নিজেস্ব প্রতিবেদক:
মাঠ প্রশাসনে জেলা প্রশাসকদের পরে ইউএনওদের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। তারা সরাসরি উন্নয়ন কাজে জড়িত। কাজ করতে গিয়ে ইউএনওরা যেমন দক্ষ ভূমিকা পালন করে প্রশংসা কুঁড়িয়েছেন; তেমনি কিছু অসাধু কর্মকর্তার জন্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। উন্নয়ন কাজে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে শেখ হাসিনা সরকারের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করেছেন একটি মানবাধিকার সংগঠনের চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন বিতর্কিত ইউএনওদের দিকে নজর দিতে হবে। তাহলে জনগণ যেমন সুফল পাবে, তেমনি সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। প্রতিদিন কিছু না কিছু সকালের সময় প্রতিনিধিরা ইউএনওদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সংবাদ পাঠাচ্ছে। সব সংবাদ ছাপানো সম্ভব হয় না। কিছু সংবাদ যাচাই বাচাই ক্রসচেক করে ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে কিছু ইউএনওদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হলো:
গৌরনদী নির্বাহী কর্মকর্তা আশিস কুমার, হরিনাকুন্ডু নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা, বাঁশখালী নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ দেশের অনেক উপজেলায় দুর্নীতি অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ আছে। জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় গুরুত্বের সঙ্গে নজর দিলে এর সত্যতা মিলবে।
গৌরনদী ইউএনও আশিস কুমারের বিরুদ্ধে খোদ প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের টাকা চুরির অভিযোগ সকালের সময় হাতে এসেছে। নিম্ন মানের কাজ করে ৫২৫টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর থেকে ২০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন ইউএনও। সেই হিসাবে ১ কোটি টাকার বেশি উৎকোচ নিয়েছেন ইউএনও। এ ব্যাপারে গোরনদী ইউএনও এর কাছে সত্যতা জানতে চাইলে তিনি তার এলাকা ঘুরে আসার জন্য অনুরোধ করেন এবং রিপোর্ট প্রকাশ না করার জন্য বার বার অনুরোধ করেন।
ঝিনাইদাহ হরিনাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুম্মিতা সাহার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও ঘুস নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ঠিকাদার ও চেয়ারম্যান।নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে এক চেয়ারম্যান বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত টাকা দিতে হয় ইউএনওকে। অনুষ্ঠানের নামে তিনি টাকা তুলে পকেটে রাখেন। তাছাড়া প্রকল্প পাস এবং বিল নেওয়ার সময় তাকে টাকা না দিলে হয়রানি করেন বলে সকালের সময়কে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভুক্তভোগী জানান, ইউএনও স্যারের ঘুষের রেট অনেক বেশি। তাছাড়া চট্টগ্রাম বাঁশখালী প্রতিনিধির পাঠানো সংবাদ থেকে জানা যায়, বাঁশখালী ইউএনও সাইফুজ্জামান চৌধুরী রীতিমত উৎকোচ নিয়ে বনের কাঠ পোড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছেন ইটভাটা মালিকদের।
বাঁশখালী ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি ইরান চৌধুরীসহ কয়েকজন ইটভাটা মালিক ইউএনওকে টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ সকালের সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চায় না। তবে অভিযোগ উঠলে তাদের বদলি করা হলে মাঠ প্রশাসন আরও শক্তিশালী হবে এবং সাধারণ জনগণ কাঙ্খিত সেবা পাবে।
সূত্র: দৈনিক সকালের সময় অনলাইন https://dailysokalersomoy.com/news/68791