নিজস্ব প্রতিবেদক:
মে মাসে সাধারণ, খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি কমেছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি বলেন, মে মাসে সাধারণ খাতে মূল্যস্ফীতির হার কমে হয়েছে পাঁচ দশমিক ৩৫ শতাংশ, এপ্রিল মাসে এটি ছিল পাঁচ দশমিক ৯৬ শতাংশ। কভিড-১৯ এ নিত্যপণ্য সরবরাহে মূল্যস্ফীতি বাড়েনি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি। পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারির প্রভাবে সবকিছু থমথমে অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যেও বাংলাদেশে খাদ্য খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। মে মাসে সাধারণ, খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার স্বস্তি দিয়েছে। তিন খাতেই মূল্যস্ফীতি কমেছে।’
মূল্যস্ফীতি কমে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমাদের সাপ্লাই চেইন ভালো ছিল। তাছাড়া চাল, সবজিসহ সব কৃষি পণ্যের উৎপাদন ভালো হয়েছে। লকডাউনে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গসহ দেশের সবখান থেকেই পণ্য ঢাকায় এসেছে। ফলে কোনো কানো ক্ষেত্রে কম দামেই পণ্য বিক্রি হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে মাছ, শাকসবজি বিশেষ করে আলু, বেগুন, শিম, কুমড়া, গাঁজর, শসা, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক ও মূলার দাম কমেছে। ফলজাতীয় পণ্যের মূল্যও কমেছে। এছাড়া মসলা জাতীয় পণ্য পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দামও মাসওয়ারি কমেছে।
বিবিএস’র হালনাগাদ তথ্যে জানানো হয়, ২০২০ সালের মে মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার কমে হয়েছে পাঁচ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল পাঁচ দশমিক ৯৬ শতাংশ। মে মাসে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার কমে হয়েছে পাঁচ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। এপ্রিলে এ খাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল পাঁচ দশমিক ৯১ শতাংশ।
বিবিএস’র তথ্যানুযায়ী, বছরওয়ারি পয়েন্ট টু পয়েন্টের ভিত্তিতে মে-তে ডাল, চিনি, মুড়ি, মাছ-মাংস, ব্রয়লার মুরগি, ফল, তামাক, দুধজাতীয় পণ্য এবং অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীর দাম কমেছে। এছাড়া মাসওয়ারি ডিম, শাকসবজি ও মসলা জাতীয় পণ্যের দামও কমেছে।
এদিকে মে মাসে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে পাঁচ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ছয় দশমিক শূন্য চার শতাংশ। বাড়ি ভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণ এবং বিবিধ সেবা খাতের মূল্যস্ফীতির হার কমেছে।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, পরিকল্পনা সচিব নূরুল আমিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ, জাকির হোসেন আকন্দ এবং বিবিএস মহাপরিচালক মো. তাজুল ইসলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে বিবিএস মহাপরিচালক তাজুল ইসলাম বলেন, সাধারণত প্রতি মাসের ১২ থেকে ১৮ তারিখের মধ্যেই মূল্যস্ফীতির হিসাব নেওয়া হয়। তাই এপ্রিলে ব্যাপক মূল্যস্ফীতি হয়েছে। কেননা মার্চ থেকে থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত লকডাউন কড়াকড়ি ছিল। পরবর্তীতে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় মূল্যস্ফীতি কমে এসেছে।