ঢাকা ১০:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

পরস্পরকে দুষছে চীন ও ভারত লাদাখের ঘটনায়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:০৩:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন ২০২০ ৩৫১ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডেস্ক :

লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চীনের মধ্যে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর ঘটনায় দু’দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে। ভারতের অভিযোগ, চীন একতরফাভাবে স্থিতাবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চেয়েছিল। অন্যদিকে চীন বলছে ভারতীয় বাহিনীই প্রথম তাদের সদস্যদের আক্রমণ করেছিল। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ভারতের বিভিন্ন বিরোধী দল নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে। অন্যদিকে, হিমাচল প্রদেশে চীন সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখায় সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। খবর: বিবিসি।

গত সোমবারের ওই সংঘর্ষে দু’পক্ষেই হতাহত হয়েছে বলে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে। তবে চীন এখনও তাদের দিকে কোনো হতাহতের সংখ্যা জানায়নি। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের মুখপাত্র ঝ্যাং শুইলিকে উদ্ধৃত করে পিপলস ডেইলি লিখেছে, ‘ভারতীয় সৈন্যরা তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে আবারও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার করে বেআইনি কাজ চালাচ্ছিল এবং ইচ্ছে করে প্ররোচনা দেয় আর চীনা বাহিনীকে আক্রমণ করে। তারই ফলশ্রুতিতে দু’পক্ষের মধ্যে ‘ভয়ঙ্কর’ শারীরিক সংঘাত হয় এবং হতাহত হয়।’ ঝ্যাং আরও বলেছেন, ‘ভারতের উচিত তাদের বাহিনীকে কঠোরভাবে সংযত করা। নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন ও প্ররোচনা দেওয়া বন্ধ করে তাদের উচিত চীনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার নিষ্পত্তি করা।’ পিপলস ডেইলির মালিকানাধীন ট্যাবলয়েড পত্রিকা ‘গ্লোবাল টাইমস’ বুধবার একটি সম্পাদকীয় লিখেছে, যেখানে ভারতের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবারই ভারতের সেনাবাহিনী দুটি বিবৃতি দেয়। প্রথমে মৃতের সংখ্যা তিন বলা হলেও রাতে একটি বিবৃতিতে জানানো হয় গুরুতর আহত হয়েছিলেন, এমন ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে লাদাখের ওই সংঘর্ষে মোট ২০ জন নিহত হয়েছেন। ৪৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম লাদাখের নিয়ন্ত্রণ রেখায় সংঘর্ষে এতজন সৈন্য মারা গেলেন।

দুই সেনাবাহিনী অবশ্য মঙ্গলবারই উত্তেজনা প্রশমনের জন্য বৈঠক করেছে। আর এটাও দু’পক্ষই বলেছে যে আগের চার দশকের মতো এ সংঘর্ষেও কোনো গুলি চলেনি।

রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ভারতের বিভিন্ন বিরোধী দল নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নীরবতার সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন? কেন তিনি লুকিয়ে আছেন? যথেষ্ট হয়েছে! কী ঘটেছে তা আমাদের জানতে হবে। আমাদের জওয়ানদের হত্যা করার স্পর্ধা চীনের হয় কী করে? কোন সাহসে তারা আমাদের জমি নিয়ে নেয়? অন্যদিকে, হিমাচল প্রদেশে চীন সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারত ও চীনের মধ্যে সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস তার মুখপাত্রের মাধ্যমে উভয়পক্ষকে ‘সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে ভারত-চীন সংঘর্ষে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্বেগের কথা জানান তার মুখপাত্র এরিক কানেকো। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারত ও চীনের মধ্যবর্তী সীমান্ত লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএসি) সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং উভয়পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। তবে এটা ইতিবাচক যে, উভয় দেশ উত্তেজনা নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

পরস্পরকে দুষছে চীন ও ভারত লাদাখের ঘটনায়

আপডেট সময় : ১২:০৩:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন ২০২০

ডেস্ক :

লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চীনের মধ্যে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর ঘটনায় দু’দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে। ভারতের অভিযোগ, চীন একতরফাভাবে স্থিতাবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চেয়েছিল। অন্যদিকে চীন বলছে ভারতীয় বাহিনীই প্রথম তাদের সদস্যদের আক্রমণ করেছিল। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ভারতের বিভিন্ন বিরোধী দল নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে। অন্যদিকে, হিমাচল প্রদেশে চীন সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখায় সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। খবর: বিবিসি।

গত সোমবারের ওই সংঘর্ষে দু’পক্ষেই হতাহত হয়েছে বলে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে। তবে চীন এখনও তাদের দিকে কোনো হতাহতের সংখ্যা জানায়নি। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের মুখপাত্র ঝ্যাং শুইলিকে উদ্ধৃত করে পিপলস ডেইলি লিখেছে, ‘ভারতীয় সৈন্যরা তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে আবারও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার করে বেআইনি কাজ চালাচ্ছিল এবং ইচ্ছে করে প্ররোচনা দেয় আর চীনা বাহিনীকে আক্রমণ করে। তারই ফলশ্রুতিতে দু’পক্ষের মধ্যে ‘ভয়ঙ্কর’ শারীরিক সংঘাত হয় এবং হতাহত হয়।’ ঝ্যাং আরও বলেছেন, ‘ভারতের উচিত তাদের বাহিনীকে কঠোরভাবে সংযত করা। নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন ও প্ররোচনা দেওয়া বন্ধ করে তাদের উচিত চীনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার নিষ্পত্তি করা।’ পিপলস ডেইলির মালিকানাধীন ট্যাবলয়েড পত্রিকা ‘গ্লোবাল টাইমস’ বুধবার একটি সম্পাদকীয় লিখেছে, যেখানে ভারতের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবারই ভারতের সেনাবাহিনী দুটি বিবৃতি দেয়। প্রথমে মৃতের সংখ্যা তিন বলা হলেও রাতে একটি বিবৃতিতে জানানো হয় গুরুতর আহত হয়েছিলেন, এমন ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে লাদাখের ওই সংঘর্ষে মোট ২০ জন নিহত হয়েছেন। ৪৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম লাদাখের নিয়ন্ত্রণ রেখায় সংঘর্ষে এতজন সৈন্য মারা গেলেন।

দুই সেনাবাহিনী অবশ্য মঙ্গলবারই উত্তেজনা প্রশমনের জন্য বৈঠক করেছে। আর এটাও দু’পক্ষই বলেছে যে আগের চার দশকের মতো এ সংঘর্ষেও কোনো গুলি চলেনি।

রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ভারতের বিভিন্ন বিরোধী দল নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নীরবতার সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন? কেন তিনি লুকিয়ে আছেন? যথেষ্ট হয়েছে! কী ঘটেছে তা আমাদের জানতে হবে। আমাদের জওয়ানদের হত্যা করার স্পর্ধা চীনের হয় কী করে? কোন সাহসে তারা আমাদের জমি নিয়ে নেয়? অন্যদিকে, হিমাচল প্রদেশে চীন সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারত ও চীনের মধ্যে সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস তার মুখপাত্রের মাধ্যমে উভয়পক্ষকে ‘সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে ভারত-চীন সংঘর্ষে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্বেগের কথা জানান তার মুখপাত্র এরিক কানেকো। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারত ও চীনের মধ্যবর্তী সীমান্ত লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএসি) সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং উভয়পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। তবে এটা ইতিবাচক যে, উভয় দেশ উত্তেজনা নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে।