নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুছ নবী মানিকের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ বানিজ্য, টাকার বিনিময়ে এমপিও এবং নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে ওই শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধ করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সকালে উপজেলার পাক মুন্সীরহাট নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের গেইট সংলগ্ন সামনের সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, অভিভাবক ওমর ফারুক বিকম, সালাহ উদ্দিন, দিদারুল ইসলাম, শেখ মো. রাসেল, লুৎফুর রহেমান বাহার, স্থানীয় বাসিন্দা সালাহ উদ্দিন, রুহুল আমিন খোকন প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুছ নবী মানিক বিদ্যালয়ে যোগদানের পরপরই মো. সোহাগ হোসেন নামের একজন লাইব্রেরিয়ান ও মো. ইউছুপ হোসেন নামের একজনকে সাধারণ শিক্ষক নিয়োগ করেন। এদের মধ্যে মো. সোহাগ হোসেনের লাইব্রেরিয়ান সনদ ভুয়া ও জাল এবং মো. ইউছুপ হোসেন আগে যে বিদ্যালয়ে চাকুরী করতেন সেই বিদ্যালয় থেকে পদত্যাগ করার প্রায় ৪ বছর পর এই বিদ্যালয়ে পূর্বের বিদ্যালয়ের একই ইনডেক্স নাম্বার ব্যবহার করে যোগদান করেন। কিন্তু সরকারী বিধি মোতাবেক দুই বছর পর একই ইনডেক্স নাম্বার ব্যবহার করা যায় না।
মানববন্ধনে অভিযোগ করে বক্তারা আরো বলেন, নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষক খন্দকার মোহাম্মদ ইদ্রিছ ভুয়া কম্পিউটার সনদ ব্যবহার করে ২০১৬ সালে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। এরপর ২০১৮ সালে সরকারী বিধিমালা না মেনে কোন প্রকার বিজ্ঞপ্তি ছাড়া সুমন চন্দ্র নাথ নামে একজন শিক্ষক নিয়োগ করেন প্রধান শিক্ষক ইউনুছ নবী মানিক। ২০১৬ সালে ওই শিক্ষকের যোগদানের তারিখ দেখানো হয়। ২০২০ সালের জানুয়ারীতে পবিত্র ও পরেশ নামের দুইজন শিক্ষক এমপিও ভুক্ত হন। কিন্তু তারা ২০২০ সালের মার্চ মাসে বিদালয়ে আগমন করেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি তাদের যোগদানের সাল ২০১৬ সাল। এমনকি কোন প্রকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয় তাদের।
বক্তারা বলেন, ২০২০ সালের ১৬ মার্চ করোনাকালীন সময়ে বিদ্যায়য় বন্ধ ঘোষনা এবং ২৫ মার্চ ২০২০ সারাদেশ লকডাউন হওয়ার পরেও জুন মাসে ওই বিদ্যালয়ে রিংকু নামে নতুন আরেকজন শিক্ষক এমপিও ভুক্ত হন। এই শিক্ষকেরও যোগদানের তারিখ ২০১৬ সাল। কিন্তু রিংকু এখন পর্যন্ত টেকের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের (প্রাইভেট) প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। একজন শিক্ষক একই সাথে দুই বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকা সরকারী বিধি বহির্ভূত। প্রত্যেক শিক্ষক নিযোগ প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য শিক্ষক প্রতি ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন প্রধান শিক্ষক ইউনূছ নবী মানিক।
শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান প্রতিনিয়তই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এই প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব গ্রহনের আগে ধারাবাহিকভাবে আমাদের বিদ্যালয় থেকে ১৮জন এ প্লাস পেলেও গত ৩ থেকে ৪ বছর এই বিদ্যালয় থেকে কোন শিক্ষার্থী এ প্লাস অর্জন করতে পারেনি।
মানববন্ধনে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দা অংশগ্রহন করে প্রধান শিক্ষক ইউনূছ নবী মানিকের অপসারণ দাবি করা হয়।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ইউনূছ নবী মানিককে বিদ্যালয়ে না পেয়ে তার মুঠোফোনে কল করলে তিনি কল রিসিভ না করায় তার মতামত জানা যায়নি।
নোয়াখালী।