ঢাকা ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
মুঠোফোনে ৫০লাখ টাকা যৌতুক দাবি, বিয়ের আসর থেকে বরসহ আটক-২ হজ্জযাত্রা উপলক্ষে সুবর্ণচর উপজেলা সমিতি সদস্যদের বিদায় সংবর্ধনা সাড়ে তিন বছর পর জামায়াত নেতা হলেন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত মাটি নিয়ে দ্বন্দ্ব: যুবলীগ কর্মিকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ২ সুবর্ণচরে সন্ত্রাসী কায়দায় বাড়ীঘরে হামলা-ভাংচুরের অভিযোগ, নারীসহ আহত ৩ জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের সভাপতি আবদুল হক, সম্পাদক পলাশ সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতাকর্মিদের ওপর হামলা, আহত-৫ কারাগারের দেয়াল টপকে পালানোর চেষ্টা, ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিও বেগমগঞ্জে সম্পত্তির জন্য মা বোনকে মারধর, বসতঘর ভাঙচুরের অভিযোগ গাছের ঢাল কাটা নিয়ে ঝগড়া, প্রতিবেশী বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যা

করোনা মহামারির মধ্যেই যুদ্ধাবস্থায় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৪২:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০ ৪৮৯ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক::

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই মধ্য এশিয়ার দুই বৈরী প্রতিবেশী আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে নতুন করে যুদ্ধ শুরুর শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত ১০ জুলাই থেকে আর্মেনিয়ার উত্তর-পশ্চিমের তাভুশ সীমান্তে দু’দেশের সৈন্যরা ট্যাংক ও কামানের মতো ভারী অস্ত্র নিয়ে লড়াই করছে। এতে উভয় দেশের বেশ কয়েকজন সেনা সদস্য মারা গেছেন। খবর: বিবিসি।

আজারবাইজানের সরকারি হিসাবেই একজন মেজর জেনারেল র‌্যাঙ্কের কর্মকর্তাসহ তাদের ১১ জন সৈন্য মারা গেছে। আর্মেনিয়া স্বীকার করেছে যে, একজন মেজর ও একজন ক্যাপ্টেনসহ তাদের চারজন সৈন্য মারা গেছে। যদিও আলজেরিয়া দাবি করছে, ওই সংখ্যা শত শত। উভয় পক্ষই বলছে, বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতেও গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে, যাতে মানুষ মারা যাচ্ছে।

রুশ পত্রিকা প্রাভদা আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল ভাজিফ দারগিয়াখিলকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, আজারবাইজানের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ যে কোনো স্থাপনায় হামলা হলে আর্মেনিয়ার মেটসামোর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হবে। ওই মুখপাত্র বলেন, ‘আর্মেনিয়া যেন মনে রাখে যে, আমাদের সেনাবাহিনীর হাতে এমন সব ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যা নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। আমাদের কোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিশেষ করে মিনগেচভিক জলাধারে আঘাত করলে, আর্মেনিয়াকে তার ভয়াবহ দুর্ভোগের স্বীকার হতে হবে।’

মঙ্গলবার রাতে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জারি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই হাজার হাজার মানুষ সহিংস বিক্ষোভ করে আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরুর দাবি তোলেন। জাতীয় পতাকা নিয়ে মানুষজন ‘নাগোরনো কারাবাখ আজারবাইজানের’ এবং ‘দ্রুত সৈন্য পাঠাও’ সেøাগান দিচ্ছে।

এ ধরনের পরিস্থিতির পর আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র মাথা ঠাণ্ডা রাখার জন্য দু’দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন ‘যুক্তরাষ্ট্র খুবই উদ্বিগ্ন’ এবং তিনি দুই দেশের মধ্যে দ্রুত শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, আজারবাইজানকে রক্ষার জন্য বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবেন না তিনি।

নাগোরনো কারাবাখ নামে বিতর্কিত একটি অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মুসলিম আজারবাইজান এবং খ্রিস্টান সংখ্যাগুরু আর্মেনিয়ার মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। এ দু’দেশই এক সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল, তখনও নাগোরনো কারাবাখ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। ওই সময় অঞ্চলটি আজারবাইজানের অংশ হিসেবে থাকলেও সেখানকার জনসংখ্যার সিংহভাগই জাতিগতভাবে আর্মেনিয়া, আর সেটাই সমস্যার মূলে।

সোভিয়েত আমলে নাগোরনো কারাবাখ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করত। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর ১৯৮৮ সালে আজারবাইজান নাগোরনো কারাবাখের আঞ্চলিক সরকারকে উৎখাত করে। ওই ঘটনার পরপরই সেখানকার জাতিগত আর্মেনিয়ারা কার্যত বিদ্রোহ শুরু করে দেয়। নাগোরনো কারাবাখের আঞ্চলিক পার্লামেন্টে ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক ভোট করে আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শুরু হয়ে যায় ওই এলাকার আজেরি এবং আর্মেনীয়দের মধ্যে জাতিগত সংঘাত।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

করোনা মহামারির মধ্যেই যুদ্ধাবস্থায় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া

আপডেট সময় : ০৪:৪২:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক::

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই মধ্য এশিয়ার দুই বৈরী প্রতিবেশী আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে নতুন করে যুদ্ধ শুরুর শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত ১০ জুলাই থেকে আর্মেনিয়ার উত্তর-পশ্চিমের তাভুশ সীমান্তে দু’দেশের সৈন্যরা ট্যাংক ও কামানের মতো ভারী অস্ত্র নিয়ে লড়াই করছে। এতে উভয় দেশের বেশ কয়েকজন সেনা সদস্য মারা গেছেন। খবর: বিবিসি।

আজারবাইজানের সরকারি হিসাবেই একজন মেজর জেনারেল র‌্যাঙ্কের কর্মকর্তাসহ তাদের ১১ জন সৈন্য মারা গেছে। আর্মেনিয়া স্বীকার করেছে যে, একজন মেজর ও একজন ক্যাপ্টেনসহ তাদের চারজন সৈন্য মারা গেছে। যদিও আলজেরিয়া দাবি করছে, ওই সংখ্যা শত শত। উভয় পক্ষই বলছে, বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতেও গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে, যাতে মানুষ মারা যাচ্ছে।

রুশ পত্রিকা প্রাভদা আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল ভাজিফ দারগিয়াখিলকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, আজারবাইজানের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ যে কোনো স্থাপনায় হামলা হলে আর্মেনিয়ার মেটসামোর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হবে। ওই মুখপাত্র বলেন, ‘আর্মেনিয়া যেন মনে রাখে যে, আমাদের সেনাবাহিনীর হাতে এমন সব ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যা নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। আমাদের কোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিশেষ করে মিনগেচভিক জলাধারে আঘাত করলে, আর্মেনিয়াকে তার ভয়াবহ দুর্ভোগের স্বীকার হতে হবে।’

মঙ্গলবার রাতে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জারি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই হাজার হাজার মানুষ সহিংস বিক্ষোভ করে আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরুর দাবি তোলেন। জাতীয় পতাকা নিয়ে মানুষজন ‘নাগোরনো কারাবাখ আজারবাইজানের’ এবং ‘দ্রুত সৈন্য পাঠাও’ সেøাগান দিচ্ছে।

এ ধরনের পরিস্থিতির পর আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র মাথা ঠাণ্ডা রাখার জন্য দু’দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন ‘যুক্তরাষ্ট্র খুবই উদ্বিগ্ন’ এবং তিনি দুই দেশের মধ্যে দ্রুত শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, আজারবাইজানকে রক্ষার জন্য বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবেন না তিনি।

নাগোরনো কারাবাখ নামে বিতর্কিত একটি অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মুসলিম আজারবাইজান এবং খ্রিস্টান সংখ্যাগুরু আর্মেনিয়ার মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। এ দু’দেশই এক সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল, তখনও নাগোরনো কারাবাখ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। ওই সময় অঞ্চলটি আজারবাইজানের অংশ হিসেবে থাকলেও সেখানকার জনসংখ্যার সিংহভাগই জাতিগতভাবে আর্মেনিয়া, আর সেটাই সমস্যার মূলে।

সোভিয়েত আমলে নাগোরনো কারাবাখ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করত। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর ১৯৮৮ সালে আজারবাইজান নাগোরনো কারাবাখের আঞ্চলিক সরকারকে উৎখাত করে। ওই ঘটনার পরপরই সেখানকার জাতিগত আর্মেনিয়ারা কার্যত বিদ্রোহ শুরু করে দেয়। নাগোরনো কারাবাখের আঞ্চলিক পার্লামেন্টে ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক ভোট করে আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শুরু হয়ে যায় ওই এলাকার আজেরি এবং আর্মেনীয়দের মধ্যে জাতিগত সংঘাত।