁজ থাকার পর অপরিচিত নম্বর থেকে নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মাফিয়া চক্র মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করে ২৬ লাখ টাকা। সন্তানের এমন নির্মম নির্যাতনের পরিস্থিতি জানতে পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বাবা-মা।

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন…………

ভুক্তভোগী মো. আব্দুর রব জেলার কবিরহাট উপজেলার ২নং সুন্দলপুর ইউনিয়নের মধ্য সুন্দলপুর গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির মো. আব্দুর রহিমের ছেলে।

বিস্তারিত ভিডিওতে…………

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে জীবিকার তাগিদে ধারদেনা করে লিবিয়ায় পাড়ি জমান আব্দুর রব। তারপর ছোট ভাই আব্দুর রহমানকেও (২৩) লিবিয়ায় নিয়ে যান আব্দুর রব। সেখানে আল খামাছ পৌরসভায় একটি কোম্পানিতে দুই ভাই চাকরি করতেন। গত ১৪ জানুয়ারি কাজের উদ্দেশ্যে মিসালতা যাওয়ার সময় ভুয়ারা চেকপোস্টে পুলিশ আব্দুর রব, আব্দুর রহমানসহ মোট ৪ জনকে আটক করে। তারপর কাগজপত্র চেক করে তিনজনকে ছেড়ে দিলেও আব্দুর রবকে পুলিশ নিয়ে যায়। পরবর্তীতে যোগাযোগ করা হলে ত্রিপলি থানা পুলিশের কাছে আছে বললেও খোঁজখবর নিয়ে সেখানে আব্দুর রবের সন্ধান পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ ১২ দিন পর ২৬ জানুয়ারি একটি বাংলাদেশী ইমো নম্বর থেকে মাফিয়া চক্র জানায় আব্দুর রবকে তারা ২০ লাখ টাকায় পুলিশ থেকে কিনে নিয়েছেন। তাদেরকে ২৬ লাখ টাকা দিলে তারা আব্দুর রবকে ছেড়ে দেবেন। এরপর থেকে বাড়তে থাকে নির্যাতনের চিত্র। সেই নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে পরিবারের কাছে দ্রুত টাকা দেওয়ার জন্য দেওয়া হয় বাংলাদেশী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কয়েকটি নম্বর। ভিটেমাটি ছাড়া আব্দুর রবের বাবার কিছু নাই বলে আর্তনাদ করেই দিন পার করছেন তার বাবা-মা সহ পরিবারের সদস্যরা।

ভিডিও…………

আব্দুর রবের মা তাজনাহার বেগম বলেন, আমার স্বামীর দুই শতাংশের বসতভিটে ছাড়া আর কিছুই নেই। তারা আমার ছেলেকে মেরে আমাকে ভিডিও কল দেয়। আমার বুকটা ফেটে যায় কিন্তু আমি তো অসহায় মা। আমার কিছুই করার নাই। আমি ড. ইউনূস স্যারের কাছে সহযোগিতা চাই। আমার সন্তানকে আমি ফেরত চাই।

ভিডিওতে দেখতে ক্লিক করুন…………

আব্দুর রবের বড় বোন জান্নাতুল নাইম সোনিয়া বলেন, আমরা দুই বোন, দুই ভাই। আমি বড় সন্তান তারপর আব্দুর রব। সুদের ওপর টাকা নিয়ে দুই ভাইকে বিদেশ পাঠানো হয়েছে। মাফিয়া চক্র একটি ঘরে বন্দি করে মধ্যযুগীয় কায়দায় আমার ভাইকে নির্যাতন করে আমাদের কাছে ২৬ লাখ টাকা দাবি করছে। টাকা না দিলে নির্যাতন করে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত ফোন দিয়ে চক্রটি আমার ভাইয়ের ওপর নির্যাতনের দৃশ্য দেখায়। নির্যাতনের দৃশ্য দেখতে না পেরে আমরা সবাই কান্নায় ভেঙে পড়ি। আমার বাবা-মা অজ্ঞান হয়ে যান।

বিস্তারিত ভিডিওতে দেখতে ক্লিক করুন…………

আব্দুর রবের বাবা আব্দুর রহিম বলেন, আমি অসুস্থ মানুষ, কোনো কাজ করতে পারিনা। মাফিয়া চক্র ২৬ লাখ টাকা দাবি করছে অথচ ২৬ হাজার টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য আমার নাই। সন্তানদের বিদেশে পাঠাতে ঋণ করেছি তার টাকা আজও পরিশোধ করতে পারিনি। সন্তানের এমন নির্যাতনের অডিও-ভিডিও দেখলে জ্ঞান থাকে না। ড. ইউনূস স্যারের কাছে সহযোগিতা চাই। আমরা সারাজীবন উনার জন্য দোয়া করব।

ভিডিও

স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক হোসেন ও বায়োবৃদ্ধ এক ব্যাক্তি বলেন, অপহৃত আব্দুর রব অত্যন্ত নম্র ভদ্র ছেলে। লিবিয়ার পুলিশ দালালদের কাছে তাকে বিক্রি করে দিয়েছে। সেই চক্রের সঙ্গে বাংলাদেশিরাও আছে। তারা তাদের দেশি বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছে। যদি সরকার যাচাই-বাছাই করে তাহলে মাফিয়া চক্রটিকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। তাহলে এভাবে কোনো মা-বাবার সন্তানকে নির্যাতিত হতে হবে না আমরা চাই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস স্যার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

বিস্তারিত ভিডিওতে দেখতে ক্লিক করুন…………

নোয়াখালী ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সহকারী পরিচালক খুরশীদ আলম বলেন, আমি বিষয়টা যেনে মর্মাহত হয়েছি। ভুক্তভোগী পরিবার আমাদের অফিসে একটা অভিযোগ জমা দিয়েছে। সেটি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে লিবিয়া দূতাবাসের কাছে প্রেরণ করা হবে। আশা করি সরকার এই রেমিট্যান্স যোদ্ধার পাশে দাঁড়াবে। তাতে সন্তান তার বাবা-মায়ের কাছে আসতে পারবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক

স্বজনদের আহাজারি

ঋণ করে লিবিয়ায় পাড়ি, ২৬ লাখে মুক্তি পাবে আব্দুর রব

আপডেট সময় : ০৮:৪১:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জীবিকার তাগিদে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় তিন বছর আগে ঋণ করে লিবিয়ায় পাড়ি জমান নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার মো. আব্দুর রব (২৫)। দীর্ঘ ১২ দিন নিখোঁজ থাকার পর অপরিচিত নম্বর থেকে নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মাফিয়া চক্র মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করে ২৬ লাখ টাকা। সন্তানের এমন নির্মম নির্যাতনের পরিস্থিতি জানতে পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বাবা-মা।

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন…………

ভুক্তভোগী মো. আব্দুর রব জেলার কবিরহাট উপজেলার ২নং সুন্দলপুর ইউনিয়নের মধ্য সুন্দলপুর গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির মো. আব্দুর রহিমের ছেলে।

বিস্তারিত ভিডিওতে…………

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে জীবিকার তাগিদে ধারদেনা করে লিবিয়ায় পাড়ি জমান আব্দুর রব। তারপর ছোট ভাই আব্দুর রহমানকেও (২৩) লিবিয়ায় নিয়ে যান আব্দুর রব। সেখানে আল খামাছ পৌরসভায় একটি কোম্পানিতে দুই ভাই চাকরি করতেন। গত ১৪ জানুয়ারি কাজের উদ্দেশ্যে মিসালতা যাওয়ার সময় ভুয়ারা চেকপোস্টে পুলিশ আব্দুর রব, আব্দুর রহমানসহ মোট ৪ জনকে আটক করে। তারপর কাগজপত্র চেক করে তিনজনকে ছেড়ে দিলেও আব্দুর রবকে পুলিশ নিয়ে যায়। পরবর্তীতে যোগাযোগ করা হলে ত্রিপলি থানা পুলিশের কাছে আছে বললেও খোঁজখবর নিয়ে সেখানে আব্দুর রবের সন্ধান পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ ১২ দিন পর ২৬ জানুয়ারি একটি বাংলাদেশী ইমো নম্বর থেকে মাফিয়া চক্র জানায় আব্দুর রবকে তারা ২০ লাখ টাকায় পুলিশ থেকে কিনে নিয়েছেন। তাদেরকে ২৬ লাখ টাকা দিলে তারা আব্দুর রবকে ছেড়ে দেবেন। এরপর থেকে বাড়তে থাকে নির্যাতনের চিত্র। সেই নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে পরিবারের কাছে দ্রুত টাকা দেওয়ার জন্য দেওয়া হয় বাংলাদেশী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কয়েকটি নম্বর। ভিটেমাটি ছাড়া আব্দুর রবের বাবার কিছু নাই বলে আর্তনাদ করেই দিন পার করছেন তার বাবা-মা সহ পরিবারের সদস্যরা।

ভিডিও…………

আব্দুর রবের মা তাজনাহার বেগম বলেন, আমার স্বামীর দুই শতাংশের বসতভিটে ছাড়া আর কিছুই নেই। তারা আমার ছেলেকে মেরে আমাকে ভিডিও কল দেয়। আমার বুকটা ফেটে যায় কিন্তু আমি তো অসহায় মা। আমার কিছুই করার নাই। আমি ড. ইউনূস স্যারের কাছে সহযোগিতা চাই। আমার সন্তানকে আমি ফেরত চাই।

ভিডিওতে দেখতে ক্লিক করুন…………

আব্দুর রবের বড় বোন জান্নাতুল নাইম সোনিয়া বলেন, আমরা দুই বোন, দুই ভাই। আমি বড় সন্তান তারপর আব্দুর রব। সুদের ওপর টাকা নিয়ে দুই ভাইকে বিদেশ পাঠানো হয়েছে। মাফিয়া চক্র একটি ঘরে বন্দি করে মধ্যযুগীয় কায়দায় আমার ভাইকে নির্যাতন করে আমাদের কাছে ২৬ লাখ টাকা দাবি করছে। টাকা না দিলে নির্যাতন করে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত ফোন দিয়ে চক্রটি আমার ভাইয়ের ওপর নির্যাতনের দৃশ্য দেখায়। নির্যাতনের দৃশ্য দেখতে না পেরে আমরা সবাই কান্নায় ভেঙে পড়ি। আমার বাবা-মা অজ্ঞান হয়ে যান।

বিস্তারিত ভিডিওতে দেখতে ক্লিক করুন…………

আব্দুর রবের বাবা আব্দুর রহিম বলেন, আমি অসুস্থ মানুষ, কোনো কাজ করতে পারিনা। মাফিয়া চক্র ২৬ লাখ টাকা দাবি করছে অথচ ২৬ হাজার টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য আমার নাই। সন্তানদের বিদেশে পাঠাতে ঋণ করেছি তার টাকা আজও পরিশোধ করতে পারিনি। সন্তানের এমন নির্যাতনের অডিও-ভিডিও দেখলে জ্ঞান থাকে না। ড. ইউনূস স্যারের কাছে সহযোগিতা চাই। আমরা সারাজীবন উনার জন্য দোয়া করব।

ভিডিও

স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক হোসেন ও বায়োবৃদ্ধ এক ব্যাক্তি বলেন, অপহৃত আব্দুর রব অত্যন্ত নম্র ভদ্র ছেলে। লিবিয়ার পুলিশ দালালদের কাছে তাকে বিক্রি করে দিয়েছে। সেই চক্রের সঙ্গে বাংলাদেশিরাও আছে। তারা তাদের দেশি বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছে। যদি সরকার যাচাই-বাছাই করে তাহলে মাফিয়া চক্রটিকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। তাহলে এভাবে কোনো মা-বাবার সন্তানকে নির্যাতিত হতে হবে না আমরা চাই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস স্যার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

বিস্তারিত ভিডিওতে দেখতে ক্লিক করুন…………

নোয়াখালী ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সহকারী পরিচালক খুরশীদ আলম বলেন, আমি বিষয়টা যেনে মর্মাহত হয়েছি। ভুক্তভোগী পরিবার আমাদের অফিসে একটা অভিযোগ জমা দিয়েছে। সেটি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে লিবিয়া দূতাবাসের কাছে প্রেরণ করা হবে। আশা করি সরকার এই রেমিট্যান্স যোদ্ধার পাশে দাঁড়াবে। তাতে সন্তান তার বাবা-মায়ের কাছে আসতে পারবে।